তারেক রহমান। বাংলাদেশের ইতিহাসে যাকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বরপুত্র বা
রাজপুত্র বলা হয়। আর সেই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের রাজপ্রাসাদ হচ্ছে তারেকের
নিয়ন্ত্রণাধীন হাওয়া ভবন। তারেকের সকল অপকর্মের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে
হাওয়া ভবন. আসুন জেনে নেই তারেকের অসংখ্য অপকর্মের তথ্য।
১) ২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট
আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়।
ওই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তি থেকে
তারেকের জড়িত থাকার প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে। মুফতি হান্নান জানায় তারেকের
নির্দেশেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। বিএনপি সরকারের শিক্ষা
উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসা থেকে নেওয়া ১৫টি গ্রেনেড দিয়ে ওই দিন
শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের জনসভায় হামলা চালানো হয়।
ওই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে হাওয়া ভবনে
একাধিকবার বৈঠক হয়।
২) দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা: ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট
জঙ্গি সংগঠন জেএমবি সারাদেশে একযোগে ৬৩ জেলার ৪৩৪ স্থানে বোমার বিম্ফোরণ
ঘটায়। ওইদিনের ঘটনায় দু’জন নিহত এবং অর্ধশত আহত হন। পরবর্তী সময়ে জেএমবির
আরো কয়েকটি বোমা হামলায় বিচারক ও আইনজীবীসহ ৩০ জন নিহত হয়। জেএমবির এসব
হামলা মূলত তারেক ও বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদেই হয়েছিল।
৩) দশ ট্রাক অস্ত্রের চালান: সময়টা ২০০৪ সালের ১
এপ্রিল। চাঞ্চল্যকর ভাবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দশ ট্রাক অস্ত্রের চালান।
তারেকের নির্দেশ ও পরিকল্পনায় এবং লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রত্যক্ষ সহায়তায়
এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফার জন্য আনা
হয়েছিল।
৪) বসুন্ধরা গ্রূপের প্রোকৌশলী সাব্বির হত্যা: তারেকের
পরোক্ষ মদদে ২০০৬ সালের ৪ জুলাই বসুন্ধরা গ্রুপের প্রকৌশলী সাব্বির খুন
করা হয়। পরবর্তীতে সাব্বির হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামীদের বাঁচাতে এবং এই
হত্যা মামলা ধামাচাপা দিতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছিলো তারেক ও তৎকালীন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর।
৫) বিদ্যুৎ খাতে তারেকের দুর্নীতি: শুধু বিদ্যুৎ
সেক্টর থেকেই তারেক বিশ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছিল। বিদ্যুতের নতুন
সঞ্চালন লাইন স্থাপনের ইস্যু বানিয়ে, শুধুমাত্র বিদ্যুতের খাম্বা পুঁতে এই
টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমান। এই দুর্নীতির
পরিপ্রেক্ষিতে তারেককে ‘খাম্বা তারেক’ হিসেবে ব্যঙ্গ করে থাকেন অনেকে।
৬) ঘুষের টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার: টঙ্গীর বিসিক শিল্প
এলাকায় একটি ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করে
‘নির্মাণ কনস্ট্রাকশন’ কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমান ও গিয়াসউদ্দিন আল
মামুন ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ২০ কোটি ৪১ লাখ
২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা টাকা নিয়ে তা সিঙ্গাপুরে পাচার করেন।
৭) সৌদিতে অর্থ পাচার: সৌদি আরবে তারেক জিয়া ১২০০ কোটি
টাকারও বেশি অর্থ পাচার করেছে। এই অর্থ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ জঙ্গী ও
মৌলবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবহৃত হতো।
৮) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি: এতিমদের সহায়তা
করার উদ্দেশ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এর নামে বিদেশ থেকে থেকে আসা ২ কোটি
১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাত করেছিলেন তারেক ও তার মা খালেদা।
৯)নাইকো দুর্নীতি: কানাডার কোম্পানী নাইকোকে
অনৈতিকভাবে সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন তারেক।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয়
কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭
কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিলো।
১০) দুবাই, মালয়েশিয়া ও বেলজিয়ামে অর্থ পাঁচার:
বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার এবং দুবাইতে কয়েক
মিলিয়ন ডলার অর্থ পাঁচার করে সেখানে বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছিলেন তারেক। বাড়ির
ঠিকানা :স্প্রিং ১৪, ভিলা :১২, এমিরেটস হিলস, দুবাই।
জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর টেলিভিশনে ভাঙা স্যুটকেস ও ছেঁড়া গেঞ্জি
দেখানো হয়। তাকে সততার মূর্ত প্রতীক বানানো হলো। কয়েক বছরের মধ্যেই দেখা
গেল, জিয়া পরিবার হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। লঞ্চ, টেক্সটাইল
মিলস, বিদেশে বাড়ি, ব্যাংক-ব্যালান্স- এগুলো হঠাৎ কোথা থেকে এলো? সততার
মুখোশ পরিয়ে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে সহানুভূতি আদায় করা হয়। হঠাৎ
করে এত টাকার মালিক হলো কীভাবে? পুরো জিয়া পরিবার, অর্থাৎ খালেদা জিয়া,
তারেক, কোকো সবাই শুধু অসৎ নয়, তারা চরম দুর্নীতিবাজ, জিঘাংসাপরায়ণ,
ক্ষমতালোভী। আদালতে খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলের দুর্নীতির প্রমাণ হয়েছে
এবং সাজা হয়েছে। তারা শুধু দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার মালিক হয়েই ক্ষান্ত
হয়নি, সেই টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
No comments:
Post a Comment