Sunday, October 7, 2018

নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রীর অবদান

নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়- এ গভীর উপলব্ধি থেকেই বর্তমান সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মক্ষেত্রে অবাধ প্রবেশ ও নীতি নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
সরকারের গত ৯ বছরের নিরন্তর প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশে নারী শিক্ষার হার ৫০ দশমিক ৫৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম। নারী-পুরুষ সমতায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ১ম স্থানে রয়েছে।
তৃণমূল থেকে উচ্চতর অফিস কক্ষ সব খানেই প্রতিনিয়ত নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে বাংলার আজকের নারী। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যে বিশ্বাসী তা আবারও প্রমাণিত হলো।
নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৯৭৩ সালের ১ম সংসদে মাত্র ১৫ জন নারী সংসদ সদস্য ছিল, কিন্তু বর্তমানে সংসদে ৭২ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছে যার মধ্যে ২২ জন সরাসরি প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান সংসদে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, স্পীকার এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ ৪ জন মন্ত্রী নারী।
২০১১ সালে জাতীয় ‘নারী উন্নয়ন নীতি’ প্রণয়ন করা হয়েছে, যেখানে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নে অধিক গুরুত্বারোপ দেয়া হয়েছে। সরকারী প্রাইমারী স্কুলে ৬০% সংরক্ষিত কোটা নারীদের জন্য রাখা হয়েছে। দেশের রপ্তানি খাত পোশাক শিল্পে নিয়োজিত ৪০ লাখ শ্রমিকের ৭৬% ই নারী। নারী শ্রমিকদের মাধ্যমেও রেমিট্যান্স লাভ করছে বাংলাদেশ। প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমানে ছেলে-মেয়ের অনুপাত প্রায় সমান। ১০ বছর আগেও মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে অনুপাত ছিল ৬৫ ও ৩৫ শতাংশ। কিন্তু বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে ছেলে ও মেয়ের অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৪৭ ও ৫৩ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, গ্রামাঞ্চলে প্রায় ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০১৫ সালের ৬২% থেকে ২০১৭ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৭% এ। আর ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার একই সময়ে ২৩.৮% থেকে কমে হয়েছে ১০.৭%। ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের অবসান ঘটানোর ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। বর্তমান সরকার ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মক্ষম করার মধ্য দিয়ে এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ শক্তিতে কাজে লাগাতে সক্ষম হচ্ছে।
নারীর ক্ষমতায়নে অনন্য অবদানের জন্য জাতিসংঘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন” ও “এজেন্ট অব চেঞ্জ এ্যাওয়ার্ড” এ ভূষিত করেছে। সম্প্রতি গ্লোবাল উইমেনস সামিট অব উইমেনস-২০১৮ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল উইমেনস লিডার এ্যাওয়ার্ড এ ভূষিত করা হয়েছে। এ মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগামী ভূমিকা বিশ্বে জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

No comments:

Post a Comment