Friday, October 5, 2018

তারেকের অভিশংসনে বিএনপিতে স্বস্তি, জমির উদ্দিনকে নিয়ে সংশয়

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত বিভিন্ন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান তার দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। দলের ভঙ্গুর অবস্থায় বিএনপি হাল ধরতে বয়স ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তারেক রহমান সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে প্রাথমিকভাবে যোগ্য বলে মনস্থির করেছেন। এতে একদিকে যেমন তারেকপন্থী নেতারা শঙ্কায় রয়েছেন অন্যদিকে নির্ভার হতে পারেছেন না দলের অন্যপক্ষও। দলের অভ্যন্তরে এ নিয়ে চলছে চাপা চাঞ্চল্য।

সূত্র বলছে, দুর্নীতির দণ্ড মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ লন্ডনে পলাতক জীবন যাপন করছেন তারেক রহমান। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে জেল হাজতে আছেন। দলীয় নেতৃত্বে সমন্বয়হীনতা, দলীয় কোন্দলে জর্জরিত বিএনপি তাই দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন নেতৃত্বের মাধ্যমে চলছে। লন্ডন থেকে দল চালানোর প্রাথমিক চেষ্টায় দল আরও নেতিয়ে পড়লে এবং আগামী ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে নিজের সম্ভাব্য সাজার বিষয়টি মাথায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এছাড়া দুর্নীতি, সীমাহীন লুটপাট, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে সরাসরি মদদ দেওয়ার জন্য তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখছে না বিএনপির ডোনারখ্যাত কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্র। ফলে বিএনপিকে আন্তর্জাতিক আস্থার জায়াগায় পৌঁছাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বলে দলীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে বিএনপির সহযোগি কিছু দূতাবাসের নির্দেশেনা ছিল তারেককে পাল্টিয়ে সিনিয়র কোন নেতাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বানানো হোক। দূতাবাসগুলোর প্রস্তাব ছিল খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বানানোর। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতাদের মতপার্থক্য ও দুর্নীতির অতীত চিত্র বিবেচনা করে খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে বাদ দিয়ে তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে দলীয় প্রধান বানানোর সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা ফখরুল, রিজভী আহমেদসহ একাধিক সিনিয়র নেতা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, তারেকের এমন সিদ্ধান্তে দলের অনেক সিনিয়র নেতাই জমির উদ্দিনকে মানতে পারছে না। নিজেকে ওই পদে যোগ্য মনে করছেন। আবার তারেক রহমানের জন্য দলের অভ্যন্তরে একটি পক্ষ ব্যাপকভাবে সুবিধা পেতো। চেয়ারপারসন বদলের সিদ্ধান্তে ওই পক্ষ কিছুটা মূল্যহীন হওয়ার আশঙ্কায় আছে। অন্যদিকে অন্য আরেকটি পক্ষ ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে নিজেদের পক্ষের একজন বানাতে সফল হবে কিনা তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। পক্ষ-বিপক্ষের বাইরে না যেতে পারলে বিএনপিকে বাঁচানো মুশকিল হবে। সংখ্যালঘু কিছু নেতা আছেন যারা বিএনপির ভালো চায়, কিন্তু পক্ষ-বিপক্ষের হিসেবে পড়ে তারা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তবে তারেক রহমানের সরে দাঁড়ানো বিএনপি জন্য বিশেষ কিছু বয়ে আনবে বলেই বিশ্বাস সকলের।

No comments:

Post a Comment