দেশের মানবসম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক
মুদ্রা অর্জন করে। প্রবাসে কর্মরত নাগরিকদের স্বদেশে প্রেরিত অর্থকে
‘রেমিটেন্স’ বলে। তাদের অর্জিত অর্থের একটা অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবারের
কাছে পাঠায়। এই অর্থ কেবল তাদের পরিবারের প্রয়োজনই মেটায় তা নয়, তাদের
জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করে এবং নানাক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়ে দেশের অর্থনৈতিক
উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নতুন অর্থ বছরে দেশের রেমিটেন্স খাতে আশানুরূপ সাফল্য এসেছে। গত অর্থ
বছরের ধারাবাহিকতায় এই অর্থ বছরে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ -১৮
অর্থ বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ।
নতুন অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী
বাংলাদেশিরা ৩৮৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে
১৩.৭৩ শতাংশ বেশি। শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই রেমিটেন্স এসেছে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ
ডলার, যা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন।
তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।
বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান প্রায় ১২ শতাংশের মতো। বিদেশের
মাটিতে দক্ষ জনবল প্রেরণের মাধ্যমে এই ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব। বর্তমান
সরকার দেশের শ্রমবাজার আরও বেশি শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের
ব্যবস্থা করেছেন। এর মাধ্যমে আমাদের দেশের মানুষ জন দক্ষ হয়েই দেশের বাহিরে
যাচ্ছে। এর ফলে বিদেশের মাটিতে দেশের শ্রমবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব
সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি, স্থানীয় বাজারে ডলারের
মূল্যবৃদ্ধি এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে
রেমিটেন্স বাড়ছে।
রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও রয়েছে
সন্তোষজনক অবস্থায়। দেশের জনসাধারণ যারা দেশের বাহিরে কাজ করতে ইচ্ছুক
তাদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও সহজ করার মাধ্যমে দেশের বাহিরে আরো দক্ষ জনবল
প্রেরণ সম্ভব। বর্তমান সরকার বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের যাতে কোনো অসুবিধা
না হয় সেদিকেও নজর রাখছে এবং এজন্যই দেশের রেমিটেন্সের পরিমাণ
আশানুরূপভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
No comments:
Post a Comment