Wednesday, October 31, 2018

বিএনপির দেশ কাঁপানো ১০ মিথ্যাচার

নিউজ ডেস্ক: আক্রোশের বশবর্তী হয়ে বিএনপির কারাদণ্ড প্রাপ্ত চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানান মনগড়া ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যা সময়ের পরিক্রমায় মিথ্যাচারে রূপান্তরিত হয়েছে। উল্লেখ করা হলো বিএনপি কর্তৃক প্রদত্ত দেশ কাঁপানো ১০ মিথ্যাচার।

মিথ্যাচার ১
২৮ জানুয়ারি, ১৯৯১, চট্টগ্রামের মিরেরসরাই জনসভায় বেগম খালেদা জিয়ার মনগড়া ভবিষ্যদ্বাণী: আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে সব মসজিদ ভেঙে ফেলা হবে। যেসব মসজিদ থাকবে সেগুলো থেকে উলুধ্বনি দেয়া হবে।
বাস্তবতা: আওয়ামী লীগ তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন কোন মসজিদ ভাঙেনি। বরং বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে মসজিদ ভেঙ্গেছে। উপরন্তু গত প্রায় ১০ বছরে সারা দেশে সরকারের অর্থায়নে ৬৭ হাজার ২৭৩টি নতুন মসজিদ করা হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মুসলমানদের নামাজের সুবিধার জন্য প্রতিটি মসজিদ সরকারের অনুদানের আওতায় এসেছে।
মিথ্যাচার ২
৩০ জানুয়ারি ১৯৯১, ফেনীর জনসভায় বেগম খালেদা জিয়ার মনগড়া ভবিষ্যদ্বাণী:
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ফেনী পর্যন্ত এলাকা ভারতের দখলে চলে যাবে। আপনারা আর বাংলাদেশের নাগরিক থাকবেন না, ভারতের ক্রীতদাস হয়ে যাবেন।
বাস্তবতা: ফেনী আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভারতের দখলে যায়নি। বরং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করে, ভারতের কাছে থাকা বিশাল ভূখণ্ড উদ্ধার করেছেন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।
এর অংশ হিসেবে ভারতে কাছ থেকে ১১১টি ছিটমহল ও বঙ্গোপসাগরে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
মিথ্যাচার ৩
২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১, ঢাকায় জনসভায় বেগম খালেদা জিয়ার মনগড়া ভবিষ্যদ্বাণী:
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশে আবারও দুর্ভিক্ষ হবে। লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। মানুষ খাবারের জন্য মারামারি করবে।
বাস্তবতা: রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ এবং মঙ্গা- এই তিন শব্দ উধাও হয়েছে। বরং বিএনপির আমলেই খাদ্য-ঘাটতি ছিল। সারের জন্য কৃষককে জীবন দিতে হয়েছিল।
মিথ্যাচার ৪
১৪ ডিসেম্বর ১৯৯৬, গঙ্গার পানি চুক্তির পর বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার মনগড়া বিবৃতি:
গঙ্গার পানি চুক্তি হলেও বাংলাদেশ, এক ফোঁটা পানিও পাবে না দুই বছরের মধ্যে পদ্মা নদীতে গাড়ি চলবে।
বাস্তবতা: পদ্মা এখন বহমান, খরস্রোতা। বাংলাদেশ শুষ্ক মৌসুমে ৪৪ হাজার কিউসেক পানি পাচ্ছে। উত্তরাঞ্চল খরার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে।
মিথ্যাচার ৫
২৮ জানুয়ারি, ২০০০ সাল। জাতীয় সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার:
ভারতের সাথে ২৫ বছরের চুক্তি আসলে গোলামীর চুক্তি। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। এই চুক্তি বাতিল না করলে, বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা বাতিল করবে।
বাস্তবতা: ২৫ বছরের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি কোনো গোলামীর চুক্তি নয়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি ওই চুক্তি বহাল রাখে।
মিথ্যাচার ৬
১১ জানুয়ারি ২০০৫, জাতীয় সংসদে, সংসদ নেতা এবং বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার:
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল। আমরা অপরাধীকে চিহ্নিত করেছি। মূল আসামি জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১১ জানুয়ারি ২০০৫, সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মিথ্যাচার:
গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগই জড়িত। অভিযোগ আছে, বিরোধী দলের নেতা (শেখ হাসিনা) নিজেই তার ভ্যানিটি ব্যাগে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিলেন।
বাস্তবতা: প্রতিহিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করতে তারেক জিয়ার নির্দেশে ও পরিকল্পনায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিল। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চিরতরে নিঃশেষ করার জন্যই এই নৃশংসতম ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। জজ মিয়া ছিল এক সাজানো নাটক। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল তারেকের জঙ্গিবাদী তৎপরতার অংশ।
মিথ্যাচার ৭
৩১ অক্টোবর ২০০২। সরকারের প্রথম বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দেয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার:
আমরা সারা দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধায় আনার উদ্যোগ নিয়েছি। ২০০৬ সালের মধ্যে দেশে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
বাস্তবতা: আওয়ামী লীগ শাসনামলে রেখে যাওয়া ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্টো কমতে থাকে। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা ছাড়ার সময় দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ২৭৫০ মেগাওয়াট। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। বিদ্যুৎ খাতের ৮০ ভাগ টাকা খাম্বা কেনার পিছনে ব্যয় করে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। আর এসব খাম্বা কেনা হয় ‘খাম্বা লিমিটেড’ থেকে। যার মালিক ছিলেন তারেকের ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস উদ্দিন আল মামুন।
মিথ্যাচার ৮
২৬ মার্চ ২০০২, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রদত্ত বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার:
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল, স্বাধীনতার দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের প্রধান আদর্শ।
বাস্তবতা: বিএনপি হলো স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছিলেন। জিয়াই প্রধান যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে দেশে এনেছিলেন। রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। আর তার পত্নী বেগম খালেদা জিয়া খুনি, ধর্ষক দুই যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রিত্ব উপহার দিয়েছিল, যাদের গাড়িতে আমাদের পবিত্র জাতীয় পতাকা শোভিত হয়েছিল।
মিথ্যাচার ৯
২৮ অক্টোবর ২০০১, জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বেতার ও টেলিভিশনের ভাষণে বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার:
বিএনপি হলো সৎ এবং দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির প্রতীক। আমরা ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতিকে চিরতরে নির্মূল করবো। স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করবো।
বাস্তবতা: বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ পরপর তিন বার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। তারেক জিয়ার নেতৃত্বে হাওয়া ভবন হয়ে উঠে দুর্নীতির প্রতীক। প্রতিটি সরকারি কেনাকাটা এবং নিয়োগে কমিশন বাণিজ্য হয়ে ওঠে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। ৫ বছরে তারেক জিয়া সারা বিশ্বে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বলেছে। বেগম জিয়া নিজে এতিমের টাকা চুরির দায়ে এখন সাজা ভোগ করছেন। বিএনপির পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।
মিথ্যাচার ১০
১১ অক্টোবর ২০০৯ সালে বগুড়ায় বেগম জিয়ার বক্তৃতায় মিথ্যাচার:
পদ্মা সেতু ফাঁকা আওয়াজ। কোনদিন এই সেতু হবে না।
২৯ জানুয়ারি ২০১৭, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেস ব্রিফিংয়ে মিথ্যাচার:
পদ্মা সেতুর নক্সার মধ্যে গন্ডগোল আছে। এজন্য কোন স্প্যান বসানো যাবে না। পদ্মা সেতু আসলে একটা ভাঁওতামি।
বাস্তবতা: পদ্মা সেতু আজ বাস্তব। বিদেশি অর্থায়নে নয়, নিজের টাকায় বাংলাদেশ পদ্মা সেতু করছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা এবং দূরদৃষ্টি ও নেতৃত্বে পদ্মা সেতু এখন আমাদেরসম্মান ও মর্যাদার প্রতীক।

No comments:

Post a Comment