Saturday, October 20, 2018

ব্যারিস্টার মঈনুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে

তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম একটি টিভির টক শোতে ঐক্যফ্রন্টের মাহমুদুর রহমান মান্নার বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের অর্থনীতি অনেক ভালো মন্তব্য সঠিক আর তাই বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে টেনে উদ্ধার করতে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের মত লোকেরা এগিয়ে এসেছে।প্রশ্ন হচ্ছে, কার জন্য মঈনুল সাহেবরা এইভাবে নিজ থেকে এগিয়ে এলেন? উত্তর নিশ্চয় হবে, দেশের জনগণের স্বার্থে। যদি তাই হয়, জনগণের জন্য। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, একজন বা একাধিক মিডিয়া কর্মী কি এই জনগণের বাইরে কেউ? মঈনুল হোসেনদের যারা সমালোচনা করছে বা করবে তারা কি জনগণের বাইরে কেউ? উত্তর যদি হয় না, এরাও জনগণ তবে মঈনুলের ভাষায় বাকশালী…। তখন প্রশ্ন হচ্ছে, মোট জনসংখ্যার বৃহৎ একটা অংশ যদি মঈনুলের ভাষায় বাকশালী মতবাদের হয়, তাহলে মঈনুলের দেশ রক্ষার এগিয়ে আসার দায়িত্ব দিয়েছে কে? কেন দিয়েছে? গণমাধ্যমে বসে মিডিয়া কর্মী কিংবা সাধারণ আগ্রহীর ফোন কলের প্রশ্ন কর্তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার জন্য? তাছাড়া টিভি লাইভে যে লোকের আচরণ এত নিম্নমানের হয়, অন্দর মহলে বা অপ্রকাশ্যে তার আচরণের ধরণ কি হবে । বাংলাদেশে এক শ্রেণির লোক আছে যারা প্রসঙ্গ উঠলেই বর্তমান সরকার কে স্বৈরাচার উল্লেখকরে সরকারের আমলে দেশে বাক স্বাধীনতা নাই, কথা বলার স্বাধীনতা নাই বলে সমানতালে জিকির তোলে। অথচ বাক স্বাধীনতার সম্পূর্ণ স্পেস নৈতিক বা অনৈতিক সেটা তারাই ভোগ করে। ব্যাখ্যা চান? বিভিন্ন সভা সেমিনারের বক্তব্য কিংবা টক শো গুলোতে নজর দিন। এহেন এমন কোনো অশোভন বক্তব্য বা মত প্রকাশ বাকি রাখে না তারা, যা উপস্থাপন করে এক হাত নিচ্ছে না। স্বাভাবিক কারণেই জানতে চাইতে পারি, তারপরেও কেন তারা বাক স্বাধীনতা নাই বলে রেগুলার জিকির করে? কেন? জানি এই প্রশ্নের উত্তর নাই। কারণ যাদের উত্তর দেয়ার কথা তারা নিজেরাই জানে না, বাক স্বাধীনতার মানে কী?ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন নিজেই নিজেকে সুপার সিটিজেন মনে করলে হবে না। ঐক্য প্রক্রিয়া শুরুর সময়টা আজকের নয়, প্রায় বছর ৬ থেকে ৭ বছর হবে। ঠিক ৬-৭ বছর প্রচেষ্টার পরে এসে সামান্য ডানা মেলে উড়ার আগেই যেই ঐক্যের পালক ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়, তখন ঐক্য প্রক্রিয়ার যুক্ত বা সংযুক্ত থাকা লোকেদের চিন্তা করা উচিত, তারা ঘরে বসে নিজেদের কে যতোটা সুপার সিটিজেন মনে করছে বাস্তবে তারা কিন্তু ততটাই জিরো সিটিজেন। তাদের মেখে দেয়া দুধ ভাত যদি সবাই খেয়ে ফেলত তাহলে কিন্তু এই ঐক্য জন্ম নিতে সময় লাগার কথা ছয় সাত বছর না। কাজেই ঐক্য প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত লোকেরা কতটা সম্মানিত লোক সেটা যেন তারা ভেবে দেখে।একটি টিভি টক শোতে মঈনুল হোসেন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ২০০৫ সালে শিবিরের সম্মেলনের একটি ভিডিওতে উনাকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রাসঙ্গিক শিবির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করলে, মঈনুল হোসেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি কে চরিত্রহীন বলে ধমকের সুরে অশোভন আচরণ করে। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই আচরণ? মঈনুল সাহেব এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না, ঠিক আছে। তাহলে ২০০৫ সালে শিবিরের সম্মেলনে গিয়ে শিবিরের মঙ্গল কামনা করে বক্তব্য দিয়েছেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কি? টক শোতে মঈনুল হোসেন বারবার বলেছে ইলেকশন নিয়ে ভোট নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতে, হ্যাঁ সামান্য একজন নাগরিক হিসেবে আমি একটা প্রশ্ন রাখতেই পারি- বাংলাদেশের ভোট বা ইলেকশন নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মঈনুল কে? মঈনুল কি নির্বাচন কমিশনার? মঈনুল কি সরকারের কোন ব্যক্তি? কে উনি? কে দিয়েছে উনাকে এই দায়িত্ব যে উনি টক শোতে গিয়ে বাংলাদেশের আগামী ইলেকশন কেমন হবে কেমনে হবে এইসব নিয়ে কথা বলবেন। এইসব প্রশ্নের উত্তর কি? তাছাড়া যেই ব্যক্তি সারাক্ষণ অন্যের সমালোচনায় মুখর থাকবে, তার কোনো সমালোচনা হলে তিনি রাজনীতিবিদ কিংবা সাংবাদিককে ধমক দিবেন, নারী সাংবাদিক কে চরিত্রহীন বলবেন। এটা কেমন বাক স্বাধীনতা? এখনো ক্ষমতায় যাওয়ার খবর নেই তারপরেও এইরকম নোংরা অসভ্য অশোভন আচরণ, যদি এরা ক্ষমতায় যেতে পারে তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে?ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। আর টিভি মিডিয়ার কাছে অনুরোধ, এই ধরনের নিন্মরুচির মানুষ আপনারা বর্জন করতে শিখুন। অন্তত আগামী প্রজন্মকে ভাল কিছু শিখতে দিন।
সৌজন্যে: চ্যানেল আই অনলাইন  

No comments:

Post a Comment