Thursday, June 27, 2019

প্রাথমিকে সংস্কৃতি ও শরীরচর্চায় শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংস্কৃতি ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (ডিপিই) আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০১৯ ও আন্তঃপিটিআই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০১৮ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।
তিনি জানান, ঢেলে সাজানো হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাকে। এ জন্য নানা ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে সেসব নিয়ে। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সঙ্গীতের ওপর শিশু শিক্ষার্থীদের পারদর্শী করতে সংস্কৃতি ও শরীরচর্চা বিষয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, আধুনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে আজকের শিশুদের। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এর জন্য। সরকারের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের পুষ্টিকর খাবার দিয়ে পুষ্টিহীনতা দূর করতে হবে। এ জন্য আমরা স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু করেছি।

খুলনা শিশু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর ১৫ কোটি টাকার অনুদান

চিকিৎসা সেবা ও মান উন্নত করার লক্ষ্যে খুলনা শিশু হাসপাতালকে ১৫ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারি বাসভবন গণভবনে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের হাতে এ চেক হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ  ফান্ড থেকে এ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। একই অনুষ্ঠানে প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগে আক্রান্ত সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের স্ত্রী, সড়ক দুর্ঘটনা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা পুলিশ কনস্টেবল সজীব আলীর বাবা ও স্ত্রী এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিএনপি কর্মীদের গুলিতে নিহত সাতক্ষীরার নওয়াপাড়া পৌরসভার নির্বাচিত কমিশনার আতিয়ার রহমানের স্ত্রীর হাতেও আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান খান কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ জুয়েল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পোশাক রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে

পোশাক রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান বলেছেন, গুণগত মান বাড়ায় সারাবিশ্বে এখন বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।
সোমবার রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় শারমিন গ্রুপের 'শারিমন অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেড' কারখানা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, পোশাক খাত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করবে। বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার, তাই সকল গার্মেন্টস শ্রমিকদের সরকার বেতন বাড়িয়েছে। এখন শ্রমিকরা অনেক শান্তিতে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা অত্যন্ত দক্ষ ও পরিশ্রমী। তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়ায় তারা কাজের মানও ভালো করছে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী গার্মেন্টসটির বিভিন্ন ফ্লোর ও তৈরি পোশাকের মান পরিদর্শন ও শ্রমিকদের সাথে খোলামেলা কথা বলে তাদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
তিনি আরও বলেন, মালিক-শ্রমিকের মধ্যে আন্তরিকতা থাকলে উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি বিদেশি ক্রেতারাও ওইসব কারখানার প্রতি আকৃষ্ট হন।

আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস আজঃ হার মানেনি বাংলাদেশ

মোঃ মনির হোসেন। বয়স ৩৪ বছর। ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জনক মনির থাকেন ঢাকা’র মোহাম্মদপুরে। স্ত্রী ও মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে বেশ ভালোই কাটছিলো তাঁর দিনগুলো। বেসরকারী চাকুরিজীবী মনির হোসেনের সংসারে কিছুটা টানাপোড়েন ছিল বটে, তবে ভালোবাসার কমতি ছিল না। 
কিন্তু বছর তিনেক আগে আচমকাই পাল্টে যেতে থাকে পরিস্থিতি। মনিরের আচরণ-জীবনধারায় আসে বড় রকমের পরিবর্তন। অস্বাভাবিক রকমের উগ্রতা, বাসায় সময় দিতে না চাওয়া, নতুন বন্ধুদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া- এমন বেশকিছু উপসর্গ দেখা দেয়। চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট হতে থাকে, শারীরিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে প্রতিনিয়ত। 
উপায়ন্তর খুঁজে পাচ্ছিলেন না মনিরের স্ত্রী আফসানা বেগম। ‘বদলে যাওয়া মনির হোসেন’কে তার বড্ড অচেনা লাগছিলো। খোঁজখবর নিয়ে আফসানা জানতে পারলেন, মনির ইয়াবায় আসক্ত হয়েছেন সম্প্রতি। 
আফসানা দ্রুত যোগাযোগ করলেন তেজগাঁস্থ সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। সেখানে ভর্তি করা হলো মনিরকে। তিন মাসের চিকিৎসা ও সুষ্ঠু নির্দেশনায় মনির হোসেন এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সংসারেও ফিরে এসেছে সেই চিরাচরিত ভালোবাসা। 
এরকম অসংখ্য গল্প ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশের আনাচেকানাচে। নিছক কৌতুহল কিংবা পারিবারিক হতাশা থেকে অনেকেই জড়াচ্ছেন মাদকে। বিশেষত কিশোর- যুবকদের মধ্যে এর হার বেশি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে দেরি করেনি। ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই সময়োপযোগী স্লোগানে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে দেশব্যাপী। খোদ প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। 
জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সফল বাংলাদেশে পরিচালিত হচ্ছে মাদকবিরোধী অভিযান। এই অভিযানে এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৫৮৬ জন। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণে মাদকদ্রব্য। অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ৩৭৮ জন মাদক কারবারি। 
এছাড়াও সরকার মাদক চোরাচালানের রুটগুলোকে কেন্দ্র করে নিয়েছে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা। মাদক সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতেও পর্যাপ্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। 
মাদক নির্মূলে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হয়ে থাকে সরকারের তরফ থেকে। পাশাপাশি মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য সারাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ৭টি নিরাময় কেন্দ্র। এছাড়াও সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় সারাদেশে পরিচালিত হচ্ছে প্রায় ২৫০ এর অধিক মাদক নিরাময় কেন্দ্র। 
সরকারের সফল তৎপরতার মধ্যেই আজ দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস। ‘নেশা নয়, স্বাস্থ্যই হোক জীবনের নতুন প্রত্যাশা’- এই প্রত্যয় নিয়ে আজ ২৬ জুন বাংলাদেশসসহ সারাবিশ্বে পালিত হবে দিবসটি। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচী।

শিক্ষার সব কাজে সেবা নিশ্চিত করতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের বিকল্প নেই। ‘মানসম্মত শিক্ষা আমাদের অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে সোমবার (২৪জুন) থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে জাতীয় শিক্ষা সেবা সপ্তাহ-২০১৯। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর ও তার অধীন সকল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সেবা সপ্তাহ উদ্যাপন করা হবে। শিক্ষা সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। বলেছেন, শিক্ষার সব কাজে সেবা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু শিক্ষা সপ্তাহে সেবা দেয়া হবে; অন্য সময়ে সেবার নামে হয়রানির শিকার হয়ে ফিরে যেতে হবে, তা হবে না।

সোমবার সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) শিক্ষা সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষা সপ্তাহ চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। সপ্তাহব্যাপী শিক্ষা অধিদফতরের সকল কার্যালয় থেকে জনসাধারণ ও সেবা প্রত্যাশীদের বিশেষ সেবা প্রদান করা হবে। সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে সকালে একটি আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে শিক্ষা অধিদফতর। র্যালি শেষে ছিল আলোচনা সভা। এ ছাড়া শিক্ষা সেবা সপ্তাহের বিশেষ নীল গেঞ্জি ও হলুদ টুপি পরে অফিস করেছেন শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষা সেবা সপ্তাহ উদ্যাপনের নির্দেশ দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক ও উপপরিচালকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা সেবা সপ্তাহের সব উপকরণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। সেবা সপ্তাহ উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোঃ আমির হোসেন স্বাক্ষরিত আদেশে শিক্ষা সেবা সপ্তাহ বিষয়ে সকলকে অবহিত করতে এবং সপ্তাহব্যাপী বিশেষ সেবা প্রদান করতে বলা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক ও উপপরিচালক এবং সব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে।

শিক্ষা সেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোঃ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে আরও ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন ও কারিগরি, মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুন্সী শাহাবুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।

সোহরাব হোসাইন বলেন, সেবা সপ্তাহে যে সেবা আপনারা প্রদান করবেন তা সারা বছর ও সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। সেবাসমূহ সঠিক সময়ে দিতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। কোন চিঠি প্রাপ্তির পর কতদিন পর তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কোন নথি নিজের টেবিলে অনিষ্পন্ন রেখে বাসায় যাওয়া যাবে না।

মুন্সি শাহাবুদ্দীন বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য তিনটি। এক, শিক্ষার্থীদের জীবনে স্বপ্ন দেখতে শিখাতে হবে, দুই, স্বপ্ন বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে, তিন, সৎ জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

Tuesday, June 25, 2019

একনেকে ১১ প্রকল্পে ৮ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন

দেশের বিমানবন্দরগুলোতে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য সব বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে পৃথিবীর অনেক দেশে ডগ স্কোয়াড ইউনিট আছে। অধিকতর নিরাপত্তার জন্য ডগ স্কোয়াড ইউনিট প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
এ দিন শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৮ হাজার ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১১ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে সরকারী অর্থ (জিওবি) প্রায় ৩ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৫১ কোটি টাকা ও প্রকল্প ঋণ ৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। একনেক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। পৃথিবীর অনেক দেশের বিমানবন্দরেই ডগ স্কোয়াড আছে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার জন্যেও ডগ স্কোয়াড গঠন করতে হবে। সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক ও ছয়টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। দেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোর ব্যস্ততাও দিন দিন বাড়ছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এসব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভেইল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থা উড়োজাহাজ পরিচালনা ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজে বাংলাদেশে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলোর বেশিরভাগই পুরনো, অনেক সময় এসব ঠিকঠাক কাজ করে না। গৃহীত প্রকল্পের আওতায় এ কাজের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি কেনা হবে। 
‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ অর্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। একনেক সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান।
বেশ কয়েকটি প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর অন্যন্য নির্দেশনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন জানান, হাইওয়ে সড়ক নির্মাণের সময় চালকদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে পুনরায় তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার নির্দেশ হলো, সারাদেশের হাইওয়েগুলোতে এমন একটি মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে, যাতে চালক-যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট দূরুত্ব অন্তর সার্ভিস সেন্টার থাকবে। এতে চালকদের জন্য গোসল, ঘুম, চালক পরিবর্তন ও যানবাহনের বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি সারানোর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, সব বিশ্রামাগারেই পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা, বিনোদনের জন্য টেলিভিশন, বাথরুম, চা-কফিসহ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। এতে, চালকদের ভ্রমণজনিত ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হবে। ফলে, বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা কমবে ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
এছাড়া শুধু পৌরসভা এলাকায় নয়, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য কত টাকা প্রয়োজন তারও হিসাব-নিকাশের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্যসীমা থেকে কোন কোন জেলা বের হয়ে আসতে পাড়লো- তার একটা ডাটাবেজ তৈরির বিষয়েও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সোলার বিদ্যুত ব্যবহার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবহার উপযোগী প্রকল্পে সোলার বিদ্যুত ব্যবহার করতে হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, নেত্রকোনা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর খরচ ধরা হয়েছে ৭১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশের ৩০ পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৫২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালনেরেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রাণিসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যেও মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা। রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৯৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এদিকে, চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (আরএডিপি) বাস্তবায়ন হার গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসে বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৯৭ শতাংশে। এ সময় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো খরচ করেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৬২ দশমিক ৮১ শতাংশ। ওই সময় খরচ হয়েছিল ৯৮ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার হচ্ছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার একনেক বৈঠক শেষে চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত সংশোধিত এডিপির তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

Wednesday, June 19, 2019

পাবলিক পরীক্ষার জিপিএ নতুন নিয়মে? জেনে নিন বিস্তারিত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে ঘুরেফিরে এসেছে পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ পরিবর্তনের বিষয়টি। অনেকেই এর পক্ষে বিপক্ষে জানিয়েছেন মতামত। তবে এই বিষয়ে সরাসরি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কোন মন্তব্য না পাওয়ায় বিষয়টিকে ঘিরে রয়ে গেছে অনেকটাই ধোঁয়াশা। পাবলিক পরীক্ষার জিপিএ কি আসছে কোন নতুন নিয়মে? বাংলার আলোর আজকের আয়োজনে জেনে নিন বিস্তারিত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানা যায়, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ) পদ্ধতিতেই ফল প্রকাশিত হবে। তবে ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫–এর পরিবর্তে ৪ হবে। আর কত নম্বরের মধ্যে কত জিপিএ হবে, তার স্তর বা শ্রেণিসংখ্যা বাড়বে। যেমন এখন ৮০ থেকে ১০০ নম্বর পেলে জিপিএ-৫ ধরা হয়। এই স্তর ভেঙে দুই বা তারও বেশি করার পরিকল্পনা হচ্ছে।
গ্রেডের স্তর নির্ণয়ে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। প্রস্তাবগুলো শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। তবে আগামী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা থেকে নতুন এই পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা চলছে। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানে পড়াশোনার ওপর প্রভাব পড়বে না। শুধু ফলাফল তৈরি হবে নতুন পদ্ধতিতে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং বিদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতেই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক।
২০০১ সালে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে সনাতন পদ্ধতিতে নম্বর দেওয়ার পরিবর্তে গ্রেড পদ্ধতি চালু করা হয়। ২০০৩ সালে সর্বোচ্চ ৫ সূচকের (পয়েন্ট বা স্কেল) ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করা হয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে পরীক্ষার ফল সর্বোচ্চ ৪ সূচক (সিজিপিএ) ধরে করা হয়। তবে পাবলিক পরীক্ষায় কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (সিজিপিএ) পদ্ধতিতে ফল তৈরির সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কয়েকটি বছরের ফল যোগ করে সিজিপিএ পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় একটি পরীক্ষার ভিত্তিতে ফল তৈরি হয়। তাই এখানে জিপিএ পদ্ধতিতেই ফল তৈরি করা হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সূচক ৪ ধরে বিদ্যমান গ্রেডের সাতটি স্তরের পরিবর্তে ১৩টি করার একটি প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে আরও দুটি প্রস্তাব রয়েছে।
বর্তমানে গড়ে ৮০ থেকে ১০০–এর মধ্যে নম্বর পেলে সেটিকে জিপিএ-৫ বলা হয়। যাকে লেটার গ্রেডে বলা হয় ‘এ’ প্লাস। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেডের বিদ্যমান স্তরে পার্থক্যটা বেশি। এখানে কেউ গড়ে ৮০ নম্বর পেলেও সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫, আবার কেউ গড়ে ৯৯ নম্বর পেলেও একই ফল। অন্যদিকে ৭৯ পেলেও মাত্র ১ নম্বরের জন্য জিপিএ-৫ হয় না। এ জন্য বিদ্যমান স্তরকে আরও বেশি করাসহ তিনটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।

দিনাজপুরে পাওয়া গেল লৌহ খনির সন্ধান

ধীরে ধীরে খনিজ সম্পদের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তেল ক্ষেত্র, গ্যাস ক্ষেত্র ও সর্বশেষ হদিস পাওয়া গেলো লৌহ খনির ক্ষেত্র। এতে করে বিশ্বের খনিজ সম্পদশালী দেশের দিক দিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে দীর্ঘ ২ মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর মঙ্গলবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (জিএসবির) কর্মকর্তারা। তারা জানান, সেখানে ভূগর্ভের ১ হাজার ৭৫০ ফুট নীচে ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার একটি স্তরটি পাওয়া গেছে। যা দেশের জন্য একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং বাংলাদেশে প্রথম সন্ধান।
খননকাজে নিয়োজিত জিএসবির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম  জানান, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেসব খনির লোহার মান ৫০ শতাংশের নীচে। আর বাংলাদেশের লোহার ৬৫ শতাংশের উপরে। জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইসবপুরে লোহার খনির সন্ধান বাংলাদেশে এটিই প্রথম। যার ব্যপ্তি রয়েছে ৬-১০ স্কয়ার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে কপার, নিকেল ও ক্রুমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে। ১১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও মিলে।
তিনি আরও জানান, এর আগে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর ২০১৩ সালে এই গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কুপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্র ধরে দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর ১৩৮০-১৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে আশার আলো দেখতে পাওয়া যায়। এই খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবির মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন। এসময় মহাপরিচালক সাংবাদিকদের সুখবর না দিলেও লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে ১৭৫০ ফুট গভীরতা খনন করে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের এই স্তরটি পাওয়া গেছে। এই অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সেই কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদী শীলার ভিতরে লোহার আকরিকের এই সন্ধান পাওয়া যায়।
উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। এই গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলীর কাছ থেকে ৫০ শতক জমি ৪ মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানে কূপ খনন শুরু করে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।

জিএসবির উপ-পরিচালক, (ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ার) মো. মাসুদ রানা জানান, গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল ৩ শিফটে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ইসবপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, আমরা জানতে পারলাম এখানে লোহার খনি পাওয়া গেছে। এখান থেকে লোহা উত্তোলন করা হলে এখানকার মানুষদের জীবনমান পাল্টে যাবে। কর্মসংস্থান হবে এখানকার মানুষদের। দেশের জন্যও লাভজনক হবে। এমনই আশায় বুক বাঁধছেন এখানকার সর্বস্তরের মানুষ।

Tuesday, June 18, 2019

Assurance of India’s cooperation to resolve Rohingya Crisis

On Friday, a bilateral meeting which was held in Dushanbe, Tajikistan, where India's new Foreign Minister D S Jayashankar has assured cooperation on Teesta agreement and Rohingya crisis on Bangladesh border. He agreed on the fact that the way Myanmar government and its’ army has executed torture on the Rohingya people is a hostility. It needs to be stopped, he said.  He also mentioned that India is keen to cooperate on the issue of Teesta agreement.
Bangladesh Foreign Minister Dr. Abdul Momen grabbed the attention of the Indian Foreign Minister on seeking the active support and cooperation of India for resolving the Rohingya issue, in the meeting, concluding the much-anticipated Teesta agreement.
While in the meantime, D S Jayashankar assures the necessary cooperation that is reqiured to figure out the problem of Rohingya issue, Teesta agreement and stop deaths at border. He denoted that Narendra Modi's government has shown sensitivity to the development of India's goodwill and relations with neighboring countries.
Bangladesh Foreign Minister Momen stated, "Prime Minister Sheikh Hasina and Indian Prime Minister Narendra Modi has developed bilateral relations to an unprecedented height by resolving long pending unresolved and sensitive issues between their countries through their political wisdom, foresight, mature and commendable leadership, a precedent for other countries of the world.
At this time, he expressed his gratitude to  Prime Minister Sheikh Hasina on behalf of Indian Prime Minister Narendra Modi and Indian Foreign Minister D S Jayashankar for the immense victory in the recent Lok Sabha elections of India.
Dr. Momen urges India to participate in celebrating the 100th birth anniversary of Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman in 2020, as well as the celebration 50 years of Bangladesh. D S Jayashankar expressed his desire of visiting Bangladesh.
AddThis Sharing Buttons
Share to LinkedInShare to More

জনগণ ও ভারসাম্যের বাজেট ২০১৯-২০

একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি দেশের ৪৮তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট।
এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে আগামী বাজেট ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ বড়। আগামী ৩০ জুন এই বাজেট পাস হবে।
দেশের মানুষের জন্যই সরকার। আবার সরকারের ক্ষমতার উৎসও এদেশেরই মানুষ।এর আগে দশকজুড়ে বাজেট পেশের অনন্য রেকর্ড গড়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে অভিজ্ঞ ও বিগত দশক থেকে শিক্ষা গ্রহণকারী এই সরকারের নতুন বাজেট যে ভারসাম্যপূর্ণ হবে, সেটি অনুমান করা গিয়েছিল আগেই। বাস্তবেও তাই ঘটেছে। যথারীতি আশাজাগানো এই বাজেটে রয়েছে উচ্চাভিলাষও। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করলে বলতেই হবে সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্নের সংকেত আছে এই বাজেটে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশকিছু
 ইতিবাচক পদক্ষেপের প্রস্তাবনা লক্ষণীয়।
তবে স্তরে স্তরে সূক্ষ্মদৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করলে এ কথা বলতেই হবে যে, দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে সচল রাখার তাগিদে এমন আকারের বাজেট প্রস্তাবনা বিচক্ষণতারই পরিচায়ক।
বাংলাদেশ বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর একটি। আমাদের জাতীয় আয় বাড়ছে, বাড়ছে অর্থনীতির আকারও। বাজেট হচ্ছে কোন সরকারের উন্নয়ন কৌশলের বাস্তবায়নের ভিত্তি। এই বাজেটকে এবারও আমরা ‘করবান্ধব’ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। করের আওতা বাড়ানোর বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একই সঙ্গে এটি যে কল্যাণকামী ও সমৃদ্ধির সোপানে অগ্রযাত্রার লক্ষ্যে প্রণীত বাজেট- তাতেও কোন সংশয় নেই। পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার এই বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় হচ্ছে দুই লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। আর অনুন্নয়ন ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা উন্নয়ন খাতে এবার স্মরণকালের সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটিকে ইতিবাচকভাবে না দেখার কোন কারণ নেই।
বিগত বছরের মতোই আগামী অর্থবছরের বাজেটে একটি লক্ষযোগ্য দিক হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১৪টি বিভিন্ন ভাতার হার বৃদ্ধি। একই সঙ্গে বাড়ছে সুবিধাভোগীর সংখ্যাও। দারিদ্র্য হ্রাসকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সর্বাধিক। এবার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।

কর্মহীন তথা বেকারদের জন্য সুখবর আছে বাজেটে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করে বেকারত্বের অবসান ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা একটি চমক। করমুক্ত আয়ের সীমা আছে আগের মতোই।
বাজেটের আকার বড় হলেও এই বাজেট বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সজাগ দৃষ্টি সর্বদা বিদ্যমান।  এই বাজেটে যেমন ধনীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে, সেইভাবে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীকেও আশার আলোর প্রতিফলিন দেখানো হয়েছে। এই বাজেট যে জনগণের বাজেট তা বলার আশা রাখে না।

ছাত্রদলের `ছোটভাইদের` কোন্দলে মানবেতর দিন পার করছেন রিজভী

রাজনীতিবিদ রুহুল কবির রিজভী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনিই বিএনপির একমাত্র নেতা যিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নিজের বাসা ছেড়ে রাজধানীর নয়া পল্টনে অবস্থিত বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টানা একবছর ধরে অবস্থান করছেন। এখানে থেকেই মাঝে মধ্যে দলের কয়েকজনকে নিয়ে ঝটিকা মিছিলে বের হয়ে আবার ফিরে আসতেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সম্প্রতি বয়সসীমা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক কমিটির দাবি নিয়ে দফায় দফায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা এবং কার্যালয় ফটকে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিতে রিজভী। নিজে যেতে পারছেন না কোথাও এবং তার কাছে আসতেও পারছে না কেউ। আহত হয়েছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের হাতে। ছোট একটি রুমে  কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অবস্থা এমন যে, তাকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আসা ডাক্তাররাও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। একজন ডাক্তার নিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল আসতে চাইলেও তাকে গাড়ি থেকেই নামতে দেয়নি ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখায় ভেতরে খুবই অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। তীব্র গরমে দিনানিপাত করছেন রিজভী।
নয়া পল্টনের কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় দফতরের একটি ছোট কক্ষে বিছানায় শুয়েই দিন কাটছে রিজভীর। এক পর্যায়ে কয়েকজন ছাত্রদল নেতার সহযোগিতায় বিএনপি কার্যালয়ে একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রবেশ করতে দিলে রিজভীকে স্যালাইন দেয়া হয়। অবরুদ্ধ অবস্থায় রিজভী জানান, 'আমার কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে। আমি অসুস্থ। মুখে খেতে পারছি না। বমি হচ্ছে। এখন স্যালাইনে সবকিছু হচ্ছে'। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, 'বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আমাকে দেখতে আসতে পারছেন না। আমি খুব কষ্টে আছি। কারণ আমার ছোট ভাইদের কারণে অফিসে তারা (ডাক্তাররা) ঢুকতে পারছেন না। এখানে থেকে টেলিফোনে ডাক্তারের সাথে কথা বলে সবকিছু করা হচ্ছে'। আক্ষেপের সুরে রিজভী বলেন, 'এটা সবচাইতে কষ্টের যে আমার দলের ছেলেদের কাছে আজ আমি বন্ধি'।
গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে দ্বিতীয় দফায় রুহুল কবির রিজভী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। এখানে তিনি দুই বেলা খাবার রান্না করে খান। রাতে ঘুমও সেই একেবারে ছোট একটি কক্ষে। ঈদও করেছেন রিজভী এই অফিসেই। তার স্ত্রী আনজুমান আরা লাইলি ঈদের দিন খাবার রান্না করে স্বামীর জন্য নিয়ে আসেন।
কেনো দলীয় কার্যালয়ে তাকে থাকতে হয়-  এ রকম প্রশ্নের খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশেই রিজভীকে দলীয় কার্যালয়ে থাকতে হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে এক-দুই দিন স্ত্রী শিক্ষিকা আনজুমান আরা লাইলি খাবার রান্না করে নিয়ে আসেন অথবা বাসার কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দেন। এই এক বছরের মধ্যে অনেক সময় প্রয়োজনে দলের বক্তব্য দিতে রিজভীকেই সাংবাদিক সম্মেলনে দেখা গেছে। সেটা সকালেই হোক অথবা রাতে হোক। দলের অনেক প্রেস রিলিজটি রিজভীর স্বাক্ষরে যায়।

ইসরায়েলের সহায়তায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চায় বিএনপি!

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির সঙ্গে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বৈঠকের খবর বেশ পুরনো। ২০১৬ সালে ইসরায়েলি গোয়েন্দা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের পর বিষয়টি আরো স্পষ্ট ভাবে জনসম্মুখে আসে। এবার বেগম জিয়ার মুক্তি আদায়ে ইসরায়েলকে কাজে লাগাতে তৎপরতা শুরু করেছে বিএনপি। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বের করতে চাইছে বিএনপি। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে এমন তথ্যের বিষয়ে জানা গেছে।
বিএনপি ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক তেমন ভালো নয়। তবে ইসরাইলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ়। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ইসরাইলের শরণাপন্ন হচ্ছে বিএনপি। যদিও ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সকলেই জানে, ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অসংখ্য নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করেছে। শত সমালোচনার সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি। আর এ কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে যেকোন সন্ধি করতে প্রস্তুত রয়েছে বিএনপি।
এদিকে, চলতি সপ্তাহেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। হঠাৎ করে দিন-তারিখ ঠিক করে বেগম জিয়ার মুক্তি বিষয়ে মওদুদের এমন বক্তব্যে আন্তর্জাতিক জোর লবিংয়ের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজনীতি সচেতনরা।
বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, হাইকোর্টে এখন বেগম জিয়ার দুটি মামলা আছে। একটি হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, আরেকটি হলো জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। এই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের ডিভিশনে এ দুটি মামলায় জামিন চাওয়া হবে। আমরা আশা করি, যেহেতু এবার আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি, সেহেতু জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়া জামিন পাবেন, এতটুকু আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি।
তিনি আরো বলেন, যদি বেগম জিয়ার জামিন না হয় তাহলে চাপের মুখে পড়বে সরকার।
তবে মওদুদ কোন চাপের কথা বলেছেন সেটি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই বিষয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক শঙ্কা ও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি সম্ভবত ইসরায়েলের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে ভারতকে দিয়ে চাপ দিতে পারে। ইসরায়েল ও আন্তর্জাতিক লবিস্টদের গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই হয়তো মওদুদ কনফিডেন্স নিয়ে এমন কথা বলেছেন।
তবে বিষয়টিকে হাস্যকর বলে দাবি করে অন্য এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশ কারো কথা মতো চলে না। একজন চিহ্নিত অপরাধীকে শাস্তি দিতে বাংলাদেশকে কারো কাছে নতি স্বীকার করবে না।
তিনি আরো বলেন, তবে বিএনপির দৌড়-ঝাপ দেখে মনে হচ্ছে, তারা ক্ষমতায় আসার জন্য বাংলাদেশকে অন্য দেশের কাছে বিক্রি করে দিতেও প্রস্তুত রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। বিএনপির উদ্দেশ্যে শুধু একটাই কথা বলতে চাই ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যদি দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করতো তাহলে আজকে দলটির এই দুর্দশা ও পরনির্ভরশীলতা থাকতো না। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে পাকিস্তানের মতো জঙ্গি রাষ্ট্র ও দুর্নীতিবাজদের তোষামোদি করার কারণে আজকে বিএনপির এই করুণ পরিণতি হয়েছে।

ছাত্রদলের দাবি মানা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিলেন গয়েশ্বর!

নিউজ ডেস্ক: ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়স সীমা তুলে দেওয়ার দাবিতে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করেছে আগের কমিটির ছাত্রদল নেতারা।
গত ১১ জুন দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক আশ্বাস দিলেও নতুন করে তৈরি হওয়া বিক্ষোভের প্রথম দিনেই বিক্ষুব্ধ নেতাদের হতাশ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের দাবিতে অনেক অসঙ্গতি থাকায় তা মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
রোববার (১৬ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গয়েশ্বর এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ছাত্রদল নেতাদের এই দাবি অন্যায্য এবং অযৌক্তিক। তাদের দাবি মেনে নেয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।
এদিকে গয়েশ্বর চন্দ্র যখন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন, তার আগে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা ওই কার্যালয়ের সামনে দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। তিনি নতুন করে ছাত্রদলের কর্মীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, গায়ের জোরে কেউ কমিটির নিয়ম পরিবর্তন করতে চাইবে, দলের হাইকমান্ডকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাবে- এটা মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তাদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, তারা যদি এসব অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগে গঠিত ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত ৬ জুন ভেঙে দেওয়ার পর বিক্ষোভ শুরু করেন সংগঠনটির নেতারা।
নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যে তিনটি যোগ্যতা নির্ধারণী শর্ত যোগ করা হয়েছে তা নিয়ে জোর আপত্তি রয়েছে সংগঠনটির বিক্ষুব্ধ নেতাদের। ওই শর্তে বলা হয়েছে, নতুন কমিটিতে নেতা হতে হলে অবশ্যই ২০০০ সালের পরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই শর্ত পূরণ করতে গেলে বর্তমানে সক্রিয় অনেক ছাত্রদল নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারবেন না বলেই তারা আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। গত ১১ জুন তারা নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে দিনভর বিক্ষোভ করে।
তারপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলে আশ্বস্ত হলে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করে। পরে পাঁচদিন পার হয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার প্রেক্ষিতে নতুন করে রোববার (১৬ জুন) থেকে নতুন কর্মসূচি শুরু করে ছাত্রদলের কর্মীরা। দুই ঘণ্টা পর তারা উঠে গেলে ওই কার্যালয়ে থাকা বিএনপির অন্যতম নীতি-নির্ধারক গয়েশ্বরকে পেয়ে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের দাবির বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। এর প্রেক্ষিতে তিনি দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

বুলু’র দাবার গুটি ছাত্রদল!

নিউজ ডেস্ক: আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির মূল শক্তি হিসেবে বিবেচিত ছিল ছাত্রদল। সঠিক নির্দেশনার অভাবে বিএনপির ‘ভ্যানগার্ড’ খ্যাত সেই ছাত্রদল এখন নির্জীব হয়ে পড়েছে। এবার সেই নির্জীব ছাত্রদলকে কাজে লাগিয়ে দলে প্রভাব বিস্তার করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বলা চলে ছাত্রদলকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করছেন বুলু।
গোপন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বুলুর নির্দেশে কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার অজুহাতে ১১ই জুন সকাল সোয়া ১১টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা। বিএনপির কার্যালয়ে তালা লাগানোর ষড়যন্ত্রে বুলুর সঙ্গে আরো ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং প্রশিক্ষণ বিষয় সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন। মূলত এ চারজন নেতা চাচ্ছেন, ছাত্রদলকে ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করে তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলকে হটিয়ে পুরো বিএনপির দায়িত্ব নিজ হাতে নিতে।
জানা গেছে, ছাত্রদলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পিছিয়ে নেই মির্জা ফখরুলপন্থী ছাত্র নেতারাও। বুলুপন্থী ছাত্রদল নেতারা নয়াপল্টন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে বাধা দেন মির্জা ফখরুলপন্থী ছাত্রনেতারা। এসময় তাদের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের কমিটির বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
বুলুপন্থী চার নেতা মির্জা ফখরুলপন্থী দোষারোপ করছেন করে বলছেন, তাদের ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণেই ছাত্রদলসহ গোটা বিএনপির আজ এ অবস্থা। তাই নেতৃত্ব বদল করে বিএনপি সজীব করতে তৎপরতা শুরু করা হয়েছে। পরবর্তীতে ফখরুলপন্থী নেতারা তাদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে জানতে পেরে, তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বুলুপন্থী নেতাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেন।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলপন্থী এক ছাত্রদলের নেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ছাত্রদলকে হাত করতে কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামে নতুন নাটক করছেন বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি মনে করেন, ছাত্রদল নেতাদের খেপিয়ে তুলে পুরো দলের দায়িত্ব তার কাঁধে নিতে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। মির্জা ফখরুল সাহেব এসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল আছেন। কেউ তার দায়িত্ব ছিনিয়ে নিতে আসলে আমরা তা শক্ত হাতে দমন করবো।
বিএনপি বর্তমান অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এই দুর্দিনে বিএনপির উচিত সংগঠিত থেকে কাজ করা। অথচ বিএনপির কিছু নেতা এখনো দলের ভেতরে অধিক ক্ষমতাবান হতে উঠেপড়ে লেগেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এমন চলতে থাকলে আগামী ১০ বছর পর বিএনপি নামক একটি দল ছিলো, তাও ভুলে যেতে পারে সাধারণ মানুষ।

যানজট কমাতে ঢাকায় নির্মাণ হচ্ছে পাতাল রেল

যানজটের শহর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। আর এই যানজটেই প্রতিদিন নষ্ট হয় কয়েক লক্ষাধিক কর্মঘণ্টা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে এই সড়কেই। আর ঢাকার এই যানজট কমাতে সর্বোচ্চ কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভারসহ নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে তারা। তবে ঢাকার গত দশ বছরের যানজটের চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নতুন নতুন ফ্লাইওভার নির্মাণের  কারণে যানজট বহু অংশে কমে এসেছে। এদিকে ঢাকার যানজটকে আরও কমাতে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে সরকার। দ্রুত যাতায়াতের উদ্দেশ্যে পাতাল রেল নির্মাণের চিন্তা ভাবনা হাতে নিচ্ছে সরকার।
এর অংশ হিসেবে ঘনবসতির শহর ঢাকায় দুই বছর ধরে হয়েছে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই। এর মাধ্যমে প্রথম পাতাল রেলের রুট ও নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) প্রস্তাবনা অনুযায়ী, রুট ‘এমআরটি লাইন-১’ হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত।
মূল নকশা প্রণয়নের কাজও শেষ প্রান্তে জানিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ‘এমআরটি লাইন-১’ এর মূল ডিপিপিও (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) চূড়ান্ত করা হয়েছে। সে অনুসারে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এ রুট। থাকছে দু’টি অংশ। প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত। ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ অংশটি হবে দেশের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল বা পাতাল রেল। অন্য অংশ পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুটটি হবে এলিভেটেড অর্থাৎ মাটির উপর দিয়ে উড়াল রুট।
দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে জনসাধারণের ভোগান্তির অভিজ্ঞতা থাকলেও এই পাতাল রেল নির্মাণে কোনো ভোগান্তি হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, পাতাল রেলের সমস্ত কাজ মাটির নিচ দিয়ে হবে। রুটের ওপরের অংশে নিয়মিতভাবে যানবাহন চলাচল করবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ঢাকা শহরের তলদেশ ও ভূমির বৈশিষ্ট্য পাতাল রেল (আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে) নির্মাণের উপযোগী, যা জাপানের ওসাকা শহরের মতো। এ কারণে ওসাকা শহরের মতোই রাজধানীর মাটির ২০ থেকে ২৫ মিটার গভীরে পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে। আর পাতাল রেল নির্মাণে টানেল খননে অত্যাধুনিক টানেল বোরিং মেশিন ব্যবহৃত হয় বিধায় কাজের সময় জনদুর্ভোগ হবে না। পরিবেশ বিপর্যয়ও হবে না বলা চলে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যা চলমান পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেল-৬ প্রকল্পের চেয়েও ব্যয়বহুল। অবশ্য প্রকল্পের একাংশের কাজের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ চুক্তি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
পাতাল রেল প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বিমানবন্দর ও কমলাপুর রুটে দেশের প্রথম পাতাল রেল হবে। আমরা ডিপিপি চূড়ান্ত করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি। আমাদের দিক থেকে কোনো কাজ বাকি নেই। পাতাল রেল নির্মাণে কোনো ভোগান্তি হবে না। কারণ সমস্ত কাজ মাটির নিচ দিয়ে যাবে। প্রকল্পে জাপান সরকার আমাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঋণ চুক্তিসহ হয়ে গেছে। নির্মাণাধীন পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলের মতো এটাও তরুণ প্রজন্মের কাছে একটা স্বপ্নের প্রকল্প।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের ভায়াডাক্ট, টানেল, এলিভেটেড অ্যান্ড আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন পূর্তকাজের জন্য সার্বিক নকশা চূড়ান্ত। ডিপোর জন্য ভূমি অধিগ্রহণ নকশা ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল সিস্টেমের জন্য মৌলিক নকশাও করা হয়েছে। স্বপ্নের এ প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
ঘনবসতিপূর্ণ শহর ঢাকার যানজট নিরসন ও গণপরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে হচ্ছে ‘এমআরটি লাইন-১’ এর আওতায় হচ্ছে প্রথম পাতাল রেল।

Sunday, June 16, 2019

বিএনপির ছন্দপতনের জন্য দায়ী বেগম জিয়ার নির্বুদ্ধিতা ও তারেকের লুটপাট!

নিউজ ডেস্ক : হঠাৎ ছন্দপতনে দেশের রাজনীতিতে বিএনপির যে দৈন্যদশা দেখা দিয়েছে সেটির জন্য কেবল মাত্র বেগম জিয়ার অদূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাবকে দায়ী করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া তারেক রহমানের সীমাহীন লুটপাট, বেগম জিয়ার উদ্দেশ্যহীন রাজনীতি, নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা, শিক্ষার অভাব, অহংকার এবং অতিরিক্ত পরিবার প্রীতির কারণে আজকে বিএনপি দেশের তৃতীয় শ্রেণির রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
বিএনপির ছন্দপতন এবং রাজনৈতিক কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়ার জন্য দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব দায়ী বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক। পরিচয় গোপন করার শর্তে তিনি বলেন, বিএনপি একটা সময়ে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল ছিল। কিন্তু দলটির চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার নির্বুদ্ধিতা, সিদ্ধান্তহীনতা, পরনির্ভরশীলতা, অশিক্ষা ও অতিরিক্ত বিদেশ নির্ভরতার কারণে বিএনপি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেয়া, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন, তারেক রহমানের অপরাধের বিষয়ে মুখে কুলুপ আটা, নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন, দেশের চেয়ে বেশি দল প্রীতি, দেশের মানুষের নার্ভ বুঝতে না পারার কারণে বেগম জিয়ার বিএনপি ব্যাক ফুটে চলে গিয়েছে। বেগম জিয়া কল্যাণমুখী রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার আমলে সুবিধাবাদীরা মাথা চাড়া দেয়। যার কারণে বাংলাদেশ তৎকালীন সময়ে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। সুতরাং বিএনপির যে অধঃপতন হয়েছে, তার জন্য কেবল বেগম জিয়াই দায়ী।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বেগম জিয়ার অল্প শিক্ষিত মানুষ। তাকে যে যেভাবে বুঝিয়েছে, তিনি সেভাবেই পরিচালিত হয়েছেন। অন্যের বুদ্ধি ধার করার জন্যই তার আজ এই পরিণতি হয়েছে। এছাড়া উনি যদি সময় মতো তারেক রহমানকে আটকাতে পারতেন তবে, আজকে বিএনপিকে এতটা দুর্নাম সইতে হতো না। বেগম জিয়া আসলে পুত্রের অপকর্মের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বাজেটে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে দাম কমবে অনেক

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেশকিছু পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেছেন তিনি। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক এ বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে কৃষিখাতে প্রণোদনার জন্য কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন- পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার, লোলিস্ট পাম্প, রোটারি টিলারের ওপর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়াসহ নারী উদ্যোক্তা পরিচালিত ব্যবসায় শো-রুমের ওপর মূসক অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (বেজা) বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাস, যোগানদার ও বিদ্যুৎ বিতরণকারী সেবার উপর মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্মাণ সংস্থা, কনসালটেন্সি ও সুপারভাইজরি ফার্ম, যোগানদার ও আইন পরামর্শক সেবার উপর মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ক্ষেত্রে ফরোয়ার্ডার্স, ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং সংস্থা, বিমা কোম্পানি, যোগানদার ও ব্যাংকিং সেবায়।
ক্যানসারের ওষুধের উপর রেয়াদি সুবিধা ছাড়াও স্বল্পমূল্যে অসুস্থ গরিব রোগীদের কাছে মেডিকেল গ্যাস সহজলভ্য করতে এসব পণ্যে আরোপিত রেগুলেটরি ডিউটি ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় লিফট, রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসার, এয়ার কন্ডিশনার, মোটর, মোল্ড ও পাদুকা শিল্পকে সুরক্ষার জন্য এ খাতে উপকরণ আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত উপকরণ ও দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেলের শুল্ক কমানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমবে।

খালেদা বনাম তারেক: নেতৃত্ব দখলের দ্বন্দ্বে ধ্বংস হয়ে যাবে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির নেতৃত্ব থেকে খালেদা জিয়াকে সরাতে তারেক রহমানের হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় একাধিক নেতা। এ নিয়ে ১৩ জুন দলটির গুলশান কার্যালয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। কার্যালয় সূত্র বলছে, মা-ছেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দলের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন প্রায় প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
জানা গেছে, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের জন্য বিএনপির শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে ঈদের পর ১৩ জুন বুধবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভূমিকা নিয়ে কথা হয় বৈঠকে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠক চলাকালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সদ্য বাতিল হওয়া ছাত্রদলের কমিটির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুমতি ছাড়া ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে হঠাৎ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলে উঠেন- ‘ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তে আমরা কারাগারে ম্যাডাম জিয়ার অনুমতি নিয়েছি। এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপি নেতা ড. মঈন খানকে মিথ্যাবাদী বলে সম্বোধন করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন, ছাত্রদলকে নিয়ে এমনিতেই আমরা উভয় সংকটে আছি। আর ড. মঈন খানরা খালেদা জিয়ার কথা বলে মিথ্যাচার করছেন। বেগম জিয়ার নাম ভাঙিয়ে ছাত্রদল কমিটি বিলুপ্তির কথা বলে দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছেন। ড. মঈন খান আর রিজভীর মতো নেতাদের- না আছে সাংগঠনিক শক্তি, না আছে দল চালানোর মতো বুদ্ধি। এরা বেগম জিয়ার নাম ভাঙিয়ে দলের ক্ষতি করছেন। আমি মনে করি, বেগম জিয়ার বয়স হয়েছে, এখন উনার অবসরের সময় এসেছে। তাই উনি নিজে থেকেই তারেক রহমানের হাতে দলের ভার দিয়ে বিশ্রামে যেতে চান। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে বেগম জিয়ার সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি করে রাখা হচ্ছে। আমাদের স্পষ্ট কথা- আমাদের নেতা তারেক রহমান আগামী দিনে দলের কর্ণধার। ম্যাডাম কারাগার থেকে বের হলে আমরা তাকে অবসরে বিশ্রামে পাঠানোর চিন্তা করছি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ছাত্রদলের কমিটি বেগম খালেদা জিয়ার স্পষ্ট নির্দেশনা নিয়ে আমরা বিলুপ্ত করেছি। কারাগারে বেগম জিয়ার সাথে দেখা করার সময় তিনি এই অকর্মণ্য ছাত্রদলের কমিটির নেতাদের দল থেকে বের করে দিতে বলেছেন। আমরা তার নির্দেশে সেটাই করেছি। গয়েশ্বরের মতো নেতাদের এই কমিটি বিলুপ্তির ঘটনায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে তাই তাদের অন্তর জ্বলছে। খালেদা জিয়া আমাদের দলের চূড়ান্ত নেতা। তার নির্দেশনাই বিএনপির জন্য শেষ কথা। তারেক রহমানের জন্য দল ধ্বংস হতে পারে না।
এদিকে বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জাতীয়তাবাদী দলের মূল সমস্যা হলো মা-ছেলের মধ্যকার ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। দলের নেতৃত্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপ খালেদা জিয়ার পক্ষে, আরেক গ্রুপ তারেক রহমানের নিয়ন্ত্রণে। মূলত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব দখলের দ্বন্দ্বে একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে বিএনপি।

শিশুদের জন্য ৮০ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট

টানা তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বাজেট উত্থাপিত হয় বৃহস্পতিবার। আর প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮০ হাজার ১৯০ কোটি টাকার পৃথক শিশু বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।

এ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংখ্যা হলো ১৫টি। গত অর্থবছরের(২০১৮-১৯) চেয়ে বরাদ্দ বেড়েছে ১৪ হাজার ৫শ’ ৪০ কোটি টাকা। পঞ্চম বারের মতো শিশুদের জন্য পৃথক বাজেট প্রণয়ন করছে সরকার।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, শিশু কেন্দ্রিক বাজেট বৃদ্ধিতে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বিগত অর্থবছরের তুলনায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে শিশু কেন্দ্রিক বাজেট প্রস্তাব উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। সেই সঙ্গে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের জাতীয় বাজেটের প্রবৃদ্ধির তুলনায় শিশু কেন্দ্রিক বাজেট প্রবৃদ্ধি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
আ  হ ম মোস্তফা কামাল  বলেন, গত  অর্থবছরের বাজেটের সাথে তুলনা করলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট বেড়েছে ১১.৮ শতাংশ। এখন শিশুবান্ধব বাজেটের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ হাজার ১৯০ কোটি টাকায়। প্রবৃদ্ধির হার  ২২.১৬ শতাংশ।
নির্বাচিত মন্ত্রণালয়গুলোর মোট বাজেটের অনুপাতে শিশু সংবেদনশীল বরাদ্দও আগের অর্থবছরের ৪৩.৫৬ শতাংশ হতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ৪৭.৫৯ শতাংশে বেড়েছে বলেও বাজেট বক্তৃতায় জানান অর্থমন্ত্রী।
ডেইলি বাংলাদেশ/এসএস/এসআই

পদ্মা সেতুসহ ১০ মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ ৩৯ হাজার কোটি টাকা

সরকারের অগ্রাধিকারে থাকা ১০টি মেগা প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাজেটেও উল্লেখ্যযোগ্য হারে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই ১০ মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ থাকছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সাতটি মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়লেও তিনটিতে কিছুটা কমেছে। 
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তার বাজেট বক্তৃতা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, এ বছর সরকারের ১০ মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ থাকছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ২৪ হাজার ৭৯৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটের বরাদ্দ অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের তুলনায় আসন্ন অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে।
নতুন ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারের ১০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা সেতুতে বরাদ্দ বাড়ছে ২ হাজার ৭১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৩৭০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

এছাড়াও পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ৩ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৩১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
মেট্রোরেল প্রকল্পে এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ হিসেবে ৭ হাজার ২১২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। চলতি বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৪৮৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এবারের বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৩ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। গত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৭০৫ কোটি টাকা। এই নির্মাণ প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ৩০৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫২৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
তবে সরকারের মেগা প্রকল্প হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় বরাদ্দ কমেছে সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহু লেন সড়ক টানেল নির্মাণ ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবিত বাজেটে।
এরমধ্যে সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ১ হাজার ৩৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১০১ কোটি টাকা।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহু লেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ১৭৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এবং পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৫৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

বাজেটে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণে বরাদ্দ বেড়েছে

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। পল্লী অঞ্চলের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচনের অংশ হিসেবে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় এ প্রস্তাব করেন তিনি।
বর্তমানে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে পরিবার প্রতি ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা অতিদরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে ৫০শতাংশ নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এসএস/এসআই

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ হাজার টাকা বৃদ্ধি

বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী মাসিক ভাতা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এ প্রস্তাব করেন।
দেশে ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধা প্রতি মাসে সম্মানী ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে পেয়ে থাকেন। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা।ফলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ হাজার টাকা বাড়ছে।এ ছাড়া তাদের উৎসব ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা, নববর্ষ ভাতা হিসেবে ২ হাজার টাকা এবং বিজয় দিবস ভাতা ৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকছে।

Saturday, June 15, 2019

ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বিবাদে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে যাননি মান্না!

নিউজ ডেস্ক: নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অভ্যন্তরে সৃষ্ট অসঙ্গতি দূর করতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তা সফল হয়নি। জানা গেছে, বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অনুপস্থিত বেশ কয়েকজন নেতার কারণে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মতভেদ ও বিবাদের জের ধরে কামাল ও মান্না বৈঠকে উপস্থিত হননি। তবে বৈঠকে অনুপস্থিত থাকাটা রাজনৈতিক কৌশলের অংশ কিনা, সেটি নিয়েও ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
একটি সূত্র বলছে, ড. কামাল হোসেনের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের কারণে মাহমুদুর রহমান মান্না ত্যক্ত-বিরক্ত। সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী জোট গঠনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন মান্না। সেসময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে একঘরে করতে আওয়ামী লীগ-বিরোধীদের এক প্লাটফর্মে আনার জন্য অন্যতম কুশীলবের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। নানা টানাপড়েন শেষে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন মান্না।
যদিও জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা দ্বিধা-বিভক্ত থাকলেও বিষয়টিকে কিছুটা আড়াল করে বিএনপির সাথে নির্বাচন এবং রাজপথমুখী আন্দোলনে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে বিএনপির নীতি-নির্ধারকেরা মান্নাকে কাজে লাগান। আওয়ামী লীগ বিরোধীদের এক মঞ্চে হাজির করতে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন মান্না।
এমন প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতেও বিএনপিকে অবজ্ঞা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভুঁইফোড় নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়। সে সময় মনোনয়ন দেয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি সাথে ২০ দলীয় জোটের শীতলযুদ্ধ শুরু হয়। এত কিছুর পরেও মান্না নিজেকে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করে সরকারবিরোধী আন্দোলন সোচ্চার রাখতে চেয়েছেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেনের একগুঁয়েমি মনোভাবের কারণে আপাতত নিজ অবস্থানেই থাকতে চান তিনি। আর তাই ১০জুন অনুষ্ঠেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সভায় যাননি মান্না।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মান্নার ঘনিষ্ঠ নাগরিক ঐক্যের একজন নেতা বলেন, মান্না ভাই প্রয়োজনে একা পথ চলবেন, তবু তিনি দ্বিধা-দ্বন্দ্বের রাজনীতিতে থাকতে চান না। বিশেষ করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কর্মকাণ্ডে চরম বিরক্ত তিনি।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Tuesday, June 11, 2019

তারেক-ফখরুলের প্রশংসা, সন্দেহে জাফরুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জোটের দুর্দশায় বিএনপির হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য তারেক রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের দায়ী করলেও এবার হঠাৎ ভোল পাল্টিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সৃষ্ট অসঙ্গতিতে স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যদের দায়ী করেছেন। এতে জাফরুল্লাহ চৌধুরী তারেক রহমানের আস্থাভাজন হওয়ার দৌড় শুরু করেছেন বলেও জোটে সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপির সমস্যার পেছনে তারেক রহমান দায়ী নয়, বরং দায়ী স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা। তিনি লন্ডন থেকে বারবার ঐক্যফ্রন্টের অগ্রগতি সম্পর্কে নানা পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে মির্জা ফখরুল সম্পর্কে জাফরুল্লাহ বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে দলের রাজনীতির জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, আমি তো মনে করি মির্জা ফখরুল খুব ভালো করেছেন, দলের রাজনীতি ঠিক রেখেছেন। তিনি তো বিএনপিকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। নেতা হিসেবে তিনি ঠিক কাজটিই করেছেন।
তবে জাফরুল্লাহর বক্তব্যকে সমর্থন করছেন না ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের অনেকেই। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ঐক্যফ্রন্ট কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, বিষয়টি ঐক্যফ্রন্টের বড় দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্ভর করছে বিএনপির ওপর। পাঁচ মাস নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকলাম, সে নিষ্ক্রিয়তা ভাঙতে পারেনি বিএনপি। তারা কোন এক অদৃশ্য কারণে উদ্যোগ নিচ্ছে না। আর তা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব কর্তৃত্বই নির্ধারিত হচ্ছে। সুতরাং জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এমন বক্তব্য অমূলক।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, কে কার মনোরঞ্জনে কথা বলছেন তা বোঝা বেশ মুশকিল হয়ে উঠেছে। এইসব চাটুকার দিয়ে রাজনীতি উদ্ধার করে জোটের গতি ফিরিয়ে আনতে হলে তা সহজ হবে না। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের দুর্দশায় তারেক-ফখরুলের দায় ও জাফরুল্লাহর বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সহমত প্রকাশ করছেন কিনা জানতে চাইলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

দেখতে সুন্দরী বলেই কি সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানা?

একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিএনপির ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। আর এই মনোনয়নের পর থেকেই খোদ বিএনপিতে উঠেছে গুঞ্জন, দেখতে রূপবতী বলেই কি এতো হেভিওয়েট নারী প্রার্থীর ভিড়ে মনোনয়ন পেলেন রুমিন? রুমিন ফারহানার আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এর জনমনেও আসছে ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন- জনগণের সবচাইতে কাছে থাকা নেতা উকিল আবদুস সাত্তারকে জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন না দিয়ে, এলাকার মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকা রুমিন ফারহানাকে মনোনয়ন দেয়ার ভিত্তি কি? তাহলে কী সৌন্দর্যের কাছেই ধরাশায়ী হলেন বিএনপি'র নীতি নির্ধারনী মহল, এমন প্রশ্নও ভাসছে সোস্যাল মিডিয়াসহ রাজনীতি সচেতন বিভিন্ন মহলে।

জানা যায়, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি গত ৯ জুন রোববার দুপুরে শপথ নিয়েছেন। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। দুপুর ১২টায় রুমিনকে জাতীয় সংসদ ভবনের নিজ কার্যালয়ে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার। ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বিএনপির সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। একাদশ সংসদে আনুপাতিক হারে বিএনপি একটি মাত্র সংরক্ষিত আসন পেয়েছে। সেই আসনে বিএনপি রুমিনকে মনোনয়ন দিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ( সরাইল উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা) আসনের অধিকাংশ বিএনপি নেতারাও হতাশা প্রকাশ করেন এই বিষয়ে। ঘুরেফিরে  চায়ের আড্ডায় কিংবা দলীয় রাজনৈতিক আড্ডায় আসছে রুমিন ফারহানার এই অস্বাভাবিক উথানের গল্প। নেতাকর্মীরা মনে করেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি যেমন নমিনেশন পেপার নিয়ে জড়িয়েছে ব্যাবসায়, ঠিক তেমনি রুমিন ফারহানার মনোনয়ন এবং নারী আসনের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পেছনেও রয়েছে কোন স্বার্থ। অনেকেই মনে করছেন দেখতে সুন্দর বলেই রুমিনের প্রতি বিশেষ টান রয়েছে দলের নীতি নির্ধারকদের। দলের শীর্ষ নেতাদের মনোরঞ্জনের মাধ্যমেই মিলেছে রুমিনের সাংসদ হবার সুযোগ।

উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সাতটি আসনে জয়লাভ করে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকি সবাই শপথ নিয়ে সংসদে গেছেন। এ ক্ষেত্রে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন আইন অনুযায়ী, দলটিকে একটি আসন বণ্টন করে দিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

রোহিঙ্গা ইস্যু: বাংলাদেশ-বিরোধী অপপ্রচারে ব্যস্ত মিয়ানমার

নিউজ ডেস্ক: রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমার সরকার। সম্প্রতি নতুন রূপ পেয়েছে দেশটির বাংলাদেশ-বিরোধী এই প্রোপাগান্ডা। চলতি বছরের ১৯ মে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ২৫তম ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে অসহযোগিতার অভিযোগ আনেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ কিউ টিন্ত সোয়ে।
সরকারের পরোক্ষ মদদে দেশটির সেনাবাহিনীর অকথ্য নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টিকে বিলম্বিত করতে এবং ১০ লক্ষাধিক বাস্তুচ্যূত মানুষদের বাংলাদেশের ঘাড়ে জোরপূর্বক চাপিয়ে দিতেই মিথ্যাচার করছে মিয়ানমার। পাশাপাশি, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অর্জিত সম্মান ভূলুণ্ঠিত করতে মিয়ানমার সরকার এমন অমূলক-যুক্তিহীন বক্তব্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘৃণ্য অপরাধের দায় এড়িয়ে বিশ্বের সামনে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে।
সম্মেলনে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিজ ইচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে গিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দাবি করে, পাঁচ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবার (১ পুরুষ, ২ নারী, একজন তরুণী ও এক তরুণ) স্বেচ্ছায় তাদের দেশে ফিরে গিয়েছেন। অথচ এই দুটি দাবিই ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা।
প্রকৃতপক্ষে, ২০০ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ৫ জন ফিরে যাওয়ার যে দাবি করা হয়েছে, তদন্তে দেখা গেছে, তারা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বহুল পরিচিত এজেন্ট। রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে- এমন প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবেই তাদের কৌশলে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করে, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে সাময়িক আশ্রয় নেয়ার মতো পরিবেশ না থাকায় ২০১৮ সালের ২৭ মে ৫৮ রোহিঙ্গা মুসলিম তাদের দেশে ফিরে গিয়েছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে দেখা যায়, নিজেদের বাড়িঘর ও সম্পত্তির খোঁজ নিতে বাংলাদেশ থেকে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দুই দফায় তারা রাখাইনে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের ৪ বছর কারাদণ্ড দেয়। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই ৫৮ জনসহ মোট ৬২ জনকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রমাণ করতে নাগা খু ইয়া সেন্টারে নিয়ে তাদের মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদেরও নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অত্যাচারের মুখে তাদের ১০ জন ফের বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। যাদের ছয়জনের সাক্ষাৎকারও নেয় মানবাধিকার সংস্থাটি।
মিয়ানমার আরও দাবি করে, ২০১৮ সালের জুনে ১২ বাংলাদেশি ও ৯২ রোহিঙ্গাসহ ১০৪ জনকে বঙ্গোপসাগরের রাখাইন উপকূল থেকে আটক করা হয়। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, ওই ১০৪ জন মূলত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের ট্রলার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাখাইন রাজ্যের রাথেডং শহরে যাত্রাবিরতি দেয়। ওই ১২ জনকে বাংলাদেশের কাছেও হস্তান্তর করা হয়। আর বাকি ৯২ রোহিঙ্গাকে নাগা খু ইয়া ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি অনুসারে, ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর ২০ হিন্দু রোহিঙ্গা নিজ দেশে ফিরে গিয়েছে, যাদের রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসা অপহরণ করে বাংলাদেশের একটি শরণার্থী শিবিরে নিয়ে এসেছিল। সরেজমিনে তদন্তে দেখা যায়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের সমর্থন পেতে ওই সব হিন্দু রোহিঙ্গাকে গোপনে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কোনও ধরণের যোগাযোগ করেনি। এ কাজে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করে কক্সবাজারের উখিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু নেতা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কালক্ষেপণ করতে এমন সব মিথ্যাচার করছে বলে জানা বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা গেছে।