Tuesday, August 20, 2019

দ্রুতই হবে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান

দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। এই সংখ্যাকে কাজে লাগাতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। এখন থেকে প্রতি বছর বিভিন্নভাবে ১৫ লাখ শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। এছাড়া দ্রুতই পর্যায়ক্রমে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
শনিবার সকালে সিলেটের উন্নয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাখাতের উন্নয়নে ব্যাপক বরাদ্দ দিচ্ছে। শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে বই দেয়ার পাশাপাশি অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে। তাই শিক্ষকদের আরো আন্তরিক হতে হবে। শিক্ষার মান পরিবর্তনে শিক্ষকদের ছাড় দেয়া হবে না। শিক্ষা ব্যবস্থার মান বজায় রাখতে শিক্ষকদের আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিশুদের একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সিলেটের শিক্ষাখাতের উন্নয়নে সরকার খুব আন্তরিক। আন্তরিক। এ জন্য সিলেটের ৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। শিগগিরই টেন্ডারের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ হবে। উন্নয়ন কাজের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে কি না ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের খতিয়ে দেখতে হবে।
শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের মধ্যে সিলেটে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার বেশি। তাছাড়া মাথাপিছু আয় ভালো হলেও সচেতনতায় অনেক পিছিয়ে। তার কারণ শিক্ষা। তাই শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সামাজিক অবক্ষয় রোধে গুণগত শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। এ জন্য শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

১৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে তুরাগ নদীর তীরে হচ্ছে পয়ঃশোধনাগার

সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন নিশ্চিত করতে তুরাগ নদীর তীরে ২০ হেক্টর জমিতে একটি আধুনিক পয়ঃশোধনাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।  এতে নির্মাণব্যয় হবে প্রায় ১৪শ কোটি টাকা।  এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরা ও সংলগ্ন এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। 

ইতোমধ্যে এই পয়ঃশোধনাগার বা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।   

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় ১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার প্রকল্পটি উপস্থাপন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।  অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ওয়াসা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর মাত্র ২০ শতাংশ এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা রয়েছে। বাকি ৮০ শতাংশ এ ব্যবস্থাপনা না থাকায় এসব এলাকার লেক, খাল ও নদীর পানি দূষিত হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। এতে করে এলাকাবাসীকে বসবাস করতে হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। এর মধ্যে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ‘সুয়েজ মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করা হয়েছে।  এর আওতায় উত্তরা ও সংলগ্ন এলাকার সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি এসটিপি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি নির্মাণের জন্য বিদ্যমান টঙ্গী-মিরপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন তুরাগ থানার ধউর মৌজায় ২০ হেক্টর জমি নির্বাচন করা হয়েছে।  এই জমি অধিগ্রহণের জন্য ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে প্রথমবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত জমির প্রাক্কলন পাঠাতে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেয়া হয়। জবাবে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত জমিটি ভূমি মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের নামে বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভূমির মালিকরা হাইকোর্টে রিট আবেদন করায় প্রস্তাবিত জমিতে অধিগ্রহণ সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে বলে জানানো হয়।

পরে ওই জমির বিপরীতে হাইকোর্ট একাধিক রিট পিটিশন মামলা চলমান ও ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় থেকে উত্তরা এলাকায় পয়ঃশোধনাগার নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিকল্প প্রস্তাব পাঠানোর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়। বিকল্প স্থান নির্ধারণের বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকা ওয়াসা জানতে পারে, রাজউক ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ডিএপি) সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য দিয়াবাড়ি, নলভোগ ও ধউর মৌজায় প্রয়োজনীয় ভূমি চিহ্নিত রয়েছে। কিন্তু এই জমির একটি বড় অংশ সরকার অবমুক্ত করে দিয়েছে। বাকি অংশে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রয়োজনীয় জমি সংকুলান হবে না বলে রাজউকের সঙ্গে আলোচনা করে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে ট্রিটমেন্ট প্ল্যানের জন্য চিহ্নিত অংশের পূর্ব পাশের কিছু জমিসহ প্রায় ৫৩ একর জমি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জরিপ করে রাজউকের ছাড়পত্র নেয়া হয়। পরে রাজউক অনুমোদিত জমিতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করতে ৫৩ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সিএস নকশা, আরএস নকশা ও সিটি নকশাসহ ল্যান্ড শিডিউল তৈরি করে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের প্রাক্কলন পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় প্রাক্কলন প্রস্তুত করে সে অনুযায়ী এই ভূমির চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, সাইট অফিস ও সিকিউরিটি গার্ড শেড নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পুনর্গঠিত প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীন তুরাগ থানা এলাকায় ৫৩ একর জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে পুরো উত্তরা ও সংলগ্ন এলাকার জন্য সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পয়ঃশোধনাগারটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায় বিএনপি-জামায়াত

নিউজ ডেস্ক: আজ ঐতিহাসিক ১৭ আগস্ট। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ভয়াল দিন। ২০০৫ সালের এ দিনে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) একযোগে ৬৩ জেলার ৪৩৪ স্থানে বোমার বিম্ফোরণ ঘটায়।
২০০১ থেকে ২০০৬ বিএনপি জামায়াতের শাসন আমলে সরকারি এমপি মন্ত্রীদের মদদে সারা বাংলাদেশে শক্ত অবস্থান তৈরি করে জঙ্গিরা। মুছে যায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩ টি জেলায় মোট ৪৩৪ টি স্থানে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটে। ওইদিনের ঘটনায় দু’জন নিহত এবং অর্ধশত আহত হন। দেশে এরপর শুরু হয় জেএমবির আত্মঘাতি বোমা হামলা।
পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ধারাবাহিক বোমা হামলায় বিচারক ও আইনজীবীসহ ৩০ জন নিহত হয়। আহত হয় ৪ শতাধিক। ওই বছরের ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষীপুরের আদালতে জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত এবং বিচারকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি এবং চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাকে প্রবেশ করে আত্মঘাতি এক জঙ্গি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই হামলায় আইজনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। নিহত হয় আত্মঘাতি হামলাকারী জঙ্গিও।
১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ঢাকা মহানগর ছাড়া সারাদেশে দায়ের করা হয় ১৩৮ টি মামলা। হামলার ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১ হাজার ৪০০ জন গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে ৯৮১ জনকে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়। এছাড়া, রাজধানীর ৩৩ টি স্পটে বোমা হামলার ঘটনায় ১৮ টি মামলা দায়ের হয়। এই ১৮ টি মামলার মধ্যে ৫ টি মামলার বোমার বাহককে এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।

জাতির পিতাকে দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, খুনিরা ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেটা করতে পারেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫অগাস্ট) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় শোক দিবস’উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক আরো বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধীরাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে খুনের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। এই খুনিরাই বঙ্গবন্ধু পরবর্তী রাজনীতিতে ভূমিকা রেখেছে এবং ক্ষমতায় এসেছে। এক সময় এই খুনিরা এক হয়ে জোট বেঁধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলো।
তিনি বলেন, খুনিদেরই দোসর বিএনপি-জামায়াত জোট বাংলাদেশের পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতও পরিবর্তন করে ফেলতে চেয়েছিলো। কিন্তু তারা সেটা করতে পারেনি।
যোহরের নামাজের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারবর্গের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

২০২৩ সালের মধ্যেই সকল প্রাইমারি স্কুলে দেওয়া হবে দুপুরের খাবার

২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব প্রাইমারি স্কুলে শিশুদের দুপুরের খাবার দেয়া হবে। বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলায় শুকনো ও রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। এর বদলে শুধু শুকনো খাবার দেয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে সরকার। প্রতিটি শিশুর জন্য দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। এ সংক্রান্ত ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯’ অনুমোদনের জন্য আজ মন্ত্রীসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রীসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে আরও রয়েছে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষণা কাউন্সিল আইনসহ বেশকিছু অবহিতকরণ প্রস্তাব। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯’ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলার কিছু স্কুলে পরীক্ষামূলকভাবে রান্না ও শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর ভর্তি শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। উপস্থিতির হার আগের তুলনায় ৫-১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
 যেসব স্কুলে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে সেখানে উপস্থিতির হার বেড়েছে ১১ শতাংশ আর শুকনো খাবার (বিস্কুট) দেয়া স্কুলগুলোতে বেড়েছে ৬ শতাংশ। শিক্ষার্থীদের রক্তস্বল্পতার হার কমেছে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৭ ও ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব স্কুলের শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হারও কমেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সরকারের চলতি মেয়াদেই দেশের সব প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দেয়া হবে।
 নানা জটিলতায় সেখানে শুকনো খাবার (ডিম, কলা ও উন্নতমানের বিস্কুট) দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরা যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় কিভাবে নির্বাহ করা হবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, রান্না করা খাবারের কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত নীতিতে। এতে প্রতি বছর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ফান্ড দিচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। তবে আগামীতে এ প্রকল্প সরকারের টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) চূড়ান্ত করা হবে। এতে রান্না করা ও শুকনো খাবার দুটো প্রস্তাবই থাকবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল যেটি পছন্দ করবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটি শিশুর জন্য প্রতিদিন ২০-২২ টাকা বরাদ্দ ধরে ডিপিপি তৈরি হচ্ছে।
প্রস্তাবিত নীতিতে বলা হয়েছে- প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী দেশের সব শিশুকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে স্কুল মিল নীতির আওতায় আনা হবে।
তাদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় যথার্থ আবদান রাখা যাবে। এ কার্যক্রম শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিসহ গ্রাম ও শহর, ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে শিক্ষার মানের ব্যবধান কমাতে সাহায্য করবে।
শিক্ষার্থীদের মেধার উৎকর্ষ সাধন, চিন্তা ও কল্পনা শক্তির বিকাশ, সৃজনশীলতা এবং দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত হতে ভূমিকা রাখবে। এটি কার্যকর হলে প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তি, উপস্থিতির হার বৃদ্ধি, পাঠে মনোনিবেশ ও বিদ্যালয় ধরে রাখতে অবদান রাখবে।
শিশুদের পুষ্টির বিষয়ে এতে আরও বলা হয়েছে- ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ৫ দিন রান্না করা খাবার এবং একদিন উচ্চপুষ্টিমান সম্পন্ন বিস্কুট সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে কাজের সুযোগ হবে ১৪ হাজার তরুণের

দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে।  তারই ধারাবাহিকতায় বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।
জানা গেছে, রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানে ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।  ২০২১ সালের মধ্যেই আইটি খাতে কর্মতৎপরতার জন্য বিশ্ব রাজশাহীকে চিনবে নতুন নামে।  আরো জানা গেছে, ভারতের ব্যাঙ্গালুরু, আমেরিকার সানফ্রানসিসকো ও ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন সিটির মতো বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে বিশ্বমানের সফটওয়্যার তৈরি হবে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, ৩১ দশমিক ৬৩ একর জায়গার উপর ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির আদলে তৈরি করা হচ্ছে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের অবকাঠামো।  এখানে গড়ে তোলা হবে ১০ তলা একটি ভবন।  এছাড়া ৬২ হাজার বর্গফুট আয়তনের পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি আইটি ইনকিউবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে।  আগামী তিন বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
উল্লেখ্য, দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের মধ্যে সারা দেশের ২৮টি পার্কের কাজ শেষ করতে চায় সরকার।  এসব আইটি পার্কে সরাসরি তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।  আর পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে জানা গেছে।

তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, সরকারি সেবায় সুবিধা পাচ্ছে দেশবাসী

সরকারি সেবা সহজ করে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে বর্তমান সরকার।  ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করার মাধ্যমে সরকারি সেবা সহজলভ্য করতে সরকার এরই মধ্যে ই-গভর্মেন্ট সেবা চালু করেছে।

জানা গেছে, দেশে দেড় হাজারের মতো সরকারি সেবা রয়েছে।  এসব সেবা ডিজিটাইজড করার মাধ্যমে দুর্নীতির মাত্রা জিরো লেভেলে আনতে কাজ করছে সরকার।  পাশাপাশি জনসেবার বিষয়টি মাথায় রেখে হয়রানি বন্ধে সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের সুবিধা পেতেও শুরু করেছে দেশবাসী।  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবার মান বৃদ্ধির কারণে সরকারি সেবা হয়েছে সহজলভ্য ও এবং সাশ্রয়ী। 
বিভিন্ন তথ্যানুসারে, ডিজিটাল সেবা চালুকরণে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে অল্প সময়ে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।  জনগণের দ্বারপ্রান্তে সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বকে মডেল রেখে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।  পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশেও ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হবে।  ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে আনা হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে সেবা।  যার কারণে সরকারি কাজে এসেছে গতি। 
সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন, বাস্তবায়ন এবং তদারকিতে ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করছে সরকার।  সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় লেগেছে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া।  যার কারণে দুর্নীতি কমেছে এবং বেড়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।  মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, সরকারি অফিস-আদালত, স্থানীয় পৌরসভা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে ই-সেবা।  বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল দেয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় সেবা এখন তথ্য প্রযুক্তির সেবায় গ্রহণ করতে পারছে মানুষ। 
২০০৮ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ শুরু করেন, তার আগের সরকারের আমলে বাংলাদেশ পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল৷ এখন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষের সময়, অর্থ-দুর্নীতি সবই কমে এসেছে৷ আগে কিছু করতে হলে মানুষকে শারীরিকভাবে সেখানে উপস্থিত হতে হতো৷ এখন অটোমেশনের ফলে শারীরিক উপস্থিতি যেমন কমছে, তেমনি দুর্নীতিও কমছে৷ গত ৯ বছরে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, দুর্নীতির সূচক অনেকটা সম্মানজনক জায়গায় এসেছে বাংলাদেশ।  সবই সম্ভব হয়ে সরকারি সেবা ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনার জন্য।  আগে এটিএম কার্ড ছিল না, মোবাইল ব্যাংকিং ছিল না৷ এখন ৫ কোটিরও বেশি মানুষ অনলাইন ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছেন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ স্থাপনের মাধ্যমে৷ ব্যাংকিং সেক্টরে এখন অর্ধেক লেনদেন অনলাইনে হচ্ছে।  মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে।  তেমনি করে কোটি কোটি টাকা রেমিট্যান্স আসছে ডিজিটাইজড সিস্টেমে। 
এক কথায় তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ার পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক চিত্র।  পাল্টাচ্ছে মানুষের জীবনমান।  সরকারি সেবায় গতি ও স্বচ্ছতা বাড়ায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দূর্বার গতিতে।