Friday, October 5, 2018

পেছনের শক্তি আন্দাজ করে দলে দলে বিকল্প ধারায় যোগ দিচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

নিউজ ডেস্ক: সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে এবং তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতেই বিকল্প ধারার নেতারা ড. কামালের সাথে মিলে জাতীয় ঐক্য গঠনের নামে রাজনৈতিক জোট গঠন করেছেন। মূলত বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে এবং বর্তমান সরকারের ওপর প্রতিশোধ নিতেই বিদেশি কয়েকটি দূতাবাসের অর্থায়নে বিকল্প ধারার মালিকখ্যাত বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী রাজনৈতিক গেম খেলছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভঙ্গুর অবস্থায় নিজেদের শক্তিশালী ভেবে বিকল্প ধারার নেতারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে বিকল্প ধারা। দূতাবাসগুলো থেকে প্রাপ্ত অর্থের কোটি কোটি টাকা খরচ করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে দলটি। সূত্র বলছে, বিকল্প ধারাকে নিজেদের আদর্শের সংগঠন ভেবে বিএনপির হাজার হাজার নেতারা গোপনে দলটিতে যোগ দিচ্ছে। মূলত বিএনপির ভগ্নদশা বিবেচনায় এবং অর্থের লোভেই বিএনপির নেতারা নিজ দলের সাথে বেইমানী করছেন বলে অভিমত প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভিভূত হয়ে হিংসার বশবর্তী হয়ে একাধিক উন্নত দেশ বাংলাদেশকে তাদের গোলাম রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের অদম্য পথচলা রুখে দিয়ে অনুন্নত, পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানাতেই এই গভীর ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে অনৈতিক দাবি নিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় মূলত বাংলাদেশের ওপর প্রতিশোধ নিতে কুপরিকল্পনা করছে কয়েকটি দূতাবাস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে না পারায় বিকল্প ধারাকে তাদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে।
জানা গেছে, বিকল্প ধারাকে শক্তিশালী করে বিএনপি-জাতীয় পার্টির বিকল্প রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে দূতাবাসগুলো। তাদের সরাসরি সহায়তায় বিকল্প ধারা ড. কামালকে নিয়ে এরই মধ্যে নাগরিক সমাবেশ করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে সফল হয়েছে। এদিকে দীর্ঘ একযুগের বেশি ক্ষমতায় না থাকার কারণে বিএনপির রাজনীতিতে খরা শুরু হয়েছে। লুটপাট করতে না পারায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া বিরোধী দলে থাকলেও সামান্য ইউনিয়ন থেকে নগর কমিটিতে জায়গা নিতে হলে সিনিয়র নেতাদের ঘুষ দিতে হয়। এরই মধ্যে আবার দলের নেত্রী দুর্নীতির দায়ে জেলে, দলের মালিকখ্যাত তারেক রহমান দুর্নীতি দণ্ড নিয়ে লন্ডনে পলাতক। বিএনপির অবস্থা লেজেগোবরে। কোনো আন্দোলন করতে পারে না দলটি। এছাড়া কারণে অকারণে চাঁদা দিতে হয়ে নেতা-কর্মীদের। তারেক রহমানকে বাঁচিয়ে রাখতে চাঁদা দিতে দিতে দলটির নেতা-কর্মীদের পথের ফকির হওয়ার দশা। এছাড়া বিদেশি বন্ধুরা বিএনপির তরফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় আর ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে ব্যর্থতা, সরকার পতন আন্দোলনে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ পাওয়ায় দলটির প্রতি হতাশ হয়ে এক সময়ে বিএনপির দ্বারা উপকৃত কর্মীরা গোপনে দলে দলে বিকল্প ধারায় যোগ দিচ্ছেন। বিকল্প ধারায় ভরসা পাচ্ছে তৃণমূল বিএনপি। এর মধ্যে আবার কিছু খবর চাউর হয়েছে যে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতাই গোপনে বিকল্প ধারাকে সমর্থন করছেন। কারণ বিকল্প ধারার নেতাদের খুঁটি নাকি অনেক শক্ত। আগামীতে তারা তৃতীয়শক্তির এজেন্ট হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে পারে, এমন আভাস পেয়ে মূলত বিএনপির নেতারা দলে দলে গোপনে বিকল্প ধারার হাতকে শক্তিশালী করছেন।
বিএনপি সাংগঠনিক দুর্বলতা, দল পরিচালনায় সিনিয়র নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও চাঁদার রাজনীতিতে বিরক্ত হয়ে মূলত দলটির কর্মীরা দলে দলে বিকল্প ধারায় যোগদান করছেন বলে মনে করছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তাদের মতে, বিকল্প ধারায় নতুন আশার আলো দেখে, দলটির পেছনের শক্তি আন্দাজ করেই মূলত বিএনপি ছাড়ছেন কর্মীরা। এছাড়া দলে যোগ দিলে প্রচুর অর্থ মিলছে এমন গুজবে কান দিয়ে বিএনপির সর্বনাশ করে নেতা-কর্মীরা দলে দলে বিকল্প ধারায় যোগদান করছেন বলেও মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।

No comments:

Post a Comment