Tuesday, October 2, 2018

মানুষকে মানুষ মনে করতেন না তারেক রহমান

নিউজ ডেস্ক: ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী অথবা সাধারণ মানুষ। কাউকেই মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতেন না তারেক রহমান। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যদি কেউ তার কাছে তদবির নিয়ে আসতো সেই মানুষের সাথে বাড়ির চাকরের মতো ব্যবহার করতেন তারেক রহমান। বর্তমানে অবসরে থাকা সংস্কারপন্থী বিএনপির এক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ের সত্যতার নিশ্চয়তা পাওয়া গিয়েছে।

বয়োজ্যেষ্ঠ সেই নেতা বলেন, তারেক রহমানকে আমি খুব কাছ থেকে চিনতাম। বলতে গেলে আমার হাতেই বড় হয়েছে তারেক রহমান। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে অহংকার ও দম্ভের প্রবণতা প্রতীয়মান ছিলো। তারেকের বাবা সে সময়ে ছিলেন প্রেসিডেন্ট। একদিন জিয়াউর রহমানের বাসায় তৎকালীন ডাক্তার এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মিটিংয়ে বসেছিলেন। এ সময়ে তারেক রহমান বি. চৌধুরীর সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে চান। কিন্তু বি. চৌধুরী কাজের কথা বলে খেলতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার মাথায় ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন তারেক। সঙ্গে সঙ্গে বি. চৌধুরীর মাথা থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করে। এটা আমার নিজ চোখে দেখা। এছাড়া জিয়াউর রহমানের কাজের লোকদের গায়ে সব সময় হাত তুলতেন তারেক রহমান। তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে এতো বেশি মারধর করেছেন যে, এক সময় কোকো প্রতিবন্ধী হয়ে যায়।
তারেক রহমানের আচার-ব্যবহার আরো খারাপ হতে শুরু করে যখন ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন। তখন তারেক রহমান যুবক। এসময় তার অত্যাচারে কোনো মেয়েই টিকতে পারতো না। যখন তখন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে থেকে মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে এসে ধর্ষণ করতো তারেক। বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান হবার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতো না। বিএনপির কোনো নেতা এমনকি মির্জা ফখরুল সাহেবও কখনোই তার মেয়েকে নিয়ে খালেদা জিয়ার বাসভবনে আসতেন না। একবার খালেদা জিয়ার বিশেষ অনুরোধে তিনি বাসভবনে তার মেয়েকে নিয়ে আসার পর, তারেক রহমান সরসরি মির্জা ফখরুলকে বলেন যদি ‌’মন্ত্রী হতে চান তাহলে আপনার মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিতে হবে।’ তারেক রহমানের এ কথায় লজ্জায়-ভয়ে আর কখনোই মেয়ে নিয়ে তারেক রহমানের সামনে আসেননি মির্জা ফখরুল।
তারেক রহমান ধারণার চেয়ে অতি মাত্রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর। এতো দিনে তিনি মদ, জুয়া ও দুর্নীতিতে পারদর্শী হয়ে ওঠেছিলেন। তিনি যেন প্রতিটি মন্ত্রী থেকে কমিশন নিতে পারেন তার জন্য তৈরি হয়েছিলো হাওয়া ভবন। এছাড়া গাজীপুরে তারেক রহমানের জন্য তৈরি করা হয় খোয়াব ভবন। হাওয়া ভবন থেকে জনগণের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে খোয়াব ভবনে নারীদের সঙ্গে নগ্ন লীলায় মেতে থাকতেন তারেক রহমান।
সংস্কারপন্থী উক্ত বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা আরো বলেন, ক্ষমতা মানুষকে কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে যায় তার জলজ্যান্ত প্রমাণ তারেক রহমান। আজ বিএনপির দুরাবস্থার জন্য অনেকাংশেই তারেক রহমান দায়ী। তিনি যদি মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন বা মনের ভেতর হিংসা না রাখতেন তবে হয়তো বিএনপির এ পরিণতি হতো না।
উল্লেখ্য, অর্থ পাচারের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাত বছর কারাদণ্ড প্রদান ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছিলো হাইকোর্ট। সাজা খাটার ভয়ে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এদিকে লন্ডনের একটি নাইটক্লাবে অতিরিক্ত মদ্যপানে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে কয়েকজনের সাথে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়েছিলেন তারেক। ক্লাব কর্তৃপক্ষ তারেকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে চাইলে পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তার সুরাহা করেন তিনি। তারেক হাওয়া ভবন থেকে টাকা পাচার করে সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়া ও লন্ডনে বিশাল অট্টালিকা করেই ক্ষান্ত হননি। অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা থেকে শুরু করে মানব পাচার এমন কোনো অপরাধ নেই যেটি তারেক করেননি।

No comments:

Post a Comment