Wednesday, November 28, 2018

তারেকের মন মজাতে পারলেন না মিন্টু!

আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল আউয়াল মিন্টু। দেশের দুই রাজনৈতিক দলেই  কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। অনেকটা ‘সুবিধা পার্টি জিন্দাবাদ’ এর মত। আব্দুল আউয়াল মিন্টু ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগে থাকাকালীন  তিনি  খুব একটা সুবিধা করতে পারেন নি অর্থাৎ তার উদ্দেশ্য ছিল রাজনীতি করার সাথে নিজের আখের গুছানো। জনগণের টাকা নিজের করে নেয়ার মতো একটি মনোবাসনা তার ভিতর ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগে থাকাকালীন তিনি তার মনোবাসনা পূরণ করতে পারেন নি বলে  একবুক আশা নিয়ে অবৈধ উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য ২০০১ সালে তিনি যোগ দেন বিএনপিতে।
২০০১ সাল থেকে বিএনপির সাথে কাজ করে গেছেন এবং সেই সাথে তিনি পূরণ করেছেন তার বহুদিনের মনোবাসনা। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত জনগণের টাকা মেরে তিনি সম্প্রসারণ করেছেন তার ব্যবসা। ২০১৫ সালের মেয়র নির্বাচনের সময় তার ছেলে তাবিথ আউয়াল  বিএনপির নমিনেশন লাভের মাধ্যমে বিএনপিতে যোগ দেন,  এর আগে তিনি কোনদিন বিএনপির কিছু ছিলেন না।
২০০১ এর নির্বাচনের মতো এবারও আব্দুল আউয়াল মিন্টু মনোনয়নের জন্য মনস্থির করেন। কিন্তু শুধু মনস্থির করলে তো আর চলবে না, সেই সাথে থাকতে হবে ভাগ্যের জোর এবং এই ভাগ্যের সাথে খুশি করতে হবে বিএনপির বিশিষ্ট টাকা খোরকে যিনি কিনা অবস্থান করছেন সুদূর বিলেতে। বর্তমানে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবার আগে খুশি করতে হয় তারেককে। আর এই খুশি করার অন্যতম মাধ্যম হলো মোটা অংকের অর্থ। শুধু অর্থ দিয়েই কাজ শেষ নয়, এই অর্থ তার মন মতো হলো কিনা সেটাও বিবেচ্য বিষয়।
টাকাখোর তারেক বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময়ও বিপুল অর্থের বিনিময়ে প্রার্থীদের মনোনয়ন দেন। কিন্তু মিন্টু মনোনয়নের জন্য অর্থ দিয়ে তারেককে খুশি করতে না পারায় এবার মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা থেকে ছিটকে পড়েছে। দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না;  এমনকি অতি লোভে তাঁতি নষ্ট করলো মিন্টু। আশা করি তিনি তা বুঝতে পেরেছেন।

At least 23 leaders are involved with BNP’s nomination business; actions will be taken after listing

News Desk: BNP’s Acting Chairman Tarique Rahman has formed a secret investigation team who are assigned to find out the culprits of nomination business. He learned this lesson when BNP did this business during city corporation elections. The investigation team informed that, many of the senior BNP leaders are involved with nomination business. They are accumulating a huge amount of money from the aspirants. Many of the leaders are using Tarique Rahman’s name to obtain money from the aspirants.
Source informed that, senior leaders ignored the application of other dedicated leaders. Instead, they gave nomination to those who bribed them. In truth, they earned a huge amount of money from those persons. They paid the price on the election field. BNP was lost in many city corporations. It disclosed after the election. This is why, Tarique Rahman formed this team so that history does not repeat.
This team was formed with some trustworthy people of Tarique Rahman himself. They informed that, many renowned leaders are involved with this which is a concerning matter.
A member of the team was reluctant to reveal his name and said, “Almost 50 candidates were given nominations in different constituencies for 11th National Parliamentary Election. Some of them had recommendation from the senior leaders. They used Tarique Rahman’s name. These senior leaders took 5 crore from per candidates as bribe.”
When asked to reveal the name of the leaders who are involved with nomination business, they said that it is directly under the supervision of Tarique Rahman (Tarique sir), for this reason we are unable to reveal names. But, almost 23 senior leaders’ names came up. We have solid evidence that these leaders are directly involved with nomination business.
It is to be informed that, recently a BNP leader named Mominul Haque complained to the media about this business. He was rejected because of nomination business. He submitted his nomination form for Chandpur-5 constituency. He said, “M A Matin was elected previously from Chandpur-5 constituency. He is hated by the local people. Still he got the nomination because he bribed the nomination board. Senior leaders took more than a crore of taka and gave him the nomination. It is a very sad incident.” He also informed that, many dedicated leaders are not getting the nomination because they did not bribe anyone.
Tarique Rahman is very concerned because of this issue. He is thinking that, those types of works would become the reason of downfall for BNP.

তারেক রহমানকে সন্তুষ্ট করতে না পারায় কপাল পুড়লো আবদুল আউয়াল মিন্টুর, ক্ষুব্ধ তাবিথ আউয়াল

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির তরফ থেকে চমক দেখানো হলেও কপাল পুড়েছে কিছু পরীক্ষিত নেতার। দলের ভেতর গুঞ্জন উঠেছে, মনোনয়ন বাণিজ্যে লাভবান হওয়ার জন্য তারেক রহমানের নির্দেশে নিবেদিত ও জনপ্রিয় নেতাদের অবজ্ঞা করে পয়সাওয়ালা হাইব্রিড ও সংস্কারপন্থী নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সেই বাণিজ্যে অর্থের সমীকরণে এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু। বিএনপির ব্যাংকখ্যাত মিন্টুর মনোনয়ন না পাওয়ায় হতবাক হয়েছেন দলের নেতৃবৃন্দ। বলা হচ্ছে, তারেক রহমানকে আর্থিকভাবে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিন্টুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে প্রথম থেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে ছিলেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। নির্বাচনে টিকিট কনফার্ম করার জন্য অনেক সিনিয়র নেতা ও মনোনয়ন প্রত্যাশী বিগত কয়েক মাস আগেই গোপনে লন্ডন সফর করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। বিএনপির বিত্তশালী নেতা মিন্টুও একাধিকবার লন্ডন সফর করেন। বিএনপি নেতারা ধারণা করেছিলেন ফেনী অথবা ঢাকার একটি আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করবেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। কারণ দলের ভেতর গুঞ্জন রয়েছে, বিএনপির বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম, কোটা বিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে তারেক রহমানের নির্দেশে দুহাতে অর্থ বিনিয়োগ করেন মিন্টু। বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানে নিয়মিত চাঁদা দিয়েছেন মিন্টু। এত কিছু করার পরও মিন্টুর মতো নেতা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না মিন্টুর সমর্থকরা। জানা গেছে, তারেক রহমানকে সন্তুষ্ট করতে না পারার কারণে মনোনয়ন পাননি মিন্টু।
এই বিষয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, আমার বাবা (আবদুল আউয়াল মিন্টু) বিএনপির নিবেদিত ও পরীক্ষিত নেতা। দলের বিপর্যয়ে সব সময় পাশে ছিলেন। বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠান, সমাবেশে অকাতরে অর্থ বিলিয়েছেন, দলের পেছনে বিনিয়োগ করেছেন। কিছুদিন পূর্বে লন্ডন সফরকালে তারেক স্যার বাবাকে ফেনী অথবা ঢাকার একটি আসনে মনোনয়ন দেয়ারও ওয়াদা করেছিলেন। অথচ বাস্তবতা দেখুন! বাবার মতো নিবেদিত নেতাকে বাদ দিয়ে সংস্কারপন্থী ও সুবিধাবাদী নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছেন তারেক স্যার। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত। তারেক স্যারকে আর কোন উপায়ে সন্তুষ্ট করে মনোনয়ন পাওয়া যাবে সেটি আমাদের জানা নেই। বিএনপির এমন পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্তের কারণে অনেক নেতাই দল বিমুখ হয়ে পড়ছেন।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া বা না দেয়ার অধিকার কেবল তারেক স্যারের রয়েছে। বিএনপি করতে হলে তার সিদ্ধান্ত মানতে হবে। মিন্টু সাহেবকে মনোনয়ন না দেয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা রয়েছে, সম্পদ গোপন করার মামলা রয়েছে। সুতরাং বিত্তশালী হলেও একজন চিহ্নিত অর্থ পাচারকারীকে মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি কলঙ্কের ভাগ নিবে না। মিন্টুতো সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তিনি তো ব্যবসায়ী। ব্যবসার খাতিরেই বিএনপি করেন। সুতরাং এসব নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই। আর মিন্টু সাহেবের প্রতি আমার পরামর্শ হলো, ধৈর্য ধারণ করতে হবে। দল ক্ষমতায় আসলে বিকল্প কোন পদ পেতে পারেন তিনি। কারণ কিছুটা হলেও দলে তার অবদান রয়েছে। আর তারেক স্যারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

ধানের শীষ নাকি গ্রেনেডের স্প্লিন্টার? উন্নয়ন নাকি পোড়া মাংসের গন্ধ?

ধানের শীষ যা কিনা দেশের মানুষের খাদ্য যোগান দেয়ার প্রাথমিক অবস্থা। যা খেয়ে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ জীবন ধারণ করে, দেশকে নিয়ে যায় এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে। কথায় আছে, আলোর নিচেই থাকে অন্ধকার। তেমনি এই ধানের শীষের পিছনেও আছে অন্ধকার গল্প। দেশের এক কুখ্যাত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হলো এই ধানের শীষ তথা বিএনপি।
বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ না রেখে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বা গ্রেনেড সম্বলিত কোনো ছবি রাখা যুক্তিযুক্ত ছিল। সাধারণত দেশের ঐতিহাসিক অবস্থা ও একটি দলের কাজের লক্ষ্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় দলের প্রতীক। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ রাখা হলেও তাদের কর্মকান্ড, রাজনৈতিক অবস্থা সব ভুল প্রমাণিত করেছে।
একটি দেশের রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব সব সময় দেশের জনগণের পাশে থাকা, জনগণের উন্নয়নে কাজ করা, জনগণের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে দেশের নাম উজ্জ্বল করা। কিন্তু বিএনপির মূল লক্ষ্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক ক্ষমতায় আসীন হওয়া। এজন্য তারা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতেও দ্বিধাবোধ করে না। দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদকে করেছে নষ্ট। ধস নেমেছে দেশের অর্থনৈতিক খাতে। তারা দেশের অর্থনীতির মজুদের বদলে করেছে গ্রেনেডের মজুদ। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির বদলে করেছে নিজেদের পকেটের অর্থের প্রবৃদ্ধি। দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি রক্ষা করা দেশের নাগরিকের কর্তব্য ও দেশের কর্ণধারগণ সার্বিক তত্ত্বাবধান করে থাকে। কিন্তু দেশের কর্ণধারগণ যখন টাকার লোভে নষ্ট করে দেশের সম্পত্তি,  তখন দলের প্রতীক ধানের শীষ সব মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়।
বিএনপি দেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী নয়। তারা বিশ্বাসী দেশের মানুষের জানমাল ক্ষতি করতে। বিএনপির আমলে দেশের উন্নয়নের সুবাতাসের বদলে বয়েছিল মানুষের চাপা কান্না জড়িত ভারী বাতাস। পাওয়া গিয়েছিলো মানুষের আর্তনাদ। কিন্তু তাতেও নজর দেননি সেই লোভী বিএনপি। তাদের আমলে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার আর দেশের হাসপাতালে পোড়া মানুষের আর্তনাদ ছাড়া কিছুই দেশের প্রাপ্তির ঝুড়িতে কিছুই জমা হয়নি।

জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপি জোট: যে কয়টি আসন পেলো জামায়াত

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোট (বর্তমানে সম্প্রসারিত ২৩ দল) সঙ্গীদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে বিএনপির এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে। জোট শরিকদের ৪০ থেকে ৪২টি আসন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শরিক দলগুলো যদিও আরও ২/৪টি আসন নিয়ে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে। সোমবার ২৬ নভেম্বর দুপুর ৩টা থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের চিঠি দেওয়া শুরু করেছে বিএনপি।
এদিকে ২০ দলকে যে ৪০-৪২টি আসন দিতে চাইছে বিএনপি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পাচ্ছে পুরনো দোসর জামায়াতে ইসলামী। দলটিকে ২৪টি আসন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে জামায়াত আরও কয়েকটি আসনে নিজ দলের প্রার্থী দিতে চাইছে। বাকি ১৬ থেকে ১৮টি আসন পাবে ২০ দলের অন্য শরিকরা।
বিশ দলীয় জোটে বিএনপিসহ দল আছে ২৩টি। এসব দলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাচ্ছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অলি আহমদের দলকে সর্বোচ্চ ৪টি আসন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে আরও দুটি আসন চাইবেন বলে জানা গেছে অলি আহমদের ঘনিষ্ঠ সূত্র মারফত।
জামায়াতকে যেসব আসন দেয়া হচ্ছে :
জামায়াতকে যেসব আসনে বিএনপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলো হল- ঠাকুরগাঁও-২ মাওলানা আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মাওলানা আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, লালমনিরহাট-১ আবু হেনা মো. এরশাদ হোসেন সাজু, রংপুর-৫ অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, কুড়িগ্রাম-৪ নূর আলম মুকুল, গাইবান্ধা-১ অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-৪ ডা. আবদুর রহীম সরকার, বগুড়া-৪ মাওলানা তায়েব আলী, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-১ আবদুল বাসেত, পাবনা-৫ ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আবদুল আলীম; খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার; খুলনা-৬ আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-২ শামীম সাঈদী, সিলেট-৫ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আজাদ।
জামায়াত ছাড়া বিশ দলের শরিক দলগুলো বিএনপির নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জামায়াত ইসলামী স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করার কথা ভাবছে। তবে ভোটের হিসাব-নিকাশে শেষ পর্যন্ত তারা ধানের শীষই বেছে নিতে পারে।
নিবন্ধন হারানো সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র নয়, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন দলটির প্রার্থীরা। এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে আজ-কালের মধ্যে।
জামায়াতের নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, তারা ৫৩ আসনের তালিকা বিএনপিকে দিয়েছেন। ২৮ নভেম্বর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন। ধানের শীষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হবে কিনা তা বলতে রাজি হননি তিনি।
উল্লেখ্য, বিশ দলীয় জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে রোববার ২৫ নভেম্বর দিনভর বৈঠক করে বিএনপি। দুপুরে এলডিপি, এনপিপিসহ জোটের কয়েকটি শরিকের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির নেতারা। গুলশান কার্যালয়ে ওই বৈঠকে শরিকরা তাদের সম্ভাব্য তালিকা বিএনপির কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে রাতে আবারও শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। সেখানে কোন কোন আসনে ছাড় দেয়া হবে তা জানিয়ে দেয়া হয়।

বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টে বিরোধ চরমে

বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টে আগেই ছিল তুমুল বিরোধ। এবার আসন বণ্টন নিয়ে তা চরম আকার ধারণ করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক মতের হরেক নেতা রয়েছেন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টে। ‘গণতন্ত্রের ধুয়ো’ তুলে তারা এক ছাতার নিচে এলেও মূল মিশন আসলে ক্ষমতাকেন্দ্রিক। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে যেকোনো উপায়ে ঠেকানোর ‘কমন’ লক্ষ্যও রয়েছে তাদের।
তবে এক এক করে তাদের সকল মুখোশই জাতির সামনে অত্যন্ত নোংরাভাবে খুলে যাচ্ছে। ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সাথে কোন আপোষ করবেন না’ কিছুদিন আগেও গণমাধ্যমকে অনেকটা যেচেই একথা বলতেন কামাল-রব গং। তিনি জানিয়েছিলেন জামায়াত বা তারেকের সাথে কোন জোট নয়। কিন্তু তাদের সেসব প্রতিশ্রুতি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে ক্ষমতার লোভের কাছে।
জামায়াতকে মেনে নিয়ে ও তারেকের বশ্যতা স্বীকার করেই বিএনপির সাথে জোট গড়েছেন রাজনীতিতে অচল মাল খ্যাত এসব নেতারা।
তাতেও শেষরক্ষা হচ্ছে না। বারবার জামানত হারানো এসব নেতারা সুযোগ পেয়ে বিএনপি’র কাছে চেয়ে বসছেন শতাধিক আসন। যেকোনো সময়ের চেয়ে অপেক্ষাকৃতভাবে বিএনপি এখন বেশ দুর্বল ও গণবিচ্ছিন্ন। সন্ত্রাস ও দুর্নীতির কলঙ্কই বিএনপির অস্তিত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। তাই বিএনপি’র দুর্বলতার সুযোগ নিতে ভুল করেননি এসব নেতারা। বাস্তবতা টের পেয়ে আর সঙ্গী হারানোর ভয়ে বিএনপি নেতারাও এতোদিন সরাসরি কিছু বলতে পারেননি। বিএনপি’র অনেক কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের গোপন সমঝোতার খবরও চাউর হয় গণমাধ্যমে। তারা সকলে মিলে খালেদা-তারেককে হটিয়ে দলে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার বৃহৎ পরিকল্পনা করেছেন-এমন সংবাদ ছিল বিএনপি কর্মীদের মুখে মুখে।
কিন্তু সব দেখেশুনে ক্ষেপে গিয়েছেন লন্ডনে পলাতক, সন্ত্রাস দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত তারেক জিয়া। লন্ডন থেকে মোবাইল ফোনেই তারেক কামাল-মান্না-রব গংদের একহাত নিয়েছেন।
বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, তারেক কামাল-মান্না-রব গংকে জামানতবিহীন নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পরে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে জোট থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ারও হুমকি দেন তারেক। তারেক বলেন, ‘বিএনপি আমার একার দল। আর কারো কোনো হুকুম এখানে চলবে না। আপনাদের ম্যাডাম খালেদা জিয়া অনুরোধ করলেও আমি আপনাদের দুই থেকে তিনটার বেশি আসন দিতে পারবো না। এতেই আপনাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে, নয়তো ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো।
ঐক্যফ্রন্ট ঘনিষ্ঠ আরেকটি সূত্র জানায়, ‘আমার কাছে সব খবরই আছে’ একথা উল্লেখ করে তারেক হুমকি দিয়ে বলেন ‘বুড়ো বয়সে আমার পিছনে লেগেছেন! দেশে এলে সবকয়টাকে গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিবো’।
সূত্র আরো জানায়, এ ঘটনার পরে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ব্যাপক আতঙ্কিত। তারা ফ্রন্ট থেকে বের হয়ে যাবার সুনির্দিষ্ট অজুহাত খুঁজছেন।

সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার নতুন চক্রান্ত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার এক ঘৃণ্য খেলায় মেতে উঠেছে দেশদ্রোহী ও সুযোগসন্ধানী চিহ্নিত গোষ্ঠী। এর মাধ্যমে তারা এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি শিকারের চক্রান্ত করছে। দিবালোকের মতো স্পষ্ট একটি ঘটনায় অহেতুক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আস্থার প্রতীক সেনাবাহিনীকে জড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করেন মিতালী চাকমা নামে একজন কলেজছাত্রী। তিনি জানান, তিন মাস পূর্বে পাহাড়ি রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফ এর সদস্যরা অস্ত্রের মুখে তাকে অপহরণ করে।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রী জানান, আগস্টের ১৭ তারিখে বদিপুরস্থ তার নিজ বাসা থেকে তিনি অপহৃত হন। ইউপিডিএফে যোগদান করতে রাজি না হওয়াতেই তাকে অপহরণ করা হয় বলেও জানান তিনি।
অপহরণকারীরা তাকে নির্জন ডলুছড়ি এলাকায় নিয়ে যায় এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে ব্যাপক নির্যাতন করে। টানা পাশবিক নির্যাতনে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান।
মিতালি চাকমা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইউপিডিএফ কর্মীরা প্রথমে ধর্মঘর এলাকায় পরে চিত্তলি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বন্দী করে রাখে এবং নানাভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে ইউপিডিএফ দলে যোগ দিতে বলে। এভাবে ১৩ দিন থাকার পর তারা তাদের নেতা অং মারমা ও শান্তিলাল চাকমার সাথে যোগাযোগ করে। তাদেরকে বলাবলি করতে শুনেছি আমাকে গর্ভবতী না করলে আমি হয়তো ইউপিডিএফ এ যোগ দিতে রাজি হবো না। এমতাবস্থায় গত ৩০-৮-১৮ তারিখ থেকে ১৯-১১-১৮ তারিখ পর্যন্ত ইউপিডিএফ কর্মীরা আমাকে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার রেপ করে। ইউপিডিএফ কর্মীদের শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। ভেঙ্গে পড়ার পর আমি বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেও পারিনি। আমার বন্দীদশার এক পর্যায়ে গত ১৯ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে গভীর রাতে সেনাবাহিনীর টহলের শব্দ পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেনাবাহিনীর ভাইদের কাছে আমার দুর্দশার কথা খুলে বলি।
আমার দুর্দশার কথা জানার পর সেনাবাহিনীর টহল দল আমায় উদ্ধার করে  কোতয়ালী থানায় সোপর্দ করে। তারপর থানা থেকে আমাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়।
ইউপিডিএফ আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে এবং আমার বাবা মা’র নিরাপত্তা নিয়ে আমি খুব চিন্তিত আছি। ইউপিডিএফ আমার বাবা মাকে মেরে ফেলবে। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের ভয়ানক কাজের মুখোশ খুলে দিতে চাই এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার কাছে সাহায্য ও বিচার চাই।’
অপহরণের ঘটনায় মিতালী চাকমা গত ২০ নভেম্বর ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে রাঙ্গামাটি থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে একটি বিশেষ মহল। পাহাড়কে অস্থিতিশীল করার পাশাপাশি নির্বাচনকে সামনে রেখে সেনাবাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্তে নেমেছে এই কুচক্রী মহল ।
সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ি এলাকার একটি মেয়ের কাছ থেকে স্থানীয়রা ইয়াবা উদ্ধার করছে। ভিডিওর সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দূরতম কোন সম্পর্ক না থাকলেও গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে তাতে সেনাবাহিনীর নাম জুড়ে দেয়া হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কিছুটা সেনাবাহিনীর পোশাকের আদলে পোশাক পরিহিত একজন সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তার পরিহিত পোশাক মোটেই সেনাবাহিনীর নয়। এমনকি ভিডিওতে তার মুখচ্ছবিও দেখা যাচ্ছে না। এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ভিডিওটি করা হয়েছে।
আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিলাইছড়ির দুই জন মারমা মেয়েকে ধর্ষণের বানোয়াট অভিযোগ নিয়ে অনেক সরব ছিলেন। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তথাকথিত ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত জানুয়ারি মাসে একাধিক মানববন্ধনও করেছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী ইয়েন ইয়েন। ওই ইস্যুকে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে বেশ তৎপর ছিলেন এই মুখোশধারী মানবাধিকারকর্মী। কিন্তু কোনো এক আশ্চর্যজনক কারণে সম্প্রতি ইউপিডিএফ কতৃক ধর্ষিত মিতালী রাণী ইস্যুতে তিনি সম্পূর্ণ নীরব। ইউপিডিএফ দ্বারা একজন চাকমা নারী টানা তিন মাস ধর্ষিত হলেও তিনি আজ অন্ধ-বধিরের ভূমিকা পালন করছেন। নেই কোন সমাবেশ, বিবৃতি কিংবা ভাষণ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে তবে কি সহজ সরল পাহাড়িদের ব্যবহার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ ও তার স্ত্রী?
তাছাড়া পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অর্জনকে ম্লান করার জন্য পার্বত্য আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো বরাবরই সেনাবাহিনীকে নারীর শ্লীলতাহানির নানা ভুয়া ঘটনায় জড়ানোর চেষ্টা করে। উল্লেখ্য সম্প্রতি চাঁদাবাজ ধরতে গিয়ে উপজাতীয় নারীদের হাতে সেনাবাহিনী অপদস্ত হলেও যেখানে সেনারা কোন কিছুই করেনি, সেখানে উপজাতীয় নারীদের নির্যাতন করার ঘটনা আষাঢ়ে গল্প ছাড়া যে কিছু নয় তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, সম্প্রতি সেনাবাহিনী কর্তৃক পার্বত্য আঞ্চলিক দল সমূহের কিছু শীর্ষ চাঁদাবাজ ও খুনি ধরা পড়ায় এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী যাতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে না পারে সেজন্য পাল্টা কৌশল হিসেবে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল।
তবে গর্বের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় যেসব কুচক্রী মহল জড়িত তাদের অতি শীঘ্রই আইনের আওতায় নিয়ে তাদের মুখোশ খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে সাধারণ পাহাড়িরা। তাদের মতে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতিষ্ঠান। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিরক্ষায় সেনাবাহিনী অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনাদলের অবদান সর্বোচ্চ মানের প্রশংসিত। তাই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে কোন চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে দেবে না সাধারণ পাহাড়িরা।

যেসব কারণে তারেক রহমানকে মেনে নিচ্ছে না আন্তর্জাতিক বিশ্ব

নিউজ ডেস্ক: গুঞ্জন উঠেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক চেষ্টা-তদবির করেও আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি পেতে ব্যর্থ হয়েছেন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান। তারেক রহমানের অযাচিত ও অগ্রহণযোগ্য আচরণে ঐক্যফ্রন্টের প্রতি সহানুভূতিশীল রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সূত্রের খবরে জানা গেছে, একাধিক কারণে তারেক রহমানের উপর নাখোশ আন্তর্জাতিক মহল। যেসব কারণে তারেকের উপর বিরক্ত আন্তর্জাতিক বিশ্ব…
ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির সমর্থক বিদেশী রাষ্ট্রগুলো মনে করে, তারেকের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’য়ের যোগাযোগ রয়েছে। আইএসআইয়ের কাছ থেকে নিয়মিত আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন তারেক। তার কিছু দালিলিক প্রমাণ এরই মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের এই দুই নেতার কাছে হস্তান্তর করেছে কয়েকটি রাষ্ট্র।
তারেক রহমান উলফাসহ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীদের আর্থিক এবং নানা ধরনের সহযোগিতা করে। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘটনগুলোর সঙ্গে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তারেকের সঙ্গে ভারতের জঙ্গিগোষ্ঠী সম্পর্কের পক্ষে ভারত কিছু তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছে ঐক্যফ্রন্টের হাতে।
আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তারেক রহমানের যোগাযোগের গুঞ্জন রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি রাষ্ট্র মনে করে, তারেক রহমান ক্ষমতায় আসলে মুসলিম বিরোধী রাষ্ট্র ইসরাইলকে গোপনে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতিতে মাথা ঘামানোর সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে। এতে করে ইসরাইল বাংলাদেশের সাহায্য নিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে মোটিভোট করে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করবে। এছাড়া ইসরাইল গোপনে বাংলাদেশে ঘাঁটি স্থাপন করে বাংলাদেশের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদের যাচ্ছেতাই ব্যবহার করবে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ইসরাইলের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে তারেক রহমানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা লাভবান হবে এবং পুরো বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তারেক রহমান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক ভারতের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী টাটা এবং জাপানী মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কোম্পানি হোন্ডা সহ বেশ কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির কাছে চাঁদা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সীমানা এবং রুট ব্যবহার করে অনেক অস্ত্রের চালান ভারতের সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছায়। যার মধ্যে (যেটাকে আমরা ১০ ট্রাক অস্ত্র বলে জানি ) একটা চালান চট্টগ্রামে ধরা পড়েছিল। এই অস্ত্রগুলোর চালানে তারেক রহমান মূল ভূমিকা পালন করতো বলে ভারত অভিযোগ করেছে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত মনে করে বিএনপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে তারেক রহমান বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যে বিদ্যমান সম্পর্ক, চুক্তি, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে নেতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ফলশ্রুতিতে ভারত আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া ইউরোপের কয়েকটি রাষ্ট্র মনে করে, তারেক রহমান ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশে নতুন করে বিনিয়োগ সংক্রান্ত চাঁদাবাজির সংস্কৃতি ফিরে আসবে। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপে ১৫ শতাংশ করে পারসেনটেন্স জোরপূর্বক আদায় করবেন তারেক। এত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হয়রানি করবেন তারেক। সুতরাং ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশে চাঁদার সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনার বিপক্ষে।
বাংলাদেশে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে হলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের স্বপক্ষের শক্তিদের বিজয়ী করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সাধারণ মানুষের ভোটের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে, তাই দেশ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে এখনই জনগণকে সজাগ হতে হবে বলেও রাজনীতি সচেতন নাগরিকরা বিশ্বাস করেন।

সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন যেখানে

নিউজ ডেস্ক: একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার মূল্যবান ভোট ককে বা কিসে দেবেন তা একটু গভীরভাবে ভেবে দেখা আপনার নৈতিক দায়িত্ব। যেহেতু রাজনৈতিক মাঠে নৌকা একটি প্রতীক এবং বিগত সময়ে দেশের জনগণই দেশ শাসনের ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অর্পণ করেছিলেন সুতরাং জেনে রাখা ভালো- বিগত সময়ে কী পেলেন, আর কেনইবা নৌকায় ভোট দেবেন।

আসুন এমন একটা হিসাব জেনে নিই-
বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পন্ন বাংলাদেশ:
২০০৬ সালের চেয়ে বর্তমানে বিদ্যুৎ বেড়ে দাড়িয়েছে ৭০০ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ ৭ গুণ । ৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ এখন ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। এটাকে নিশ্চয় অগ্রগতী বলতে বাধা নেই?
শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ:
শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। বর্তমানে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুন করে জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ করা হয়েছে। এমনকি নারীদের বড় একটা অংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সেক্টরে চাকরি পেয়েছে।
স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ:
টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যে এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে। ফলে শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। চিকিৎসা পদ্ধতির উৎকর্ষের ফলে দুরারোগ্য ব্যাধি খ্যাত এমন অসংখ্য রোগ থেকে মুক্ত করা হয়েছে জনসাধারণের জীবন। খোলা জায়গায় পায়খানা করার রীতি থেকে ক্রমেই বের করে আনা হয়েছে গ্রামীন জনগোষ্ঠীকে। প্রতিটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধিসহ কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ এবং সেখানে ৪৭ হাজারেরও বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাস্তাঘাট উন্নয়নে বাংলাদেশ:
যোগাযোগ সেক্টরে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন করেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তার উদাহরণ সবার জানা। এরমধ্যে রয়েছে- পদ্মা সেতু, পুরনো সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণ, বিভিন্ন নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ, ঢাকা ও চট্টগ্রামে উড়াল সেতু নির্মাণ, ওভারব্রিজ এবং বিভিন্ন জায়গায় ৪ লেনের রাস্তা নির্মাণ এবং সড়ক চওড়াকরণ সহ নানান বহুমুখী উদ্যোগ।
শ্রমখাত উন্নয়নে বাংলাদেশ:
এখন আর আগের মতো শ্রমিকদের বেতন আদায় ও বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করতে হয় না। কারণ সরকারই তাদের ন্যূনতম বেতন আর সেফটি আইন ধার্য্য করে দিয়েছে। যা শ্রমখাতে একটি দারুন নিরাপত্তা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নয়নে বাংলাদেশ:
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে এবং সেখানে তথ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। সবগুলো উপজেলাকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হয়েছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধিসহ মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে বাংলাদেশ।
শিল্প বাণিজ্য ও রপ্তানি উন্নয়নে বাংলাদেশ:
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি জাহাজ শিল্প, আবাসন শিল্প, ওষুধ শিল্প, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য শিল্প ও আইটি শিল্পে ব্যাপক হারে উন্নতি করেছে। বর্তমানে এসব থেকে রপ্তানি আয় ৪২ বিলিয়ন ডলার। যা পাকিস্তানের ৩ গুণ। প্রবাসী রেমিটেন্স ও ব্যাপকহারে বেড়েছে। প্রবাসীদের জন্য প্রবাস কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে, যা থেকে স্বল্প সুদে প্রবাসীরা ঋণ সুবিধা পাচ্ছে ।
এছাড়া কৃষিখাত, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, সেচ প্রকল্প, বুলেট ট্রেন প্রকল্প, পায়রা বন্দর, ঢাকা খুলনা এক্সপ্রেস হাইওয়ে, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকার চারপাশ ঘিরে সার্কুলার ট্রেন, ঢাকা চিটাগাং হাইওয়েসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হয়েছে কল্পনাতীত।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণের উন্নতি, ভেজাল বিরোধী অভিযান সহ নানামুখী উদ্যোগ। সবই হয়েছে এই সরকারের কল্যাণে।
এখন সিদ্ধান্ত আপনার। আপনার একটি ভোটের কারণে আরও এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। আবার আপনার সেই একটি ভোটেই যুগের পর যুগ পিছিয়ে যেতে পারে উন্নয়ন। আসুন সিদ্ধান্ত নিই।

খালেদা-তারেককে মাইনাসে সফলতার সাক্ষী মির্জা ফখরুলের অশ্রু, বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক: বর্তমান সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি হিসেবে বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মনোনয়নের চিঠি বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয়েছে দলটির চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এ চিঠি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চিঠি বিতরণকালে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তখন তিনি বলেন,‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনে যেতে হচ্ছে। খালেদাকে মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি।’ এদিকে নির্বাচনে পূর্বে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে সরকার বিরোধী আন্দোলনের আগুনে হাওয়া দেওয়ার অপচেষ্টায় মির্জা ফখরুল কুমিরাশ্রু বিসর্জন দিয়েছেন বলে সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেই বিএনপির একটি অংশের নেতৃত্বে সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে তৃণমূল পর্যায়ে বৈধতা অর্জন করতে মির্জা ফখরুল অশ্রু বিসর্জনের কৌশল অবলম্বন করেছেন। পক্ষান্তরে, খালেদা-তারেককে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার নিজেদের দীর্ঘদিনের সাজানো পরিকল্পনায় সফলতা অর্জন করায় খুশি হয়েই মির্জা ফখরুল কান্নার মাধ্যমে তৃণমূলকে বুড়ি আঙুল দেখিয়েছেন বলেও বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুলের কান্নার বিষয়টিকে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক এ আরাফাত বলেন, গুঞ্জন আগে থেকেই চাউর হয়েছিলো যে, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস করার জন্য বিএনপির একটি চক্রান্ত করছে। বিষয়টি নিয়েও বিএনপি নেতাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো। তখনও মির্জা ফখরুলদের মতো সুবিধাবাদী বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও সেটি যে আসলে প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র ছিলো সেটি পরিষ্কার হলো তৃণমূল বিএনপির কাছে। আমার ধারণা, ড. কামালদের প্ররোচনায় পড়ে বিএনপির মালিক হতেই মির্জা ফখরুলদের মতো সুযোগ সন্ধানী নেতারা এমন দিনের অপেক্ষা দীর্ঘদিন ধরেই করছিলেন। সেই অর্থে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হলো। বিএনপির রাজনীতিতে জিয়া পরিবারের উপস্থিতি ক্রমেই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটিই প্রমাণ করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। মির্জা ফখরুলের কান্না আমার কাছে ষড়যন্ত্র সফল হওয়ার আভাস মনে হয়েছে। জিয়া পরিবার ও বিএনপির ভাঙন আমি দেখতে পাচ্ছি।
বিষয়টিকে দীর্ঘদিনের সাজানো পরিকল্পনার চূড়ান্ত মঞ্চায়ন বলে মন্তব্য করে বিএনপি সাবেক নেতা ও বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, মির্জা ফখরুলের মিথ্যা কান্না দেখে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য আমার করুণা হচ্ছে। যাকে এতটা বিশ্বাস করলেন বেগম জিয়া ও তারেক, সেই মির্জা ফখরুল বিএনপির সাথে বেইমানি করে নিজেদের স্বার্থ ঠিকই উদ্ধার করতে সমর্থ হলেন। আমি শুরু থেকেই বলছিলাম, মির্জা ফখরুল বিএনপির জন্য ক্ষতিকারক। তার দ্বিচারিতার জন্য দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমার কথায় কান দেননি বেগম জিয়া। বিএনপিকে আন্দোলন বিমুখ ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত করেছেন মির্জা ফখরুল গং। জিয়া পরিবারকে উৎখাত করে বিএনপির নেতৃত্ব নিজ হাতে দখল নিতে সফল হয়েছেন মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুলের কুমিরাশ্রুতে বিএনপি ভাঙন ও জিয়া পরিবারকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াত শাসনামল (ডিসেম্বর ২০০২): সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বী নির্যাতনের চিত্র- ১৩

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নির্যাতনের চিত্র বর্ণনাতীত। যতবার তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে ততবারই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর চালিয়েছে সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা বিএনপি-জামায়াত সরকারের মদদে ‘সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের’নিপীড়িত হবার ঘটনাগুলো আজ ত্রয়োদশ পর্বে তুলে ধরা হলো। এ পর্বে উল্লেখ করা হলো ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য কিছু চিত্র। তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হলো সে সময়ের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহ।
২ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: পূর্বধলায় সংখ্যালঘুর বাড়িতে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হামলা
১০ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: জলঢাকায় জামায়াত সমর্থক ও থানা পুলিশের কাণ্ড! জমি দখলের জন্য সংখ্যালঘুকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ
১৩ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: বালাগঞ্জে ৪টি মূর্তি ভাঙচুর
১৭  ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: খুলনায় এক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল, থানা মামলা নেয়নি
১৮ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: লালমোহনে ৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের ৯ একর জমির ধান লুট: থানায় মামলা
২৩ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: মূল হোতা সরকার ক্যাডার বাহিনী: বুদ্ধমূর্তি লুটে বাধা পেয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে জবাই
২৬ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: সন্ত্রাসীদের কোপে বাগেরহাট এনজিও কর্মকর্তা জখম, মোড়েলগঞ্জে চাঁদাবাজদের হাতে ২জন প্রহৃত
২৭ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সন্ত্রাসীদের ভয়ে নাচোলের ২শ আদিবাসীর সেনা ক্যাম্পের সামনে অবস্থান গ্রহণ
২৮ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক আজকের কাগজ: নবাবগঞ্জে কালিমূর্তি ভাঙচুর
৩০ ডিসেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: জবরদখল করা শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার পৈত্রিক ভিটায় ঘর তুলেছেন বিএনপি নেতা

বিএনপিতে মনোনয়ন বাণিজ্য চরমে, ব্যক্তি নয় প্রাধান্য পাচ্ছে টাকা!(ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে দলের সাংগঠনিক ভারসাম্য হারাতে বসেছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কেবল অর্থের কারণে জনপ্রিয় নেতাদের রেখে অজনপ্রিয় ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছিলো কেন্দ্রীয় নেতাদের। এমনকি এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন সিটিতে বিএনপির প্রার্থীদের লজ্জাজনক হারও মেনে নিতে হয়েছে। এর ফলে বেড়েছে তৃণমূলে কোন্দল। এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে এসেও মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে  এমন অসংখ্য অভিযোগ ঘুরছে কেন্দ্র থেকে তৃণমল বিএনপিতে।
সূত্র বলছে, সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করতে একটু বেশি সময় নিচ্ছে বিএনপি। ঐক্য এবং ২০ দলীয় শরিক দলগুলোর আসন ভাগ-বাটোয়ারার কথা উল্লেখ করে কালক্ষেপণ করা হলেও প্রকৃত সত্য ভিন্ন। বিএনপির কেন্দ্র এবং তৃণমূলে উড়ছে মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে নানা গুঞ্জন ও অভিযোগ। তাদের অভিযোগ- গোপনে টাকা খেয়ে অযোগ্য অজনপ্রিয় একাধিক মামলার আসামি, নারী ও শিশু পাচারকারীদের মনোনয়ন দিচ্ছে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে থাকা নেতারা।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মমিনুল হক বলেন, এই আসন থেকে সাবেক সাংসদ এম এ মতিন এর আগে নির্বাচিত হয়। কিন্তু এমপি হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের প্রমাণ পাওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীসহ এ আসনের সাধারণ মানুষও তার উপরে ক্ষুব্ধ। এটি কেন্দ্রীয় বিএনপিও জানে। মতিন শুধু দুষ্ট লোক তা নয়, সে একজন মাতাল-লম্পট। কথা ছিলো একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। কিন্তু কেবল মতিন সাহেবের অর্থের কারণে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে না। শুধু এই আসনে নয়- আমি দেখছি অসংখ্য আসনে একই অবস্থা। ভেবেছি দল ছেড়ে দেব। বিএনপি আর আগের বিএনপি নেই।
এদিকে ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বিএনপির নমিনেশন ব্যবস্থা করে দেয়ার খবরও দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। তা দলে এবং তৃণমূলে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এমন প্রেক্ষাপটে মনোনয়ন বাণিজ্য বিএনপিকে নিঃস্ব করে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট রাজনীতিকরা।এ প্রসঙ্গে বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিএনপি যে ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্নের দিকে এগুচ্ছে সেটি বুঝতে পারছে না দলের নেতারা। এমনকি দেখেও না দেখার ভান করছেন দলের নীতি নির্ধারকরা। বাণিজ্য করে আপাতদৃষ্টিতে আখের গোছাতেই তৎপর কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না এর মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠিত দল কিভাবে ক্রমেই তলিয়ে যাচ্ছে। মাতাল, লম্পট, চাঁদাবাজ, জোচ্চোর দিয়ে যদি রাজনীতি হতো তাহলে রাজনীতিকে রাজ নীতি নয়, অন্য নামে ডাকা হতো। কেবল অর্থের কারণে বিএনপিতে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে অজনপ্রিয় এবং অরাজনীতিকদের। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তৃণমূলের এই অভিযোগগুলো একদিন বিস্ফোরণ হয়ে ফাঁটবে। তখন বিএনপির আর শেষ রক্ষা হবে না।

Sunday, November 25, 2018

আশ্রয়ন খাত

জেলা-উপজেলা সব স্থানে আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে উঠছে। দেশে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এক লক্ষ ৬০ হাজার গৃহহীন মানুষকে বসবাসের সুযোগ-সুবিধা করে দেয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে আমাদের দেশে যত গৃহহীন মানুষ রয়েছে তাদের কথা বিবেচনা করে অনেক আশ্রয়ন প্রকল্প গঠিত হয়েছে। সরকার যে আশ্রয়ন প্রকল্প গঠন করেছেন তার মাধ্যমে সেখানে প্রত্যেক গৃহহীন পরিবার একটি করে ঘর পাবেন। এরই মধ্যে ২১ হাজার ৭৪৫টি পরিবারকে ৩২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ার পর তাদের চাহিদা মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে করে সবাই কর্মক্ষম হচ্ছে এর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারছে, এই ঋণ এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারছেন।
এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৮১টি প্রকল্প এলাকায় এক লাখ ৬০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৮৩৭টি গ্রামে ব্যারাক নির্মাণ করে এক লাখ ৪৪ হাজার ১২০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর-বাড়ি নেই তাদেরকে ঘর নির্মাণ এর জন্য সহায়তা করা হচ্ছে। এরকম গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৪২টি। এভাবে অল্প অল্প করে দেশের যত দরিদ্র, অসহায় গৃহহীন মানুষ রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে কেউ যেন বাদ না যায় এই লক্ষে চলমান প্রকল্পের একটি আওতায় ২০১৯ সালের মধ্যে আড়াই লক্ষ গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ন প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। ২০১০ সালে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প গঠন করা হয়। এর আওতায় দরিদ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নির্মাণের সামর্থ্য নেই তাদের নিজের জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আরো বেশি ঘর নির্মাণ করা হবে যেন কেউ গৃহহীন ভাবে না থাকে। সরকার এই প্রকল্পে খুব গূরত্বের সাথে দেখছে। তাই এই ক্ষেত্রে সরকার আলাদা বাজেট করেছে।

বিএনপি জামায়াতের আমলনামাঃ কানসাটে ২০ জনকে গুলি করে হত্যা

২০০১ সালে প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেই স্বভাবসিদ্ধ গণবিরোধী অবস্থান নেয় বিএনপি। দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহতম সন্ত্রাস ও দুর্নীতি। সারাদেশে নেমে এক অন্ধকার বিভীষিকা।
‘হাওয়া ভবন’ স্থাপন করে সরকারের ভেতরেই আরেক প্যারালাল সরকার চালাতে থাকেন খালেদার গুণধর পুত্র তারেক জিয়া। জনশ্রুতি রয়েছে তারেককে নির্দিষ্ট কমিশন না দিয়ে সরকারি কোন কাজ সম্পন্ন করা যেতো না। এমনও হয়েছে যে, খালেদা জিয়ার অনুমোদিত অনেক কাজই হাওয়া ভবনে গিয়ে বাতিল হয়েছে।
তারেককে ঘিরে গড়ে ওঠে বিশাল এক সিন্ডিকেট। তারেক বাহিনী ও খালেদা বাহিনী নামে আলাদা আলাদা বলয় গড়ে ওঠে সরকারে। দুর্নীতিতে যেন প্রতিযোগিতা চলতে থাকে দুই বলয়ে। আর সারদেশে স্থাপিত হতে থাকে বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন খাম্বা। এই খাম্বা স্থাপনের ঠিকাদারীও ছিল তারেকের মালিকানাধীন কোম্পানীর।
এসব অপকর্মের ফলেই দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হবার লজ্জাজনক রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
সীমাহীন অন্যায়-অনিয়মে দেশব্যাপী ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। এমনই তীব্র ক্ষোভ থেকে ২০০৬ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি জামায়াতের ভীত নাড়িয়ে দেয়া একটি আন্দোলনের সুত্রপাত। ৫ দফা দাবি আদায়ে ২০০৬ সালে কানসাট পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় ঘেরাও করলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ২০ জন নিরীহ মানুষ। আহত হয় শতাধিক। ফলে কানসাট ছাড়িয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে শিবগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে। কানসাট হয়ে ওঠে অগ্নিগর্ভ। ৫ দফা রূপ নেয় ১৪ দফায়।
জানুযারি থেকে এপ্রিল, পাঁচ মাস কানসাটে দফায় দফায় পুলিশের ধরপাকড়, লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, গুলিবর্ষণ চলতে থাকে। বিদ্যুতের দাবিতে গ্রাহকসহ সর্বস্তরের নারী-পুরুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। হরতাল, অবরোধ পালন করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। তারপরও তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর দমন-পীড়ন চালিয়ে আন্দোলনকে রুদ্ধ করার চেষ্টা করে। এতে জনগণ আরো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, বিএনপি জামায়াতের তৎকালীন সাংসদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি শাহজাহান আলী মিয়ার নির্দেশে অত্যাচার, নির্যাতন ও গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করা হয়, ঘরবাড়িতে চালানো হয় ব্যাপক লুটপাট। পুলিশি নির্যাতনে ঘর ছাড়েন শত শত পরিবার। কানসাট আন্দোলনে নিহতরা সকলেই ছিল নিরীহ জনগণ।
অবশেষে বিদ্যুতের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে সরকারের নতি স্বীকারের মধ্যদিয়ে। চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী ও এমপিরা সমঝোতায় বসেন বিদ্যুৎ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। ২০০৬ এর ১৬ এপ্রিল রাজশাহী সার্কিট হাউসে দু’পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ১৪ দফা সমঝোতা চুক্তি। কানসাটের জনগণ একে আজীবন ‘শোষকের বিরুদ্ধে জনতার জয়’ হিসেবে দেখবেন।
কিন্তু জনগণের রক্ত নেয়ার কলংক বিএনপি জামায়াতের পিছু ছাড়েনি, বরং তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার রাস্তাকে করেছে পিচ্ছিল। শেষমেশ ব্যাপক জনরোষ আর কোটি মানুষের অভিশাপ নিয়েই ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিলো তাদের।
 

নির্বাচনে বিএনপির হয়ে কাজ করতে ৫ ব্যবসায়ীকে ‘তারেকের টেলিফোন’ হুমকি!

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা এবং অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে নতুন কৌশল হাতে নিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। জানা গেছে, দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ীদের কাছে লন্ডন থেকে টেলিফোন আসছে। টেলিফোনে বলা হচ্ছে, ‘আমি তারেক বলছি। আপনি কেমন আছেন?’

এরপর বলা হচ্ছে, ‘এবারের নির্বাচন জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা জাতির অস্তিত্বের নির্বাচন। এই নির্বাচনে আপনি সহযোগিতা করুন। অন্যথায় আমরা ক্ষমতায় এলে আপনার খারাপ কিছু ঘটে গেলে তার জন্য আপনি নিজেই দায়ী থাকবেন।’ এমনকি কেউ তারেকের নির্দেশ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তারেক নিজেই তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে।
এ পর্যন্ত যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলসহ অন্তত ৫ জন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে ‘তারেকের টেলিফোন’ হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারা হুমকির বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।
লন্ডন সূত্রে জানা গেছে, দেশ থেকে পলাতক বিভিন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে তারেকের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা গত দু’দিন থেকে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তৎপরতা শুরু করেছে। সদ্য গঠিত ওই গ্রুপের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের বলা হচ্ছে, যদি তারা সহযোগিতা না করেন, তাহলে ভবিষ্যতে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসবে তখন তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।
`তারেকের টেলিফোন’ হুমকি সম্পর্কে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, তারেক রহমানের ওই টেলিফোনে বলা হয়, ‘আপনার মালিক (নুরুল ইসলাম বাবুল) বাবুলকে বলেছি, আপনি আমাদের পক্ষে কাজ করুন, ক্ষমতায় এলে আপনার বাকি জীবন চলার মতো অর্থের ব্যবস্থা আমরা করে দিবো। অন্যথায় আপনি ভালো করেই জানেন যে আপনার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ আপনার পত্রিকাতেও আসবে না।’
এ নিয়ে ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তারা থানা পুলিশকে কিছু জানাতে সাহস পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী জানান, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারেক জিয়া এবং গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। তখন আমরা যেকোন ব্যবসা করতে গেলেই তাদেরকে চাঁদা দিতে হতো। কিন্তু নির্বাচনে আসার সাথে সাথে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে যেভাবে চাঁদা দাবি করছেন, তা উদ্বেগজনক। বিএনপি নির্বাচনে আসছে, এটা ভালো কথা। কিন্তু তিনি এখনই যদি এমন করেন তবে ক্ষমতায় এসে না জানি কী করবেন?
এমন পরিস্থিতিতে ‘তারেক রহমানের সদ্য গঠিত নেটওয়ার্ক’ ও ব্যবসায়ীদের হুমকির বিষয়ে প্রশাসনের তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

Saturday, November 24, 2018

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পিছনেই রয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা!

একটি দেশের অর্থনীতি অনেকটা নবজাতক শিশুর মতো। একটি শিশু পৃথিবীতে আসার পর তার একটি সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ দরকার যাতে সে একজন ভালো মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। এজন্য অভিভাবক, পরিবারের সদস্যদের অন্ত  থাকে না তার প্রতি খেয়াল রাখার জন্য। একটি দেশের  অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার জন্যও প্রয়োজন সে রকম একটি পরিবেশ, যাতে একটি শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
স্বাধীনতার পর বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৫০টি দরিদ্র দেশের ভিতর বাংলাদেশ ছিল অন্যতম। তখন তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো এই দেশকে। কিন্তু বিগত নয় বছরে অর্থনৈতিক ভাবে বিস্ময়কর উন্নতির মাধ্যমে উন্নত বিশ্বকে তাকে লাগিয়ে দিয়েছে এই দেশ। সম্প্রতি  দ্যা ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা  হয়েছে  ক্রমাগত দারিদ্র্য কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশ্বে পরিচিতি পাওয়া শীর্ষ চার দেশের সাথে বাংলাদেশের নাম রয়েছে প্রথম স্থানে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিস্ট ফোরাম ৭৪টি উদীয়মান অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে ৪৬তম অবস্থান থেকে  ৩৮ তম অবস্থানে রেখেছে। শুধু তাই নয় দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে হয়েছে অগ্রগতি।
২০১৫ সাল থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে লেগেছে নতুনত্বের হাওয়া। উন্নয়নের পাল তুলে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক খাত। এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত রয়েছে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
দেশের বেশ কিছু  শিল্প নিয়ে তৈরী হয় দেশের অর্থনৈতিক খাত।  স্বাধীনতার পর থেকে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে রেখেছে পাট শিল্প ও পোশাক শিল্প। যদিও এই অগ্রযাত্রায় পোশাক শিল্পের অবদানই সব থেকে বেশি। কিছু কুচক্রী রাজনৈতিক মহলের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের জন্য থমকে গিয়েছিলো দেশের অর্থনৈতিক চাকা। রাজনৈতিক কোন্দল , হরতাল, মারামারির জন্য  বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ।
দেশের পোশাক শিল্প অনেকটা রফতানিমুখী। রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য অনেক ক্রেতা সংস্থা  ক্রয়াদেশ বাতিল করেছিল। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল আমাদের দেশে তৈরী পণ্যের উপর থেকে। কিন্তু গত এক দশকে বিশেষ করে  ২০১৫ সাল থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে দেশের বিভিন্ন খাতে।
দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য পোশাক শিল্পের পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছে দেশের ঔষধ শিল্প। বিশ্বের উন্নত বিভিন্ন দেশ বর্তমানে আস্থা রাখছে আমাদের দেশে উৎপাদিত ঔষধের  উপর। রেমিট্যান্স খাতও এগিয়ে চলছে স্বমহিমায়। বিশ্ব অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০ টি দেশের মধ্যে আগের চেয়ে ৯ ধাপ এগিয়ে ১২৮ তম অবস্থানে রয়েছে।
বর্তমানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য দেশের অর্থনীতি বিকাশ লাভ করেছে। শুধু তাই নয় অদম্য উন্নত এই দেশের নাম আজ উচ্চারিত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তার অন্যতম কারণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, যা  বাংলাদেশকে জায়গা করে দিয়েছে বিশ্ব মানচিত্রের অনন্য জায়গায়।

ঐক্যফ্রন্টে গৃহদাহঃ জোট ছাড়ছেন গণফোরামের অনেকেই

বহু দেন-দরবারের পরে পাঁচটি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকছেন প্রেস ব্রিফিংয়ে পারদর্শী নেতা ড. কামাল হোসেন। এতে জনভিত্তিহীন গণফোরামের এই নেতার সন্তুষ্ট হবারই কথা। জনগণের সরাসরি ভোটে বারবার যার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, তিনি খুশি না হয়ে যাবেন কোথায়!
তবে এবার তাকে ছেড়ে যাবার কথা চিন্তা করছেন তারই দলের অন্য নেতারা। যাবার-ই তো কথা! অশেষ হালুয়া রুটির আশায়ই গণফোরামে ভিড়েছিলেন এসব নেতারা। লক্ষ্য একটাই- ক্ষমতার কাছাকাছি আসা। কিন্তু ড. কামাল তাদেরকে ক্ষমতার ধারে কাছে তো দূরের কথা, জামানত ফেরত পাওয়ার ধারে কাছেও নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বারবার। হতাশ-বিরক্ত নেতারা তাই বহুদিন ধরেই দলত্যাগের কথা ভাবছেন।
তবে সকল নীতি আদর্শ ত্যাগ করে ড. কামাল ঐক্যফ্রন্টের চালকের আসনে চলে আসায় নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলেন এসব নেতারা। কিন্তু বিধিবাম!
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্বের প্রশ্নে তারেক-কামাল দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে। কামাল বিএনপির ওপর ছড়ি ঘুরাচ্ছেন, এমনটা আঁচ করতে পেরেই দলে নিজের কর্তৃত্ব জোরদার করতে চাচ্ছেন পলাতক তারেক। ফলে কপাল পুড়তে যাচ্ছে কামালের গণফোরামের।
‘জামায়াত প্রশ্নে কোন ছাড় নেই’ বারবার কামাল হোসেনের এমন ঘোষণার পরেও তিনি জামায়াতকে মেনে নিয়েই ঐক্যফ্রন্টে আসেন। দলে হাতগোনা যে ক’জন নেতা আছেন, তারাও স্বীয় স্বার্থে তার এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। আশা একটাই, জীবনে প্রথমবারের মতো সাংসদ হবেন।
ড. কামালও শুরু থেকে ৫০টি আসন দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু তারেকের সন্ত্রাসী মনোভাবের কাছে হার মানেন কামাল। নিজের আসনসহ মাত্র পাঁটটি আসন পাচ্ছেন তিনি।
ফলশ্রুতিতে একথা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, তার দলের অধিকাংশ নেতাই মনোনয়ন বঞ্চিত থেকে যাবেন। সম্ভাব্য সেইসব মনোনয়ন বঞ্চিতরাও বিকল্প ভাবছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গণফোরাম নেতা জানান, ড. কামাল হোসেন আমাদের সাথে বেঈমানী করেছেন। তিনি নিজেরসহ তার পদলেহনকারী, এমনকি ব্যক্তিগত কর্মচারীদের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। অথচ তিনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আমাদের মনোনয়নের ব্যবস্থা করবেন। সেই আশায়ই উনার সাথে দীর্ঘদিন আছি। নানাভাবে উনাকে সাহায্য করেছি। যার সবকিছু গণমাধ্যমে বলা সম্ভব না। তবে আমরা বসে নেই। বঞ্চিতরা অচিরেই একসাথে বসে করণীয় নির্ধারণ করবো। আমরা চাই অতীতের সকল ভুলভ্রান্তিকে পেছনে ফেলে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে’।
তবে অবস্থা যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে আগামী কিছুদিনে আরো অনেকের ঐক্যফ্রন্ট থেকে বের হয়ে আসার দৃশ্য আমরা দেখতে পাবো, একথা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

ঐক্যফ্রন্টে প্রভাব বিস্তার নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব অন্যান্য দলের

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনীতিতে বাড়ছে অনিশ্চয়তা, ক্ষমতার প্রভাব, জোট গঠন ও জোটের ভেতরে থেকে স্বেচ্ছাচারিতার মত নানা সমীকরণ ও গুঞ্জন । বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে গড়ে ওঠা সরকার বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে প্রভাব বিস্তার ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ড. কামালদের সাথে একধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে জোটে বিএনপির ছায়ায় লুকায়িত জামায়াত। জামায়াতের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা মহাবিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ বলে জোটের সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সম্মুখে এসে জামায়াত জোটের চালিকাশক্তিতে পরিণত হওয়ার যে প্রয়াস চালাচ্ছে, তাতে বিরক্ত জোটের অন্যান্য দলগুলো।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত দলহারা হয়ে বিএনপির ঘাড়ে চেপে জোটে তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে সব পরিকল্পনায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে বলে করেন জোটের অন্যতম দল গণফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, জামায়াত কৌশলে ঐক্যফ্রন্টে প্রবেশ করে জোটকে নিজেদের আদর্শে পরিচালিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের কিন্তু শুরু থেকেই জামায়াতকে নিয়ে সন্দেহ ছিল। ড. কামাল হোসেন জামায়াতকে জোটে নিতে চাননি শুরু থেকে। কিন্তু লন্ডনের ফোনের কারণে এবং নির্বাচনে মাঠপর্যায়ের রাজনীতি সামাল দেওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে জামায়াতকে জোটে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সেই জামায়াতের কিন্তু নিবন্ধন পর্যন্ত বাতিল হয়ে গেছে। তাদের শিকড় কেটে ফেলা হয়েছে। অথচ তাদের ক্ষমতার মিথ্যা প্রভাব দেখানোর অভ্যাস এখনো যায়নি। জামায়াতের অবস্থা জলে ভাসা কচুরিপানার মতো। আমি বিভিন্ন জায়গায় শুনেছি, জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঐক্যফ্রন্টকে নাকি কৌশলে টিকিয়ে রেখেছে জামায়াত। ঐক্যফ্রন্টের যাবতীয় সমাবেশ, মিছিল-মিটিংয়ের ব্যয় নাকি তারা বহন করছে। বিষয়টি মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে ড. কামালের একান্ত প্রচেষ্টায়। ক্ষমতার বাহাদুরি নয় ড. কামাল হোসেন বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির চর্চা করেন। জামায়াত হলো মাথামোটা, ষড়যন্ত্রকারীদের সংগঠন। এদের দ্বারা দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ঐক্যফ্রন্ট চলে ড. কামালদের নির্দেশনায়। দেশ বিরোধী নিষিদ্ধ কোন দল এখানে পাত্তা পাবে না। এটা জামায়াতের মনে রাখা উচিত। ঐক্যফ্রন্টে স্বাধীনতার পক্ষের দলগুলোর বেশি প্রভাব রয়েছে। আমরাই ঐক্যফ্রন্টের কাণ্ডারি, এটি জামায়াতকে মনে রাখতে হবে।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্টে কে বেশি প্রভাবশালী বা কোন দল কতটা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী, সেটির পরীক্ষা করাটা বোকামি। জামায়াত আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল। তবে জামায়াতের রিজার্ভ ভোটব্যাংক আছে। এছাড়া মাঠের রাজনীতিতে ঐক্যফ্রন্টের অনেক দলের চেয়ে শক্তিশালী জামায়াত। তবে তাদের গোড়া কেটে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন কিছুটা পরগাছার মত হয়ে পড়েছে। জামায়াত বিএনপির ছায়ায় নিজেদের দানব ভাবতে শুরু করেছে। সেটি তাদের ভুল হবে। কারণ জামায়াতের গায়ে কলঙ্কের দাগ আছে। সুতরাং জোটে থাকতে হলে অপরাধ, অপকর্ম মেনে নিয়ে ড. কামালের সিদ্ধান্তে পথ চলতে হবে। এখানে ক্ষমতা দেখানোর কিছু নেই। ঐক্যফ্রন্ট পছন্দ না হলে জামায়াত যেকোন মুহূর্তে জোট থেকে বের হয়ে যেতে পারে। আমরাও চাই না কেউ আমাদের পাকিস্তান ও যুদ্ধাপরাধীদের দালাল বলে গালি দিক।

খন্দকার মোশাররফকে রাষ্ট্রপতি ও মির্জা ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি

দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। অন্যদিকে একাধিক মামলার দণ্ড নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের দুই কাণ্ডারির রাজনীতিতে সরাসরি অনুপস্থিতির কারণে তৃণমূল বিএনপিতে দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন উঠেছে। তৃণমূল বিএনপি মনে করে, খালেদা সহসাই জেল থেকে মুক্তি পাবেন না আর তারেক রহমানের পক্ষে দেশে ফেরা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনে যদি ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হয় তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে, রাষ্ট্রপতির পদে দলটির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পদে মির্জা ফখরুল ইসলামকে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি। দলটির একাধিক তৃণমূল সূত্রে বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
বিএনপি সংস্কারপন্থী নেতা জহির উদ্দিন স্বপন মনে করেন, বিএনপি দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। দলটির প্রাণ হল তৃণমূল। এছাড়া সাধারণ মানুষেরও বিএনপির প্রতি কিছুটা হলেও সহানুভূতি রয়েছে। তবে বিগত ২০০১ সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি ব্যাকফুটে চলে যায়। ক্রমাগতভাবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপেক্ষা করে ইচ্ছামত দল চালানোর কারণে লাখ লাখ কর্মী পরবর্তীতে দলবিমুখ হয়ে পড়ে। তারই পরিণাম ভোগ করতে হচ্ছে বর্তমান সময়ে এসে। আন্দোলন-সংগ্রামে তাই তৃণমূল বিএনপির অংশগ্রহণ তুলনামূলক অনেক কমে গেছে। এছাড়া খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হওয়ায় তৃণমূল বিএনপি তাদের উপর ক্রমেই আস্থা হারিয়ে ফেলছে। সেই তুলনায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল বিএনপি। এছাড়া সামনে নির্বাচন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে যদি ঐক্যফ্রন্ট সরকার গঠন করতে পারে তবে সেই সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি। কারণ এই দুই নেতা তৃণমূল বিএনপির কাছে জনপ্রিয়। দলে তাদের প্রভাবও ব্যাপক। তারা দুজন এই পদগুলোতে বসলে বিএনপি পুনরায় সার্বজনীন জনপ্রিয়তা ফিরে পাবে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতারা।
এই বিষয়ে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বিএনপির কোন পরিচয় নেই, এটি সত্য। তবে বাস্তবতা এখন কিছুটা ভিন্ন। দুজনই মামলার জালে আটকে পড়ায় দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে বিএনপি, বিশেষ করে তৃণমূল বিএনপি। আজ একটাই প্রশ্ন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কারা হবেন বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতা? কাদের নেতৃত্বে বিএনপি রাজনীতি করবে? আমি তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীর সাথে কথা বলেছি এসব বিষয়ে। তারা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে দেখতে চায়। আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি জয়ী হয় তবে খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে রাষ্ট্রপতি ও মির্জা ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ দিলে তৃণমূল বিএনপি খুশি হবে। দল বাঁচাতে হলে তৃণমূলকে মূল্যায়ন করা ছাড়া বিকল্প কিছু দেখছি না। কারণ তৃণমূল নেতৃত্বই বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে পারে এবং আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করবে। সুতরাং বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য হাই কমান্ডকে অনুরোধ করছি।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অপরাধ-দুর্নীতি বিবেচনা করে বিএনপিকে তরুণ প্রজন্ম ও সচেতন নাগরিকদের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে হলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে দলের নেতৃত্বভার দেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ঐক্যফ্রন্টের দুর্গে তারেকের হামলা: ভারতের সমর্থন হারাচ্ছেন ড. কামাল

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসতে পূর্ববর্তী ওয়াদা থেকে সরে আসায় দেশটির ক্ষোভের মুখে পড়েছেন ড. কামাল হোসেন। ভারতের স্পষ্ট বক্তব্য ছিলো যে, ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে বিএনপির বিতর্কিত নেতা তারেক রহমান কোন রকম হস্তক্ষেপ করবেন না। কিন্তু তারেক রহমান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি হস্তক্ষেপ করায় ঐকফ্রন্টকে সকল ধরনের সুবিধা দেয়ার ঘোষণা থেকে সরে এসেছে ভারত। নির্বাচনের অন্তিম মুহূর্তে ভারতের পিছুটানে চাপের মুখে পড়েছে ড. কামাল তথা ঐক্যফ্রন্ট। তারেক রহমানের অযাচিত হস্তক্ষেপে ড. কামাল ও ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতারা নির্বাচনে নেতিবাচক ফলাফলেরও আশঙ্কা করেছেন।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ একাধিক সিনিয়র নেতাও নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতা সাপেক্ষে প্রদত্ত শর্তটি মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের প্রতিটি নির্বাচনী কার্যক্রমে লন্ডন থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন তারেক রহমান। তারেক রহমানের মতো দণ্ডিত অপরাধী দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ায় ভারত ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামালের উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে। এর জন্য ড. কামালকে নির্বাচনে কোন ধরনের সহযোগিতা না করারও হুমকি দিয়েছে ভারত।
এদিকে তারেক রহমানের বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে ড. কামালসহ ঐক্যফ্রন্টের কপাল পুড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা। ভারতের চোখে, তারেক রহমান একজন অপরাধী এবং বিপথগামী রাজনীতিবিদ। তারেক রহমানকে ভরসা করে ভারত একবার ভুল করেছে কিন্তু সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর করতে চায় না দেশটি। এক অর্থে বলা যায়, তারেক রহমানের কারণে ঐক্যফ্রন্টের সকল পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যেতে বসেছে। ঐক্যফ্রন্টের কোন নেতা এমনকি ড. কামালও তারেক রহমানের ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বিবেচনা করে বিষয়টি হজম করতে পারছেন না। ভারতের দৃষ্টিতে ঐক্যফ্রন্টের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছেন তারেক। তারেক রহমানের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনে কাঙ্খিত ফলাফল না পাওয়া যেতে পারে, সেটি বিবেচনা করে ড. কামালসহ ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা নিজেদের হতাশা ও বিরক্তির কথাও প্রকাশ করেছেন। তারেক রহমান এখনই নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে না নিলে ঐক্যফ্রন্টকে কোন ধরনের সুবিধা না দেওয়াও হুমকি দিয়েছে ভারত।
এই বিষয়ে ঐকফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের হঠাৎ সরব হয়ে ওঠার কারণে ঐক্যফ্রন্ট কিছুটা চাপের সম্মুখীন হয়েছে, এটি সত্য। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ভারত শুরু থেকেই তারেক রহমানকে জোট থেকে দূরে রাখার বিষয়ে শর্ত দিয়েছিল। কামাল স্যারও ওয়াদা করেছিলেন যে, ঐক্যফ্রন্টের কোন কার্যক্রমে তারেক রহমান সরাসরি জড়িত হবেন না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিটি সিদ্ধান্তে তারেক রহমান মাথা ঘামাচ্ছেন। বিষয়টি ড. কামাল ও আমাদের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর। ভারতীয় দূতাবাস ১৯ নভেম্বর ড. কামালকে এই বিষয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। কারণ ভারত কোন সাজাপ্রাপ্ত আসামির নেতৃত্ব মেনে নেবে না, সেটি ড. কামালকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও কিছুটা চিন্তিত। শুরু থেকে ড. কামাল বিএনপি নেতা তারেককে ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রমে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে তারেকের সক্রিয়তা বেড়েছে। রূপক অর্থে বলা যায়, নিজ ঘরে আগুন দেওয়ার খেলায় মেতেছেন তারেক। তারেক রহমানের এমন হস্তক্ষেপে ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা হতাশ ও বিরক্ত। আমি আশা করি, ঐক্যফ্রন্টের বৃহত্তর স্বার্থে তারেক রহমান বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবেন। এই মুহূর্তে তারেকের নীরবতাই ঐক্যফ্রন্টের জন্য মঙ্গলকর।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম বৃহৎ দল হলো বিএনপি। তবে এটিও সত্য যে, ড. কামালদের কারণে ঐক্যফ্রন্ট আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তার কারণেই ঐক্যফ্রন্ট ভারতের আশ্বাস পেতে সমর্থ হয়েছিলো বলে আমরা মনে করি। তবে মনে রাখতে হবে, বিএনপির সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার কেবল তারেক রহমানের রয়েছে। তারেক রহমানের কারণে ঐক্যফ্রন্ট যদি ভারতের চাপের মুখে পড়ে তবে বিএনপিকে দোষারোপ করাটা সমীচীন হবে না। ভারতকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব ড. কামালের। নির্বাচনের পূর্বে দলের নেতা হিসেবে তারেক রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে কোন অন্যায় করেননি। ভারতের উচিৎ বিষয়টিকে সূক্ষ্মভাবে বিবেচনা করা। আমরা তো কথা দিয়েছে, ক্ষমতায় আসলে ভারতকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে। নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে এসে ভারতের এমন চাপ সৃষ্টি সুবিধার লক্ষণ নয়। আমার ধারণা নতুন কোন সুবিধা আদায় করতেই ভারত এমন চাপ দিচ্ছে ড. কামালকে।

তারেকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলেন ৫০ এলিট প্রার্থী: হতাশ বঞ্চিতরা

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ব্যয়বহুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

দলীয় সূত্রের খবরে জানা গেছে, চার হাজারের অধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে তারেক রহমান সরাসরি মাত্র ৫০ জন প্রার্থীর স্কাইপের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নেওয়ায় দলটির অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এছাড়া যে ৫০ জন স্কাইপেতে তারেক রহমানের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন তাদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত ৫ লাখ টাকা করে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়েছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে। মাত্র পাঁচ মিনিট সরাসরি নেতার সাথে কথা বলার জন্য জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে।
বিএনপির গুলশান পার্টি অফিস সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৫০ জন এলিট প্রার্থীদের স্কাইপের মাধ্যমে সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তারেক রহমান। ১৯ ও ২০ নভেম্বর দলটির ৫০ জন সম্পদশালী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সরাসরি সাক্ষৎকার গ্রহণ করেন তারেক রহমান। যারা স্কাইপের মাধ্যমে সরাসরি তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. জাহিদ, সরদার সাখাওয়াৎ হোসেন, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির মতো একাধিক সম্পদশালী ও প্রভাবশালী নেতারা। তবে তারেক রহমানের সাথে সরাসরি কথা বলার জন্য তাদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত ৫ লাখ করে টাকা সার্ভিস চার্জ হিসেবে পরিশোধ করতে হয়েছে। বাড়তি এই ৫ লাখ টাকার সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র নেতা শামসুজ্জামান দুদু। সাক্ষাৎকারের পূর্বে দুদুকে ৫ লাখ টাকা অগ্রীম জমা দিয়ে তারপর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। তবে সেই ৫ লাখ টাকা অফেরতযোগ্য। মনোনয়ন পাওয়া বা না পাওয়ার সঙ্গে এই অর্থের কোন সংযোগ নেই বলেও ৫০ জন প্রত্যাশীদের জানিয়ে দেন দুদু।
গুঞ্জন উঠেছে, তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য এই ৫০ জন নেতা আগে থেকেই যোগাযোগ করেছেন। তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তারা লন্ডনে কোটি কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। ৫০ জনের তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার জন্য বিষয়টি প্রথম থেকেই তদারকি করেছেন দুদু। দুদুর মাধ্যমেই লন্ডনে টাকা পাঠিয়ে এই এলিট নেতারা তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে ৫০ জন পয়সাওয়ালা ও এলিট প্রার্থীদের তারেক রহমান সরাসরি সাক্ষাৎকার নেওয়ায় অন্যান্য প্রার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র টাকার অভাবে তারা তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা।
তারেক রহমানের দেখা না পাওয়া বগুড়া-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা হতাশার সুরে বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎকারের জন্য ৫ লাখ টাকা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হচ্ছে। মাত্র ৫০ জন এলিট প্রার্থী সে সুযোগ পেয়েছেন। আমরা অনেক আশায় ছিলাম যে, তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপেতে কথা বলবো। কিন্তু পাঁচ মিনিটের জন্য ৫ লাখ টাকা দেওয়াটা বিলাসিতা মনে হয়েছে আমার কাছে। এরপরও আমি কষ্ট করে টাকা ম্যানেজ করে দুদু ভাইকে অনুরোধ করেও সুযোগ পাইনি। দুদু ভাই জানিয়েছেন, তারেক স্যার নাকি ৫০ জনের চেয়ে বেশি কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। বিষয়টিতে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা কষ্ট পেয়েছেন। বিগত ১০ বছরের বেশি সময় দলের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল-জরিমানা সহ্য করে তারেক স্যারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হলো। বিষয়টি অনেক হতাশাজনক। রংপুর, দিনাজপুরের একাধিক প্রার্থীর সঙ্গেও আমি আলাপ করেছি। তারাও তারেক রহমানের এমন পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণে দু:খ পেয়েছেন। একটি ল্যাপটপ দিয়ে মাত্র পাঁচ মিনিট কথা বলার চার্জ ৫ লাখ টাকা। বিষয়টি হাস্যকর। তাহলে আমরা ধরে নিচ্ছি ৫০ জন এলিট প্রার্থীর বাইরে অন্যান্য নেতারা তারেক রহমানের কাছে জরুরি নন। সারাজীবন বিএনপি রাজনীতি করে এমন অভিজ্ঞতার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। বিএনপিকে চাঙ্গা করতে হলে তারেক রহমানের এমন একপেশে মনোভাব দূর করা উচিত বলে আমি মনে করি। আর কত রকম কাজের জন্য আমাদের মত সাধারণ নেতাদের নামে-বেনামে দলকে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে! বিষয়টি হতাশাজনক।

পেনশন সুবিধা আসছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য

নতুন বছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের মতো বেসরকারি চাকরিজীবীরাও পাবে পেনশন সুবিধা। এজন্য চালু করা হবে ‘কন্ট্রিবিউটারি পেনশন ফান্ড’। এই ফান্ডের অধীনে বেসরকারি চাকরিজীবীরা তাদের সম্মানীর একটি অংশ জমা রাখবেন। এই ফান্ডে অংশগ্রহণ করবেন বেসরকারি চাকরিজীবীদের নিয়োগকর্তারাও। এজন্য গঠন করা হবে সার্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ। যারা এই ফান্ড সংরক্ষণে সহযোগিতা করবেন। অর্থ বিভাগের অধীনে এই ফান্ড নিয়ন্ত্রণ ও  পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে এই পেনশন ব্যবস্থার একটি রুপরেখা প্রণয়নের খসড়া প্রায় শেষ করে আনা হয়েছে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই ফান্ডটিতে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা তাদের ভবিষ্যতের জন্য পেনশনের অর্থ জমা রাখবেন। এজন্যই ফান্ডটিকে ‘সার্বজনীন ফান্ড ‘ বলা হচ্ছে।  এই ফান্ডে অংশগ্রহণকারীরা একটি কোডের বিপরীতে তাদের অর্থ জমা রাখবেন। তারা চাকরি পরিবর্তন করলেও কোড নাম্বারের কোনো পরিবর্তন হবে না বলে জানা গেছে সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে। অবসর নেয়ার পর রূপরেখা অনুযায়ী এই কোডের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পেনশন পাবেন। এই ফান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য কোনো চাকরিজীবীকে বাধ্য করা হবে না। চাকরিজীবী যে কোনো ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ফান্ডে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। এই ফান্ডের টাকা সরকার বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা করবে এবং এই মুনাফার অর্থ ফান্ডে অংশ নেয়া চাকরিজীবীরাও পাবেন।
সরকারি চাকরিজীবীদের মতো বেসরকারি চাকরিজীবীরাও সমানভাবে দেশের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। কিন্তু তাদের চাকরির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাদের আর্থিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। সারা জীবন যে মানুষটি কোনো প্রতিষ্ঠানে সেবার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছে শেষ বয়সে তারা হারিয়ে ফেলেন উৎসাহ, উদ্দীপনা। অনেকে অবহেলার শিকার হন। শেষ বয়সের দিনটিতে আরও একটু নিরাপদ করার জন্য বেসরকারি চাকরিজীবীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে চাকরি পরবর্তী পেনশনের। ২০১৪ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রথম বেসরকারি খাতে পেনশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নগরায়নের কারণে একক পরিবারের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ভবিষ্যতে আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। তাই দেশের শ্রমজীবী মানুষসহ প্রবীণদের জন্য একটি সর্বজনীন ও টেকসই পেনশন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে ।
কন্ট্রিবিউটারি ফান্ডের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে পেনশনের টাকা উত্তোলনের জন্য নানা রকম হিসাব-নিকাশ ও পেনশন নেয়া নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে না। দেশের সব নাগরিক যাতে একই ধরণের নাগরিক সুবিধা পায় সেজন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আগের থেকে  অনেক কম সময়ে মানুষজন পেনশনের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। জাতীয় পেনশন পদ্ধতিতে  ধীরে ধীরে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দেশের প্রত্যেক নাগরিক এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট ুসকলে।

ঐক্যফ্রন্ট চালাচ্ছে কে? তারেক রহমান না ড. কামাল হোসেন!

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সরকার বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল নেতৃত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে মতানৈক্য। জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করে জনসমর্থন হারানো বিএনপি গণফোরাম নেতা ড. কামালের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে রাজনীতিতে ফিরেছে কোনরকম। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিপদের দিনে বিএনপির পাশে দাঁড়িয়ে ঐক্যফ্রন্ট রাজনৈতিক মহানুভবতার পরিচয় দিলেও কিছুটা সুদিন ফিরে আসার আভাস পেয়ে তারেক রহমান লন্ডনে বসে ঐক্যফ্রন্ট দখল করার চেষ্টা করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
সূত্রের খবরে জানা যায়, ড. কামাল ও বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর শত অনুরোধ উপেক্ষা করে তারেক রহমান আদালতের নিষেধ অমান্য করে ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে মাথা ঘামিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে তারেক রহমানের বাড়াবাড়িতে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যেও ফাটল ধরেছে বলে জোর আলোচনা চলছে। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মুখে মুখে রটেছে তাহলে কী লন্ডন থেকে বসে ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ন্ত্রণ করছেন তারেক রহমান! ঐক্যফ্রন্টের ড্রাইভিং সিটে কে? তারেক রহমান না ড. কামাল হোসেন! ড. কামালের এতদিনের পরিশ্রম তাহলে কী পণ্ড হতে চলেছে? এমন সব প্রশ্ন এখন রটেছে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মুখে মুখে।

নির্বাচন কমিশনকে নাজেহাল করার নীল-নকশা তৈরি করেছে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৪০ দিনেরও কম সময়। এসময়ের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর জন্য যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে, তা এখন দৃশ্যমান। কিন্তু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকার পরও বিরোধী পক্ষ নির্বাচন কমিশনকে বারবার বিব্রত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সূত্র বলছে, উপর্যুপরি চিঠি, দরখাস্ত আর মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনকে নাজেহাল করার নীল-নকশা অনুসারে পথ চলছে বিএনপি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপির এক নেতা জানান, কয়েক মাস আগেও দেশের রাজনীতির যে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো, তা এখন বদল ঘটেছে। ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তার সামনে তৈরি হয়েছে একটি মধ্যম সারির নির্বাচনী প্রতিপক্ষ। তাই বিএনপি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখার কৌশল হাতে নিয়েছে। বিএনপি চাইছে নির্বাচন কমিশনকে চাপের মধ্যে রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে।
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের আচরণ নিয়ে অভিযোগ এনে উপর্যুপরি চিঠি দেয়ার মাধ্যমে কমিশনের সদস্যদের মানসিকভাবে চাপে রাখা বিএনপির অন্যতম লক্ষ্য। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে তা বোঝানোর জন্য বারবার কমিশনকে দরখাস্ত দেয়ার অপকৌশল হাতে নিয়েছে দলটি। বলা হচ্ছে, মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে দেশের মানুষকে ধোঁকা দেয়ার নীল-নকশাও তৈরি করেছে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ঐক্যফ্রন্টের অসাধু কয়েকজন বয়োবৃদ্ধ নেতা।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, বিরোধী পক্ষের উত্থাপিত দাবি-দাওয়া মেনে না নেওয়ার কারণে বিএনপির সামনে নির্বাচন বর্জনটা ছিলো খুব স্বাভাবিক বিষয়। মাঠ পর্যায়ে অগোছালো বিএনপি এখনও ‘অংশগ্রহণ না বর্জন’— এই প্রশ্নে বিভক্ত। সেক্ষেত্রে নিজেদের বিভক্তি গোপন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে বিএনপি জনগণের সহানুভূতি নেয়ার অপচেষ্টা করছে। ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন যেখানে পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট সেখানে বিএনপি একের পর এক নাটক করে নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনকে নাজেহাল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পর অনেকটা ঘটা করেই দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও সংগ্রহ করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তবে বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিতরণকে ঘিরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে লোকসমাগম করে ইসিকে বিব্রত করার চেষ্টা করে। তারা পুলিশের উপর হামলা করে নিজেরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করার মাধ্যমে সহিংস রাজনৈতিক অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। উল্টো বিএনপি এই সংঘর্ষের ঘটনার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিব ও ডিএমপিকে শাস্তি দেয়ার জন্য চিঠি দেয়। যা দলটির নোংরা রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

Monday, November 19, 2018

বিএনপি-জামায়াত শাসনামল (সেপ্টেম্বর ২০০২): সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বী নির্যাতনের চিত্র- ১০

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নির্যাতনের চিত্র বর্ণনাতীত। যতবার তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে ততবারই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর চালিয়েছে সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা বিএনপি-জামায়াত সরকারের মদদে ‘সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের’ নিপীড়িত হবার ঘটনাগুলো আজ দশম পর্বে তুলে ধরা হলো। এ পর্বে উল্লেখ করা হলো ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য কিছু চিত্র। তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হলো সে সময়ের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহ।
৩ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: সরকার সমর্থকদের দখলাভিযান সম্পর্কে জানে না পুলিশ: উল্লাপাড়ায় মন্দিরের ৪২ বিঘা জমি দখল করে রাতারাতি বসত তৈরি
৩ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: জলঢাকায় আবারও জামায়াত ক্যাডারদের হামলা, মামলা তুলে না নিলে জবাই করে হত্যার হুমকি
১২ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক যুগান্তর: বগুড়ায় তালোড়া বাজারের হিন্দু ও মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীদের উড়ো চিঠি
১২ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে চিঠি, যশোরে ১১ সংখ্যালঘু পরিবার আতঙ্কে
১২ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: মোড়েলগঞ্জে চাঁদা দাবিতে সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা ৪ ছেলেকে বেদম মারপিট
২০ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক সংবাদ: তালায় বিএনপি সন্ত্রাসীরা একটি পরিবারের বাড়িঘর দখল করেছে
২০ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক প্রথম আলো: গৌরীপুরে ৩০টি হিন্দু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়: জায়গা দখল করে নানা উৎপাত, মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ
২১ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: কেরানীগঞ্জে পূজামণ্ডপে হামলা করে দুর্গা প্রতিমা গুঁড়িয়ে দিয়েছে উগ্রবাদীরা
২৩ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: আরো ৪ পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়, বিএনপি সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে ব্যর্থ হয়ে সংখ্যালঘু পরিবার বাড়িছাড়া
২৪ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: নাটোরে খ্রিস্টান পাড়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা ২ মহিলা লাঞ্ছিত, ভাঙচুর লুট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: চিতলমারীতে নিখোঁজ হলো আরো একটি সংখ্যালঘু পরিবার
২৭ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: নওগাঁয় আদিবাসী পল্লীতে সশস্ত্র হামলা, ১০ আদিবাসী পরিবার গ্রামছাড়া
২৮ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক আজকের কাগজ: মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নির্মাণাধীন দুর্গা মূর্তি ভাঙচুর
২৮ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: শালিখায় মণ্ডপে সন্ত্রাসী হামলা, দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর
২৮ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক ভোরের কাগজ: কচুয়ায় আবারো গণধর্ষণের শিকার হলো সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূ
২৯ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক আজকের কাগজ: গাইবান্ধায় দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর
২৯ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক প্রথম আলো: বাগেরহাটে মন্দিরে হামলা প্রতিমা ভাঙচুর
৩০ সেপ্টেম্বর ২০০২, দৈনিক জনকণ্ঠ: নেত্রকোনায় বোমা মেরে পূজামণ্ডপ উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে মৌলবাদীরা

মনোনয়ন যুদ্ধে কপাল পুড়ছে ব্যারিস্টার মওদুদের

নিউজ ডেস্ক: নোয়াখালী জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী আসন নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সঙ্গে স্থায়ী কমিটির বিতর্কিত সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। আর মহাসচিবকে ইন্ধন দিচ্ছেন স্বয়ং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

১৮ নভেম্বর বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসায় দলটির প্রভাবশালী নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একটি অংশ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষ নিলেও অন্য অংশটি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষ নিয়েছে।
বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য সূত্রে জানা যায়, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ডিগবাজি দেওয়ার রেকর্ড থাকায় দলের কেউ তাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাছাড়া তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলের স্থানীয় নেতারা তো বটেই, খোদ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নাখোশ।
অপর একটি সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমানের আস্থাভাজন বলে পরিচিত ফখরুল ইসলাম নামের একজন শিল্পপতি এবার নোয়াখালী-৫ আসনের মনোনয়নপত্র কেনেন, সেই শিল্পপতিকে দলের নেতারা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বললে, এতে তিনি সাড়া দেননি। তিনি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন কিনতে চান। এমনকি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজে শিল্পপতি ফখরুল ইসলামের ফাইলটি বাতিল করতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলেন। কিন্তু বিএনপি মহাসচিব ফাইলটি বাতিল না করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
বিএনপি মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য জানান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে কৌশলে বাদ দিতেই শিল্পপতি ফখরুল ইসলামকে সামনে আনা হয়েছে। তাছাড়া শিল্পপতিকে মনোনয়ন দিতে মোটা অংকের টাকা-পয়সা লেনদেন হয়েছে। তা এখন স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী-৫ কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট এবং নোয়াখালী সদরের একাংশ নিয়ে আসন গঠিত। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ আসন থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ওই বছরই তাকে উপপ্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে উপরাষ্ট্রপতি করেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১-এ মওদুদ আহমদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারের আমলে মওদুদ আহমদ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
তাছাড়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ এর বর্তমান সংসদ সদস্য হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে তিনি ১৯৯৬, ২০০৮-এ একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।