Monday, December 24, 2018

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার দুর্বল ও বিভ্রান্তিকর

নিউজ ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ১৭ ডিসেম্বর ইশতেহার ঘোষণা করেছিলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার পর্যালোচনায় বিভিন্ন অসংগতির বিষয়ে মন্তব্য করেছেন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এছাড়া ইশতেহারটিকে রীতিমতো সাধারণ মানুষের সঙ্গে ধোঁকাবাজির সামিল বলেও মনে করেন তিনি।
ইশতেহারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নির্বাচিত হলে সরকার প্রথম বছরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়াবে না। তার মানে তারা দ্বিতীয় বছর থেকেই দাম বাড়াবে। সঙ্গে তারা ইশতেহারে লিখেছেন সর্বোচ্চ ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়াবে না। যেখানে বাংলাদেশের প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী পরিবার ১০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তার মানে তারা সবার বিদ্যুতের দাম বাড়াবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারের পর্যালোচনায় দেখা যায় এর বেশ কিছু দিক পারস্পারিক সাংঘর্ষিক এবং একই সাথে অনেক বিষয়ই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। ঐতিহ্যগতভাবে যে কোনো নির্বাচনী ইশতেহার স্বপ্নদর্শী হয়ে থাকে এবং ইশতেহারের প্রতিশ্রুত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকে। এই বিষয়গুলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে অনুপস্থিত হবে বলে প্রতীয়মান। তাদের ইশতেহার প্রমাণ করেছে যে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কিছু সস্তা প্রতিশ্রুতি দেয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।
ইশতেহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বলা হয়নি কেমন করে এই ভারসাম্য তারা নিশ্চিত করবেন। বিশ্বের যেখানেই সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চা রয়েছে সেখানেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত ব্যবস্থারই প্রতিফলন দেখা যায়। অপরদিকে বিরোধীদল থেকে ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন করলেই কিন্তু ক্ষমতার ভারসাম্য আসে না। তাছাড়া স্বাধীনতার পর গত ৪৭ বছরে বাংলাদেশের সংসদীয় ব্যবস্থা একটি ঐতিহ্য এবং পরিপক্বতার মধ্য দিয়ে আজ এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। বর্তমান ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের চর্চায় কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ঐক্যফ্রন্টের ক্ষমতার ভারসাম্যের যে অঙ্গীকার তা অগ্রহণযোগ্য এবং এক ধরনের চমক সৃষ্টি করার সস্তা প্রচেষ্টা বলে অনুমেয়। ঐক্যফ্রন্ট সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার/বাতিলের কথা বলেছে। অথচ ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন নিজেই ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় এ অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
ইশতেহারে ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, তারা যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচারকার্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীদের সাথে নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন করছে। এই প্রার্থীদের অনেকেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে এই বিচারকার্য চালিয়ে নেয়ার যে প্রতিশ্রুতি ঐক্যফ্রন্ট দিয়েছে তা স্ববিরোধী এবং হাস্যকর। ধারণা করা যায়, দেশের আপামর জনতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার কারণে কেবলমাত্র ভোট পাওয়ার বিষয়কে মাথায় রেখে ঐক্যফ্রন্ট তাদের ইশতেহারে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছে। মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের তালিকা প্রণয়ন করার বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা বাংলাদেশে ইতোমধ্যে এই তালিকা অনেক যাচাই বাছাই পূর্বক প্রণয়ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেই মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করায় বিতর্কিত হয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের মন জয় করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। অথচ এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রক্রিয়ার শুরুটা হয়েছিলো ২০০৬ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন আইসিটি অ্যাক্ট এর খসড়া প্রণয়নের মধ্য দিয়ে। তাছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ব্যাখ্যা তা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে নেতিবাচক ভাবে প্রচার করা হয়েছে। এই আইন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করে না। বরং তাদের অধিকার রক্ষা করার জন্য করা হয়েছে। এ ধরনের প্রতিশ্রুতি কেবল মাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার একটি হীন পন্থা বলে সহজেই বোধগম্য। দেশের সংবাদ মাধ্যম এবং টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন খবর ও টকশো দেখলেই এটা প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা তাদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কোনো ভাবেই এই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে না।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের ইশতেহারে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছে। অথচ এবার সংসদ নির্বাচনে তাদের নারী প্রার্থীর নগণ্য সংখ্যা দেখলেই যে কেউ বিশ্বাস করবে তারা আসলে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছে। অথচ এবার সংসদ নির্বাচনে তাদের নারী প্রার্থীর নগণ্য সংখ্যা দেখলেই যে কেউ বিশ্বাস করবে তারা আসলে নারী ক্ষমতায়নে কোনো ধরনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে না। রোহিঙ্গা সমস্যা, তিস্তার পানি বণ্টন, ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক যে অঙ্গীকার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছে তা ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার বাস্তবায়ন করে চলছে এবং এই প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। কাজেই এই অঙ্গীকারের মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই বরং তা এক ধরনের ধার করা চিন্তা-ভাবনা বলে সহজেই অনুমেয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর অঙ্গীকার করা হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে। এ ধরনের ইউটিলিটি সার্ভিসের দাম মূলত: দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের উপর উঠানামা করে। এ ধরনের অঙ্গীকারের পিছনে প্রচুর হোম-ওয়ার্ক প্রয়োজন আছে যা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছে বলে মনে হয় না।
সার্বিকভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে ইশতেহার তা জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতায় যাওয়া কেন্দ্রিক একটি ইশতেহার হয়েছে। এর মধ্যে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে যার বাস্তবায়নের কোনো রোড ম্যাপ দেওয়া হয়নি। এটি সম্পূর্ণ জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারটি খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হবে না। স্থবির কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের সমন্বয়ে ইশতেহারটি করা হয়েছে। সুতরাং তাদের ইশতেহারটিও স্থবিরতার চিত্র মাত্র। বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ঐক্যফ্রন্ট যে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে সেটি তাদের ইশতেহারে প্রকাশিত হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের প্রতারণায় সরে দাঁড়াচ্ছেন ক্ষুব্ধ রনি(ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: পটুয়াখালীর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটার পর, প্রথমে আওয়ামী নেতাদের দায়ী করে তার (রনির) সাঙ্গ-পাঙ্গ দিয়ে গলাচিপা থানা ঘেরাও করার ফোনালাপের ফাঁসের পর বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন গোলাম মাওলা রনি।
বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) পটুয়াখালীর গলাচিপা স্কুল মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান গোলাম মাওলা রনি।
এ সময় গোলাম মাওলা রনি বলেন, আমার স্ত্রীর ওপর হামলা করেছিলো বিএনপির লোকজন। আমার গাড়িও ভেঙে ফেলে তারা। কিন্তু এরপরও আমি সব কিছু সহ্য করে আমার কর্মীদের থানায় গিয়ে হট্টগোল বাঁধিয়ে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে মামলা করতে বলি। কারণ আমি আওয়ামী লীগ করলেও এখন বিএনপির লোক। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিএনপির মানুষগুলো এখনো আমাকে আপন করে নিতে পারছে না। তারা পদে পদে আমাকে লজ্জা দিচ্ছে। আমার কাজে বাধা দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় নির্বাচন করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছি না।https://youtu.be/GRbHUMC9jRg 
এ প্রসঙ্গে মনোনয়ন যুদ্ধে বাদ পড়া দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেন, গোলাম মাওলা রনি অনেক দিন থেকেই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। যার কারণে তিনি ইতোমধ্যে সিইসিকে চিঠি দিয়ে সরে আসার সিদ্ধান্তের ব্যাপারটি জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত, তার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। তাকে মনোনয়ন দেয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এরপরেও আমরা দলের স্বার্থে গোলাম মাওলা রনিকে সমর্থন করছি। কিন্তু এলাকায় রনি ক্ষমতালোভী ও দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিতি। বর্তমানে পটুয়াখালীর জনগণ তাকে চায় না। আর এ ঘটনা বুঝতে পেরেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। গোলাম মাওলা রনিকে নির্বাচন থেকে সরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বর্তমানে বিএনপি থেকে নমিনেশন নিলেও গোলাম মাওলা রনি জনসাধারণের সমর্থন না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আশা করবো, হার না মেনে রনির উচিত হবে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। অবশ্য অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে রনিকে একটু ভুগতে হবে।


যশোরে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নে বিক্ষুব্ধ ভোটাররা

নিউজ ডেস্ক: যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে দু’টিতেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠনের নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে হতাশ এলাকার ভোটার ও মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে বিএনপি জোট স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।
এ প্রসঙ্গে একজন ভোটার বলেন, বাংলাদেশের কনসেপশনে যারা বিশ্বাস করে না তারা কিভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে? অন্য আরেকজন ভোটার বলেন, দেশ-জাতির যে অগ্রগতি এটাকে সমুন্নত রাখতে গেলে এদেরকে বর্জন করা একান্তভাবে প্রয়োজন।
২০১৩-১৪ সালে দেশব্যাপী যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিলো জামায়াত শিবির কর্মীরা, তার থেকে বাদ যায়নি যশোর জেলাও। জেলার মনিরামপুর, ঝিকরগাছাসহ আরো কয়েকটি স্থানে চলে নাশকতা, পেট্রোল বোমা ছোঁড়ার ঘটনা। সাধারণ মানুষের মন থেকে সেই বিভীষিকা মুছে যায়নি এখনও।
এরইমধ্যে এখানকার দুটি আসন-ঝিকরগাছা-চৌগাছা নিয়ে গঠিত যশোর-২ আসনে জামায়াত নেতা এবং মনিরামপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৫ আসনে আরেক স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জমিয়তে উলামা আল ইসলামীর নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি জোট। এই মনোনয়নকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।
বাংলাদেশের ধারণাতেই যারা বিশ্বাস করে না, তারা কী করে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাধারণ ভোটাররা। জাতির অগ্রগতি সমুন্নত রাখতে এদের বর্জন করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
বৃহত্তর যশোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উপ-অধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম জানান, একাত্তরের এগারো ডিসেম্বর টাউন হল মাঠে এক সমাবেশে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ জামায়াতের পাশাপাশি মুসলিম লীগ, নেজামী ইসলামী এবং জমিয়তে উলামাকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। এখন তাদের মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি জোট জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে বলে মনে করেন তিনি।
যশোরের পুলিশ সুপার মইনুল হক জানিয়েছে, নির্বাচনে জামায়াত-শিবির নাশকতা করতে পারে সে বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছেন তারা। ২০১৩-১৪ সালের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুত যেকোন সহিংসতা রুখে দিতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি তার ইশতেহারে ঘাতক-দালালদের বিচারের দাবি তোলেনি, একাত্তরের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের তারা প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আমরা আশঙ্কা করি।’
এদিকে পুলিশ সুপার মইনুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন তারা। তবে জামায়াত-শিবির নাশকতা করতে পারে অতীতের এমন অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ তৈরিতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

নির্বাচনী পরিস্থিতি বিগড়ে দিতেই জনসমাবেশের উদ্যোগ ঐক্যফ্রন্টের

নিউজ ডেস্ক: সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিগড়ে দিয়ে নির্বাচন বানচালের মতো ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বিএনপি। সম্প্রতি নির্বাচনী সহিংসতা সৃষ্টি ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে আইএসের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের বৈঠকের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপির সহিংসতাপূর্ণ আচরণ বেড়েছে। আর এই তৎপরতাকে চাঙ্গা করে সরকারকে চাপে ফেলতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার ডাক দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই দিন আগে আগামী ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
সূত্র বলছে, সম্প্রতি গণমাধ্যমের বিভিন্ন শাখার খবরে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন আইএসের গোপন ১১টি বৈঠকের খবরের সূত্র ধরে বেরিয়ে এসেছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর একটি- শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নস্যাতের পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বিএনপি-জামায়াত। এর প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করছে আইএসআই।
সূত্র বলছে, তারেক রহমানের ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ২৭ ডিসেম্বরকে বেছে নেয়া হয়েছে। যদি সমাবেশে তৃণমূলের বড় সমাগম ঘটে তবে নির্বাচনী পরিবেশ অনিরাপদ দাবি করে সহিংসতার মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলবে ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপি-জামায়াত।
যদিও নির্বাচনী পরিবেশকে স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘জনসমাবেশ’ প্রস্তাব ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, পরিকল্পনা যাই থাকুক তা খুব শক্ত হাতে দমন করে নির্বাচনে সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। আর তারও আগে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ নিয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত দেয়া সরকারের। কেননা, নির্বাচন কেন্দ্রিক বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আইএসের বিষয়টি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ।
উল্লেখ, নির্বাচনের আগে জনসমাবেশে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জনসভা করার কারণ জানতে চাইলে ডা. কামাল বলেছেন, ২৭ ডিসেম্বর জনসভা করবোই, পারলে বন্ধ করুক!

দুই-একদিনের মধ্যে নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি নির্বাচন বর্জন করবে শোনা গেলেও কবে বা কখন করবে তা জানা যাচ্ছিলো না। মূলত, এ বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা ঐক্যমতে আসতে পারেননি। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার কর্মীদের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে বলেছে।

ড. কামাল হোসেন বলেছেন, মাটি কামড়ে থাকতে। ভোটের দিন অভাবনীয় কিছু হবে। কিন্তু বিএনপির প্রার্থীরা মাঠ থেকে চাপ দিচ্ছে। মাঠে হাতেগোনা কয়েকজন বাদে বিএনপির সব প্রার্থীরাই কেন্দ্রীয় নেতাদের খবর পাঠাচ্ছেন যে, বিএনপির জন্য নির্বাচনের মাঠে থাকা ‘অসম্ভব’ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন কর্মীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সামনে তিনটি বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। এগুলো হলো:
১. নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি: বিএনপির সামনে প্রথম এবং সহজ বিকল্প হলো শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা। যে ফলাফলই হোক তা মেনে সংসদে গিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা। এর ফলে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পাবে বিএনপি। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সংসদীয় গণতন্ত্রে একটি ভালো বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
২. ভোটের আগেই ভোট বর্জন: বিএনপির বেশির ভাগ নেতাকর্মী এখন এই পথের কথাই ভাবছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছে, ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোন দিন নির্বাচন বর্জনের ডাক আসতে পারে। নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায়। কিন্তু সময় যতোই গড়াচ্ছে, ততই আন্দোলনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে। বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ বলছে, যেকোন সময় ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করা যাবে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নেই বলেই মনে করছেন বিএনপির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ। সেক্ষেত্রে নতুন আন্দোলন বিএনপিকে নতুন সংকটে ফেলবে।
৩. ভোটের পর আন্দোলন: বিএনপির অধিকাংশ শরিকরা এখন এই বিকল্প নিয়েই আগ্রহী। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা বলছেন, নির্বাচনে জিততে গেলে হয়তো সরকার নির্বাচনে কারচুপি করবে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে ভোট কারচুপির প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুললে তা জনসমর্থন বেশি পাবে। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ নেতারা এ ব্যাপারে সায় নেই। তারা মনে করছে, নির্বাচনের পর সরকার আরো কঠোর হবে। এখনই বিএনপি রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না। আর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কোন সুযোগই দেবে না।
বিএনপির সামনে খোলা এই তিন পথের কোন পথে বিএনপি যাবে- তা দেখা যাবে অল্প ক’দিনের মধ্যেই।

নির্বাচন বানচালে ‘৫ অধ্যায়ের নীলনকশা’ তারেকের(ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন আইএসআই’য়ের গোপন ১১টি বৈঠকের খবরের সূত্র ধরে নতুন নতুন অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর একটি- শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নস্যাতের জন্য তারেক রহমানের ৭ অধ্যায়ের নীলনকশা। এই ৭টি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বিএনপি-জামায়াত। এর প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করছে আইএসআই।

অনুসন্ধানী তথ্যের ভিত্তিতে সূত্র বলছে, বাংলাদেশের জন্য আগামী সাতদিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সাত দিন নির্বাচন বানচালের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে বিএনপি-জামায়াত। ফলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা এখন একপ্রকার চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই তৎপরতা রুখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুত।
নির্বাচনে তারেক রহমানের পরিকল্পনাগুলো হচ্ছে-
১. নির্বাচনের আগে বেশ কিছু ভিআইপি এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হিটলিস্টে রাখা হয়েছে। যাদের উপর আক্রমণ করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে এরকম বেশ কিছু ব্যক্তির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
২. সরকারি ভবন, থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা টার্গেট করা হয়েছে। নির্বাচন বানচালের জন্য এসব ভবনে আক্রমণের মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
৩. একযোগে ঝটিকা আন্দোলনের একটি পরিকল্পনার নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে দুই তিনদিনের একটি সর্বাত্মক এবং ঝটিকা আন্দোলনের চেষ্টা চলবে। যে আন্দোলন হবে সহিংস এবং নাশকতামূলক।
৪. হলি আর্টিজান হামলার নকশা কাজে লাগিয়ে বিদেশীদের টার্গেট করা হতে পারে বলে তথ্য এসেছে। এর মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করা হবে যাতে নির্বাচন করাই অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে বাংলাদেশ সরকার।https://youtu.be/QywfBLf8A98৫. 
ভোটের দিন অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভোটকেন্দ্রে আক্রমণ, ব্যালট পেপার পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আক্রমণকারীদের ‘নৌকা’ প্রতীকের ব্যাজ এবং মুজিব কোট পরিয়ে, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ানো হবে। এর প্রধান লক্ষ্য, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত করা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, বিএনপি-জামায়াতের এমন পরিকল্পনা নস্যাৎ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে আলাদা আলাদা একাধিক টিমের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে বাহিনীর সদস্যরা। যেকোন মূল্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক কু-পরিকল্পনা রুখে দেয়া হবে।

Friday, December 21, 2018

মার্কিন প্রশাসনের সুদৃষ্টি ফেরাতে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে জামায়াত

নিউজ ডেস্ক: নিবন্ধন হারানো স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী তাদের স্বার্থ রক্ষায় একটি মার্কিন লবিস্ট ফার্মকে নিয়োগ দিয়েছে। সম্প্রতি জামায়াতকে ‘বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের জন্য ঝুঁকি’ বলে ঘোষণার প্রেক্ষিতে জামায়াত মার্কিন প্রশাসনের কোনও নীতি যেন তাদের বিপক্ষে না যায় সেটি নিশ্চিত করার জন্য এই নিয়োগ দিয়েছে। জামায়াত নিউইয়র্কভিত্তিক পিস অ্যান্ড জাস্টিস অর্গানাইজেশন (ওপিজে) লবিস্ট প্রতিষ্ঠান হাচ ব্ল্যাকওয়েল স্ট্র্যাটেজিসের (এইচবিএস) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। সে অনুযায়ী এমন কোনও পরিবেশ তৈরি যাতে না হয় যেখানে জামায়াতকে বাংলাদেশে বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঝুঁকি হিসেবে অভিহিত করা হয়, তা রোধ করা।
এ কাজের জন্য হাচ ব্ল্যাকওয়েল স্ট্র্যাটেজিস ঢাকায় একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর প্রস্তাব করেছে। ব্ল্যাকওয়েলের নির্বাহী ভাইস চেয়ার গ্রেগ হার্টলে, প্রিন্সিপ্যাল জন এরিয়াল এবং সিনিয়র উপদেষ্টা সিঙ্গেলটন ম্যাকএলিস্টারকে নিয়ে গঠিত টিম জামায়াতের জন্য কাজ করছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, লবিস্ট ফার্ম গত অক্টোবর থেকে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামায়াতের পক্ষে কাজ করবে। এ জন্য তাদের ১ লাখ ৩২ হাজার ডলারসহ অন্যান্য খরচ দিতে হবে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৩০ জুলাইয়ে দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী এইচবিএস ওপিজেকে পেশাগত সেবা প্রদান করবে।’ ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসে ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রশাসনে যেন উল্লিখিত উদ্দেশ্যগুলো হাসিল করা যায় তার জন্য এইচবিএস ওপিজেকে সঙ্গে নিয়ে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করবে।’
এইচবিএস মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করবে জামায়াত সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনা কী।
তবে জামায়াতের লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে অন্তত দুই দফা তারা মার্কিন লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল।
ওপিজে ২০১৪ সালে ক্যাসিডি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয় এবং ওই প্রতিষ্ঠান মার্কিন সরকারের কাছে জমা দেওয়া রিপোর্টে উল্লেখ করেছিল, ‘জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনকারীরা পিস অ্যান্ড জাস্টিস অর্গানাইজেশনের পরিচালক ও কর্মচারীরা এবং তাদের মিশন হচ্ছে দলের ও তাদের কর্মীদের উপকার করা।’
৫০ হাজার ডলারসহ অন্যান্য খরচ বহনের বিনিময়ে জামায়াত তিন মাসের জন্য ক্যাসিডিকে নিয়োগ দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
ক্যাসিডির ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে নিন্দা জানিয়ে একটি কংগ্রেশনাল রেজুলেশন বের করার কাজ করবো।’
সরকারের নীতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেওয়ার জন্য একটি পশ্চিমা মুখপাত্রকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার জন্য একটি মিডিয়া প্ল্যান তৈরি করার কাজ করেছিল ক্যাসিডি। জামায়াত একই বছর কেগ্লোবাল নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানকেও নিয়োগ দিয়েছিল।

গোলাম মাওলা রনিকে প্রতিহতের ঘোষণা ‘পটুয়াখালী-৩’ বিএনপির(ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাংসদ গোলাম মাওলা রনি। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে স্থানীয় বিএনপির প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন তিনি। এমনকি রনিকে পটুয়াখালী-৩ আসনে যেকোন মূল্যে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী।

গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা নিয়ে পটুয়াখালী-৩ আসনটি আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে যান গোলাম মাওলা রনি। হয়ে যান সংসদ সদস্য। এরপর ব্যক্তি আক্রোশ থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মেতে ওঠেন তিনি। চলে হামলা, মামলা আর নির্যাতন। তার নানা প্রকার দৌরাত্ম্যের কারণেই পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারও হন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে গোলাম মাওলা রনি ব্যক্তি আক্রোশের বশবর্তী হয়ে দল-মত নির্বিশেষে অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন করেন। তার অত্যাচারে গলাচিপা ও দশমিনা জনপদ অতিষ্ঠ ছিলো। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি মসজিদের ইমামকেও প্রহার করেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, ক্ষমতায় থাকতে রনির সহযোগীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের অনেকে। তাই এখন তার পক্ষে কাজ করতে নেতাকর্মীরা অনাগ্রহী।এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান সাজু বলেন, ‘গলাচিপা ও দশমিনা নির্বাচনী এলাকায় তিনি যখন সংসদ সদস্য ছিলেন, সেসময় অন্যায়ভাবে আমাদের বহু নেতাকর্মীকে অত্যাচার করেছে। তার কর্মীদের দ্বারা বাড়িঘর লুটপাটেরও শিকার হয়েছে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। সুতরাং তিনি খোলশ পরিবর্তন করলেই তাকে আমরা সমর্থন দিতে পারি না। এদিকে গলাচিপা-দশমিনা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীরা বলছেন, তারা চাইলেও মাঠ পর্যায়ের বিএনপি নেতা কর্মীরা রনিকে চায় না। এমন বাস্তবতায় কেন্দ্রীয় বিএনপি চাইলেও গোলাম মাওলা রনিকে সমর্থন করা সম্ভব হচ্ছে না।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে জামায়াত, কৌশল দেখছে বিশ্লেষকরা

নিউজ ডেস্ক: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার স্থগিত নিয়ে বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলো যুদ্ধাপরাধীদের দল খ্যাত জামায়াতে ইসলামী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলের নেতারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে মানবতাবিরোধীদের বিচার করা হবে। জামায়াতের এমন প্রতিশ্রুতিকে ‘জোকস অব দ্য ইয়ার’ বলে তাচ্ছিল্য করছে অনেকেই। আবার কেউ কেউ বলছে, ক্ষমতায় এলে হয়তো তারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’ বলে চালিয়ে দেবে।
বিগত সময়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জামায়াতের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতারই ফাঁসি হয়েছে। কয়েকজন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন। এদিকে ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনী ইশতেহারে জানিয়েছে, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে।’ তবে চলমান যে অবয়বে, পদ্ধতিতে কার্যক্রম চলছে, তাতে যোগ-বিয়োজন হবে কিনা এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু ইশতেহারে বলেনি ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার অনুযায়ী জামায়াতের অঙ্গীকার সম্বন্ধে জানতে নেতারা এসব বিষয় জানিয়েছেন।
জামায়াত নেতারা বলছেন, বিদ্যমান যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আছে তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখে ‘প্রকৃত’ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে জামায়াতের।
এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সিলেট মহানগর দক্ষিণের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি কী আমি এখনও জানি না, তবে আমরা ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত থাকবে। বিচার করবো ইনশাল্লাহ। যুদ্ধাপরাধীদের আইনে যারা পড়বে, ‘তাদেরও’ বিচার করবো।’
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘জামায়াতের কৌশল বোঝা দুষ্কর। যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে স্বীকৃত জামায়াত নেতারা যখন বলছেন, তারা ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে তখন তাদের সেই অঙ্গীকারে কোন বিশেষ উদ্দেশ্য আছে কিনা তা ভাববার অবকাশ রয়েছে।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক অনেকটা রসিকতা করে বলেন, এমনও হতে পারে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি বলে চালিয়ে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, মীর কাশেম আলীর এবং সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন সাবেক আমির গোলাম আজম, সাবেক নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অনেকে। এই নেতাদের দলীয় ও সাংগঠনিকভাবে ‘সম্মানের’ সঙ্গেই বিবেচনা করে আসছে জামায়াত এবং দলটির অনুজ ছাত্র শিবির।

দ্বিতীয় ফোনালাপে ভাংচুরের ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করলেন রনি

নিউজ ডেস্ক : পটুয়াখালীর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটার পর, প্রথমে আওয়ামী নেতাদের দায়ী করে তার (রনির) সাঙ্গ-পাঙ্গ দিয়ে গলাচিপা থানা ঘেরাও করার ফোনালাপের ফাঁসের পরও সিইসিকে উক্ত ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে চিঠি পাঠান রনি।
চিঠিতে রনি লিখেন, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী পটুয়াখালী-৩ সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী। গত ১২ই ডিসেম্বর আমি নির্বাচন উপলক্ষে সপরিবারে নির্বাচনী এলাকায় এসে এক ভীতিকর ও প্রাণ সংহারী পরিবেশের মধ্যে পড়েছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থানা-পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় আমাকে সপরিবারে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা ভোটারদেরকে মারধর করছে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং স্থানীয় নির্বাচনী অফিস গুলোতে অগ্নিসংযোগ করছে প্রকাশ্য। তারপর উল্টো মামলা করে পুলিশ দিয়ে লোকজনকে গ্রেফতার করে চলেছে এবং অনেককে এলাকা ছাড়া করেছে।’
আমি শত চেষ্টা-তদ্বির করেও স্থানীয় প্রশাসন এবং ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের কোনো সাহায্য তো দূরের কথা-ন্যূনতম সাড়া-শব্দ পাচ্ছি না। অবস্থা দৃশ্যে মনে হচ্ছে- আপনার নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন গলাচিপা-দশমিনার আওয়ামী লীগ প্রার্থী যিনি কি না আপনার ভাগিনা, তার যোগসাজশে এই জনপদে আমি ও আমার পরিবারের জন্য অসংখ্য মৃত্যুফাঁদ পেতে রেখেছে।’
আপনার ভাগিনা এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলাকাতে ইতিহাসের ভয়াবহতম নির্বাচনী সন্ত্রাস এবং মর্মান্তিক অমানবিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। তারা গত ১৫ ডিসেম্বর আমার স্ত্রীর গাড়িতে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করেছে এবং গাড়ির মধ্যে থাকা ১০ থেকে ১২ জন নারীকে লাঞ্ছিত করেছে। পুলিশ কোনো সাহায্য তো করেইনি বরং উল্টা হুমকি-ধামকি দিয়ে আমার স্ত্রীসহ অন্যান্য মহিলাকে থানা থেকে বের করে দিয়াছে।’
আপনার কথা বিশ্বাস করে আমার স্ত্রীর লন্ডন প্রবাসী বোন-ভগ্নিপতি, কিশোরী কন্যা ও বালক পুত্রকে নিয়ে নির্বাচন করতে এসেছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন পালা করে আমার বাড়ির সামনে এসে তাণ্ডব চালায়-অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকে, যার কারণে আমার পরিবারের সবাই অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি এবং মৃত্যুভয়ে কাতরাচ্ছি।’
আপনি যদি চান যে, আপনার ভাগিনা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন তবে আমাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করুন। আমি আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক। আমার ও আমার পরিবারের যদি কিছু হয় তবে ব্যক্তিগতভাবে আপনি ও আপনার ভাগিনা দায়ী থাকবেন।’
ইতি
মোঃ গোলাম মাওলা রনি
তাং ১৭-১২-১৮
ইসির নিকট গোলাম মাওলা রনির এমন চিঠির রেশ কাটতে না কাটতেই গোলাম মাওলা রনির আরো একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করে দেয় পটুয়াখালী, গলাচিপা বিএনপির সদস্য নাজমুল ইসলাম। নাজমুল ইসলাম পটুয়াখালী বিএনপির কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত হাসান মামুনের সমর্থক হওয়ায় কল রেকর্ডটি ফাঁস করে দেন। যে কল রেকর্ডে গোলাম মাওলা রনি নাজমুল ইসলামের কাছে স্বীকার করেছেন যে তার স্ত্রীর ওপর হামলার সঙ্গে বিএনপি সরাসরি জড়িত।
গোলাম মাওলা রনি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্দেশেই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজেদের কোন্দলের কারণে ঘটে যাওয়া হামলার দায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উপর চাপিয়ে দেন। কিন্তু উপর্যুপরি ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সারাদেশ ব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে হেরে যাবার ভয়ে এরূপ ঘটনা ঘটিয়ে তার দায় আওয়ামী লীগের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে বিএনপি। এভাবেই বিভিন্ন অপকৌশলের মাধ্যমে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে অনবরত কুৎসা বা অপবাদ রটিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ই ডিসেম্বর, শনিবার নেতাকর্মীদের নিয়ে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব মিয়ার বাড়ি থেকে ফেরার পথে বিএনপি’র মনোনয়ন বঞ্চিত হাসান মামুনের সমর্থকদের দ্বারা গোলাম মওলা রনি’র স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা হয়। পরবর্তীতে, এ হামলার ঘটনাটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত করা হয়েছে মর্মে রনি অভিযোগ করেন এবং স্ত্রীকে মারধোরসহ অলংকার লুটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে থানায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ ১০০জনকে আসামী করে মামলার নির্দেশ দেন। প্রয়োজনে হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে থানা ঘেরাও করার জন্যও তিনি নেতাকর্মীদের আদেশ দেন এবং এ ঘটনার ফলে একটি রাজনৈতিক সুবিধা এসেছে বিধায় এর সদ্ব্যবহার করতে তিনি নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করেন।

হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেন গোলাম মাওলা রনি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে মনোনয়ন বঞ্চিত গোলাম মাওলা রনি ব্যাপক আলোচিত সমালোচিত। আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংসদ ২০০৮ সালে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনেক অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। অল্প সময়ে প্রায় শূন্য দশা থেকে তিনি হয়ে যান কোটি কোটি টাকার মালিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং চাঁদাবাজি-দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রমাণিত হওয়ার মধ্যেই বেসরকারী এক টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিককে মারধরের পর দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে জেল খাটেন সাবেক এই সাংসদ। জেলে বসে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত কাদের মোল্লার ‘উস্তা ভাজি’ নিয়ে বিশেষ কাব্য লিখা নিয়ে আবারো আলোচনায় আসেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক হাস্যরসের মাধ্যমে সমালোচিত হওয়া সাবেক এই সাংসদ আবারো আলোচনা সমালোচনায় আসেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দেন গোলাম মাওলা রনি।
বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করছেন এই নেতা। ঢাকা থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় গেলে সাধারণ মানুষ তাকে বর্জন করে। বেঈমান, দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে গলাচিপা পানপট্টি ইউনিয়নের মানুষ গোলাম মাওলা রনিকে সে এলাকায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহকারী রনিকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি বলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়। গলাচিপা, দশমিনার স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা গোলাম মাওলা রনিকে সুবিধাভোগী হিসেবে বিবেচনা করে নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ ওঠে গোলাম মাওলা রনির তরফ হতে।
গত ১৫ ডিসেম্বর শনিবার গলাচিপা উপজেলায় গোলাম মাওলা রনির স্ত্রীর গাড়িতে হামলা হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি ও তার স্ত্রী। এই ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সঠিক তদন্তের দাবি জানায়।
দলীয় তদন্ত ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় বিএনপি থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় সহযোগিতা না পেয়ে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে নিজের লোক দ্বারা এই সাজানো হামলার ঘটনা ঘটান। তৃণমূল বিএনপির সহানুভূতি অর্জন ও মাঠ গরম করতে এই হামলার ঘটনা ঘটান যা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পর তদন্তে উঠে আসে। চাপে পড়ে অবশেষে গোলাম মাওলা রনি নিজেই স্বীকার করেন এই হামলায় তার দলীয় লোকজন জড়িত।
প্রসঙ্গত, পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে সম্প্রতি।
এ ঘটনার পরপরই গোলাম মাওলা রনি ও গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খানের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। শনিবার তাদের এই কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
এর আগে রনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর নাকি গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সেসময় তার স্ত্রী ও বোনের স্বর্ণালংকারও লুট হয়েছে। শনিবার নেতাকর্মীদের নিয়ে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব মিয়ার বাড়ি থেকে ফেরার পথে রুনুর গাড়িতে এ হামলা হয় বলে রনি অভিযোগ করেছেন।
সেই হামলা চালায়, বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মামুনের সমর্থক সাহাবুদ্দিন, হালেম, সাইদ, সোহেলসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল মেরে ও গাড়ি ভাংচুর করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গোলাম মাওলার রনির গাড়িতে হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য শনিবার গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন গোলাম মাওলা রনি। ফোনে রনি শাহজাহান খানকে বলেন, হাজার হাজার কর্মী নিয়ে গলাচিপা থানায় উপস্থিত হয়ে, ভাঙচুরের সকল দায় ভার আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর ন্যস্ত করতে। তবে বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খান পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত হাসান মামুনের সমর্থক হওয়ায়, তিনি তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে দেন।
পূর্বাপর ঘটনাগুলোর কারণে বিএনপি নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগণ রনিকে অপছন্দ করতেন। এছাড়াও তাকে বাইরে রেখে স্থানীয় বিএনপিতে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী একটি বলয়। এবার নিজ স্ত্রীর গাড়িতে হামলা করিয়ে বিরোধী পক্ষের নামে মামলা দেয়া হীন পরিকল্পনার খবর ফাঁস হওয়ায় এলাকায় ছিঃছিঃ রব উঠেছে। গুটিকয়েক নেতাকর্মীও তার পাশ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বলা চলে, গোলাম মাওলা রনি এখন অনেকটাই একা। অঢেল টাকা খরচ করেও কাউকেই তার পাশে আনতে পারছেন না। জনগণও রয়েছেন মুখ ফিরিয়ে। এতে এলাকায় গুঞ্জন উঠেছে, এবার নির্ঘাত জামানত হারাতে যাচ্ছেন দলবদলে পটু এ নেতা।

খালেদার উপদেষ্টা ইনামের আওয়ামী লীগে যোগদান

আসন্ন নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সাবেক আমলা ইনাম। প্রাথমিক মনোনয়নের তালিকায় তিনি থাকলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত মনোনয়নে বাদ পড়েন তিনি।

Tuesday, December 18, 2018

নাটোর-২ আসন: জনপ্রিয়তা পেতে ‘হামলার অভিযোগ’কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন দুলুপত্নী

নিউজ ডেস্ক: নাটোর-২ (নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলা) আসনে বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর স্থলে নির্বাচন করছেন তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। অন্যদিকে একই আসনে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শফিকুল ইসলাম শিমুল।
সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণায় শিমুল ও দুলুপত্নীর দেখা হলে উভয়ই কুশল বিনিময় করেন। এ সময় শফিকুল ইসলাম শিমুল দুলুপত্নী সাবিনা ইয়াসমিনকে ‘আপা’ সম্বোধন করে নির্বাচনী মাঠে কোন ধরণের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি যেন না হতে হয় সে বিষয়ে সর্বাত্মক আশ্বস্ত করেন।
কিন্তু এর ২ দিনের মাথায় নির্বাচনী মাঠে দুলুপত্নী তার প্রচারণা ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি নিজ দলের কর্মীদের দিয়ে তার গণসংযোগে হামলা করিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ ঘটনায় নিজে উদ্যোগী হয়ে শফিকুল ইসলাম শিমুল তার নির্বাচনী এলাকায় একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে হামলার তথ্য উদঘাটন করেছেন। জানা গেছে, গণসংযোগ চলাকালীন সময়ে হামলার পরিকল্পনাটি স্বয়ং দুলুপত্নী সাবিনা ইয়াসমিনের নিজের। যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তারা প্রত্যেকেই বিএনপি নেতাকর্মী।
তবে এই হামলার দায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুলের ওপর চাপাতে একটি কৌশলও করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বিএনপি কর্মীদের নিয়ে তার নিজ গণসংযোগে হামলা চালায়। যাতে এই হামলার দায় সহজেই শিমুলের ঘাড়ে চাপানো যায় এবং বিশ্বাস করানো যায় তারা নাটোর-২ আসনের বিএনপি সমর্থক নেতাকর্মী নয়।
হামলার ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মর্তুজা আলী বাবলু বলেন, শিমুলের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে বিএনপি প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন নিজের প্রতি জনগণের সহানুভূতি তৈরি করতে এসব ভুয়া কাজ করছেন।
এদিকে নির্বাচনের প্রাক্কালে দুলুপত্নী সাবিনা ইয়াসমিনের এমন কৌশলে বিস্মিত নাটোর-২ আসনের ভোটাররা। তারা বলছেন, কেবল জনগণের সহানুভূতি পেতে তিনি নিজের দলের লোকজনদের ওপরে নিজেই হামলা চালানোর পরিকল্পনা করবে কেউ তা কল্পনাও করেনি। বিএনপির নেতাকর্মীরাও এ নিয়ে স্তম্ভিত।

অবৈধ সম্পত্তির বরপুত্র আ স ম আব্দুর রব

নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একসময়ে হাস্যরসাত্মকভাবে বলেছিলে, ‘অসময়ে নীরব, সুসময়ে সরব, তিনি হলেন আ স ম রব’। যদিও কথাটি হাস্যরসাত্মক ছিলো। কিন্তু কথাটি যে মোটেও মিথ্যা নয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেলো বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আ স ম আব্দুর রব দেশের পক্ষে কাজ করলেও সেটি যে ছিলো শুধুই নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তা বুঝতে বাংলাদেশের মানুষের খুব বেশি সমস্যা হয়নি। এক সময়ে নিজের দল গঠন, অন্য সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লেজ ধরে ক্ষমতায় আসা। কিংবা ক্ষমতায় আসতে যুদ্ধাপরাধ সমর্থিত দলকে সমর্থন করা, সকল কিছুই করতেই রাজি আছেন আ স ম আব্দুর রব।
যার কারণে তার সম্পদও বেড়েছে পাহাড় সমান। শুধু ঢাকার উত্তরার কামারপাড়ায় আছে ২০ বিঘা জমির ওপরে একটি বাগান বাড়ি। যে বাড়িটি বানানো হয়েছে শুধু মাত্র তার মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে। এছাড়া বনানী, মিরপুর, ওয়ারী ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় আ স ম আব্দুর রব ও স্ত্রী তানিয়া রবের নামে আছে সর্বমোট ১৮টি ফ্ল্যাট।
আ স ম আব্দুর রবের নির্বাচনী আসন রামগতি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এমপি থাকাকালীন সময়ে রব সাহেব হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এটা তো তেমন বড় কিছু নয়। ক্ষমতায় থাকলে সম্পদের পরিমাণ বাড়তে পারে। জনসাধারণ এতে মোটেও বিচলিত নয়।
এদিকে লোক মুখে জানা যায়, আ স ম আব্দুর রবের নির্বাচনী আসনে থানা, ডিসি, এসপি ও প্রশাসনে বিপুল অর্থ ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। এ কারণে তিনি অন্তত ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন। লোক মুখে শোনা যায়, এমপি থাকাকালীন সময়ে প্রায় ১২’শ কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে তিনি সিঙ্গাপুর সিটি ব্যাংকে রেখে দিয়েছিলেন। নির্বাচন উপলক্ষে টাকা গুলো ফিরিয়ে আনছেন তিনি।
উল্লেখ্য, আ স ম আব্দুর রবের এতো টাকা কোথা থেকে এলো, আর কিভাবে এলো, এ বিষয়ে তার সঙ্গে এ প্রতিবেদক একাধিকবার যোগাযোগ করতে ফোন দিলে আব্দুর রব এবং স্ত্রী তানিয়া রব ফোন ধরেননি।

বরিশাল-২ আসনের বানারীপাড়ায় বিএনপি ক্যাডারদের তাণ্ডব চরমে, আ’লীগ কর্মী আহত

নিউজ ডেস্ক: বরিশাল-২ আসনে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার উদ্দেশ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বিএনপি ক্যাডার বাহিনী। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে, কার্যালয় ভেঙ্গে বিএনপি ভোটের মাঠে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে বিএনপি প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর লোকজন নৌকার প্রার্থী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহে আলমের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তিন কর্মীকে মারাত্মকভাবে আহত করেছেন। বিএনপি ক্যাডারদের এমন তাণ্ডবে বানারীপাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
১৭ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেলে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের ছোট মসজিদবাড়ি গ্রামে বিএনপি ক্যাডারদের হামলায় আওয়ামী লীগের তিন কর্মীকে বেদম মারধর করে বিএনপির কর্মীরা। হামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ফারুক (৬০), হারুন (৩০) ও লিটন (৩০) গুরুতর আহত হন।
বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ফারুক (৬০) জানান, শনিবার বিকেলে সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের সুইচগেট এলাকায় আওয়ামী লীগের উঠান বৈঠকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে একই ইউনিয়নের ছোট মসজিদবাড়ি গ্রামের বিএনপি ক্যাডার ইলিয়াস ও কালামের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন বিএনপির ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের ওই তিন কর্মী মাটিতে পড়ে গেলে কুপিয়ে তাদের মারাত্মকভাবে জখম করা হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শী মো. কামাল হোসেন বলেন, সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের সুইচগেট এলাকায় আওয়ামী লীগের উঠান বৈঠকে যাওয়ার জন্য দলের কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে একটি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ দা, ছুরি নিয়ে বিএনপির কর্মীরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। হামলাকারীরা বিএনপি প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর কর্মী।
এমন পরিস্থিতিতে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছে, গত ১০ বছর ধরে শান্তির সুবাতাস বয়ে চলা উজিরপুর-বানারীপাড়ায় নির্বাচনী সহিংসতা শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে অশান্ত হয়ে উঠছে বরিশাল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চায় এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।

আসছে বিদেশী টাকা, অরাজকতার পরিকল্পণায় বিএনপি-জামায়াত

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সকল ভোট কেন্দ্রগুলা দখল করার পায়তারা করছে অস্তিত্যের সঙ্কটে থাকা বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে থানা ঘেরাও কর্মসূচিরও পরিকল্পনা করছে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী একাধিক শক্তি। আর এই কর্মসূচির শতভাগ সফল করতে বিদেশ থেকে হাজার-হাজার কোটি টাকা চোরাই পথে দেশের অভ্যন্তরে আসছে বলে গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছে।
গোয়েন্দ সুত্রে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি প্রচারণার কোনো সুযোগই পাচ্ছে না এমন বাহানায় অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে থানা ঘেরাও কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ছয় হাজার কোটিরও ওপরে টাকা ছাড়ানো হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। যেখানে দেশের বাইরে থেকে বিশেষ ব্যক্তিদের সহযোগিতায় লিবিয়াসহ একাধিক দেশের মুদ্রা এরইমদ্ধে গোপনে দেশে এসেছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে দুর্নীতির দায়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জামায়াতে ইসলামের বিভিন্ন নেতারা।
২০১৩ সালের ১ আগস্টে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপর চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বাধীন মহাজোট নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করে। গত দশ বছরের যুদ্ধাপরাধের দায় প্রমাণীত হওয়ায় জামায়াতের অধিকাংশ শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর হয়েচে এরই মধ্যে। অনেকে যাবৎজীবনের সাজাভোগও করছে। আর এতেই দলটি বর্তমানে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। ফলে দেশজুড়ে দলটির অনুসারিরা হামলার পর হামলা চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
এদিকে জামায়াতের পাশাপাশি দুর্নীতিতে জর্জরিত বিএনপির দলের নেতাকর্মীরাও নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া হয়ে আছে। ২০০১ সালে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জিয়া পুত্র তারেক রহমানের নেতৃত্বে একের পর এক দুর্নীতি, অর্থ পাচার, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়সহ দেশে লুটতরাজ চালায় দলটির নেতাকর্মীরা। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার মহাজোটের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের দুর্নীতির নানান কুকীর্তির বিচার কাজ শুরু হয়।
দুর্নীতিতে পর্যদুস্ত বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে আয়োজিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে। সেই সময়টাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সারাদেশে সাধারণ মানুষের ওপর মুহুর্মুহু পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা থেকে শুরু করে অগ্নিসন্ত্রাসসহ সমস্ত রকমের শোধ নিতে শুরু করে। পরে অবস্য সরকার দেশের শান্তি ফিরাতে তাদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে নির্দেশ দেয়। ফলে টানা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি তাদের সন্ত্রাসবাদের শেষ ক্ষমতাটুকুও হারায়।
এরমাঝে দুর্নীতির দায়ে দশ বছরের সাজা হয় বিএনপির প্রধান বেগম খালেদা জিয়ো ও তার পুত্র তারেক রহমানের। বেগম জিয়া বর্তমানে কারাগারে বন্দি থাকলেও তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে পালাতক রয়েছে।
এদিকে নেতার অভাবে ধুকতে থাকা বিএনপি দেশের রাজনীতিতে অস্তিত্ব হারানোর অবস্থায় পৌছায়। দলটি এমন অবস্থায় চলে এসেছে যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলছুট নেতার অধিনে নতুন জোট গঠন করতে হয়েছে।
বিএনপি নিজেদের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য ড. কামাল হোসেনের মতো বিভিন্ন দলছুট নেতাদের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তবে এ নির্বাচনে বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত থাকায় প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হয়েছে।
যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছে তাদের অনেকে আবার তারেক রহমানের রমরমা মনোনয়ন বাণিজ্যে সোনার ডিম পাড়া হাঁস। আর যারা তারেক রহমানকে অর্থ দেয়ার পরও মনোনয়ন পায়নি তারা ক্ষুব্ধ হয়ে দেশ জুড়ে নিজ দলের প্রার্থী, বিরোধী দল ও এমনকি সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সে সকল অপরাধের প্রমাণ পেয়ে ব্যাবস্থা নিতে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে জামায়াত-বিএনপির সমন্বিত সশস্ত্র দল।
বিজিবির এক কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, ‘সরকারবিরোধী জোট নির্বাচনি কর্মসূচির নামে আন্দোলন করতে যে অর্থ ব্যবহার করছে; সে তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। ওই অর্থের সন্ধানে বিজিবি পথে পথে চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি করছে।’
সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরে ২১ তারিখের পর এবং ২৭ তারিখের আগে যেকোনো একদিন একযোগে একই সময় সারাদেশের সব থানা ঘেরাও করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে, ওই দিন সকাল থেকে থানা বিএনপি ও জামায়াতের সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা জড়ো হবে। নির্ধারিত সময়ে প্রার্থী মিছিল নিয়ে থানায় সামনে বসে যাবে। এমন কর্মসূচির উদ্দেশে সারা দেশের পুলিশের মনোবল দুর্বল ও দেশবাসীর কাছে সরকারবিরোধী শক্তির সম্পর্কে জানান দেওয়া। অবশ্য এসব বিষয়ে গোয়েন্দা সদস্যদের কাছে আরও বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, যেকোনো এক দিন থানা ঘেরাও কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে অরাজকতার চেষ্টা করবে।

নিজেদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দ্বারাই গুলিবিদ্ধ রোমানা মাহমুদ ও তার কর্মীরা

সিরাজগঞ্জ শহরে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী রুমানা মাহমুদের নেতা কর্মী আহতের ঘটনায় জানা গেছে, বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদ সন্ধার পর শহরে গণসংযোগের জন্য জেলা বিএনপি কার্যালয়ে যান। সেখানে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। আগে থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা মিছিল করছিলেন।
মিছিলটি বিএনপি কার্যালয়ের কাছে এলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিলে ঢিল ছুঁড়লে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ উভয় পক্ষকে  লাঠিচার্জ করলে বিএনপির  সশস্ত্র কর্মীরা  দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ পুলিশের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে।
এসময় আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা কয়েকজন যুবক পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়লে পুলিশের ধাওয়ায় নিজেরাই গুলিবিদ্ধ হয়। নির্বাচনী পরিবেশকে বানচাল করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী যেকোনো মূল্যে এলাকায় ভীতি ছড়াতে ঢাকা হতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এলাকায় নিয়ে যান বিএনপির প্রার্থী। ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ধাওয়া পালটা ধাওয়ার সময় নিজেদের কর্মী চিনতে না পেরে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়েন। এসময় বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদ ও তার কয়েকজন কর্মীসহ আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী আহত হয়।
এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে বিএনপির আনা অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ সুপার (এসপি) টুটুল চক্রবর্তী বলেন, ‘পুলিশের ওপরে হামলা করার পর জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে।’
এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানায়, নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা পুলিশ বাহিনী ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছে এবং নিজেরা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অন্যের উপর দোষ চাপাতে চাচ্ছে।
শনিবার দুপুর ১২টায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিরাজগঞ্জ সদরসহ জেলার সর্বত্র নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর প্রচার তুঙ্গে ওঠেছে দেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দিশেহারা হয়ে উঠেছে। তারা মাঠে নেই, কোথাও কোন পোস্টার লিফলেট নেই।
দলের সিনিয়ার সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হোসেন আলী হাসান, আলহাজ্ব ইসহাক আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা বেগম স্বপ্না, উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।

নিরাপত্তাহীনতার নাটক সাজিয়ে ইসিকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছেন হাফিজ

নিউজ ডেস্ক: নিরাপত্তাহীনতার নাটক সাজিয়ে ইসিকে তথা সরকারকে বিব্রত করতে ভোলা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ তৎপরতা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে, ১২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবীর রিজভীর সাথে একান্ত বৈঠকে বসেন মেজর (অব.) হাফিজ। সেখানে ভোলা-৩ আসনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার বিভিন্ন কলা-কৌশল সম্পর্কে মেজর (অব.) হাফিজ শীর্ষ এই দুই নেতার সাথে কথা বলেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে মেজর (অব.) হাফিজ ইসিকে বিব্রত করার জন্য লঞ্চে আক্রমণ করার নাটক মঞ্চস্থ করবেন বলে মির্জা ফখরুলের অনুমতি প্রত্যাশা করেন। এসময় দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাফিজকে দলের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে নিশ্চয়তা দেন। তবে মির্জা ফখরুল মেজর (অব.) হাফিজকে লঞ্চে আক্রমণ করার নাটক বাস্তবায়নে সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দেন বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর রাতে ওই বৈঠক শেষ হবার পর মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ সদরঘাটে তাসরিফ-৪ নামের লঞ্চে করে নির্বাচনী এলাকা ভোলার লালমোহনে যাওয়ার নাটকটি করতে সেখানে উপস্থিত হন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে সদরঘাটে পৌঁছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দিয়ে লঞ্চটিকে মাঝ নদীতে নিয়ে ৪০টি কেবিন ভাঙচুর এবং বিএনপি কর্মীদের মারধর করার নাটকটি সাজান। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে কমিশনার শাহাদত হোসেন চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগের পর একটি সংবাদ সম্মেলন করে মেজর (অব.) হাফিজ নিরাপত্তাহীনতার মুখে জীবন নিয়ে সদরঘাট থেকে ফিরে আসার কথা জানান।
এ প্রসঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভোলা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ এর আগে এমপি ছিলেন। তিনি তার নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না এটা বিশ্বাসযোগ্য না। তাহলে এতদিন তিনি কী রাজনীতি করলেন। জনপ্রিয়তা না থাকলে আমাদের বললেই আমরা ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিকল্প প্রার্থী দিয়ে দিতাম।
অপরদিকে ইসি সূত্র অনুসন্ধান করে দেখেছে, মেজর (অব.) হাফিজ নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সম্পূর্ণ একটি সাজানো নাটক ছিল। ইসিকে বিব্রত আর নির্বাচনকে বিতর্কিত করতেই তিনি তাসরিফ-৪ নামের লঞ্চের নাটকটি সাজান। এমনকি এ বিষয়ে তিনি তার নেতা কর্মীদেরকে বাঁশের লাঠি বানিয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে তা ব্যবহার করতে এবং আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন বলে তার নির্বাচনী এলাকার একাধিক নেতা কর্মীর সাথে কথোপকথনে জানা যায়। মেজর (অব.) হাফিজের পূর্বের কর্মকাণ্ড থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার নামে ইসিকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
তথ্যসূত্র বলছে, মেজর (অব.) হাফিজ তার নির্বাচনী এলাকায় একজন বহিরাগত হিসেবেই পরিচিত। হাফিজ উদ্দিন আহম্মদের পৈতৃক বাড়ি ভোলার লালমোহনে। তাই এই আসনের মানুষের প্রতি তার দায়বদ্ধতা কখনো ছিল না। এই আসনের মানুষের কাছে জনবিচ্ছিন্ন নেতা হিসেবেই মেজর (অব.) হাফিজ বেশি পরিচিত।অপরদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন এক মুখে দুই কথা বলা বিএনপির নেতাদের খুব স্বাভাবিক আচরণ, যেহেতু নির্বাচন আসন্ন তাই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সরকারকে তথা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে মেজর (অব.) হাফিজের নির্বাচনী তৎপরতা ও অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সরেজমিনে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন নেতা কর্মীদের লাঠিসোটা নিয়ে প্রস্তুত থাকার পাশাপাশি নির্বাচনী কেন্দ্রসমূহ ঘেরাও করে রাখার পরিকল্পনা করছেন মর্মে এলাকার নেতাদের আদেশ দিয়েছেন। এলাকার জনৈক শিক্ষক হাবিবুল্লাহকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, ভোটে হেরে যাওয়ার মতো অবস্থা দেখা গেলে প্রয়োজনে প্রিসাইডিং অফিসারের চামড়া তুলে নেওয়া হবে। তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে সবসময় ৪০০/৫০০ ক্যাডার সঙ্গে রাখবেন, যাতে এলাকায় ত্রাসের সঞ্চার হয় এবং ভোটারদের মাঝে ভয়-ভীতি কাজ করে। শিক্ষক হাবিবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে মেজর হাফিজের এরূপ অপতৎপরতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাছাড়া, তার উপর হামলার যে কথিত অভিযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন মিডিয়ার ভিডিও ক্লিপ দেখে ঘটনার সাথে সরকারি দলের ন্যূনতম সম্পর্ক আছে বলে মনে হচ্ছে না। সার্বিক পর্যালোচনায় মনে হচ্ছে মেজর হাফিজ তার নিজের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়ানোর জন্য নিজেই নিজের উপর হামলার সাজানো নাটক করছেন।
মেজর (অব) হাফিজের এরূপ আচরণ ও দ্বিচারী মনোভাবের বিষয়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘মেজর হাফিজের এরূপ দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ হয়ে পড়ায় তার দ্বিচারী মনোভাব প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে মেজর হাফিজ যদি নাটক সাজিয়ে থাকেন, তবে এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় একটি কাজ হিসেবে পরিগণিত হবে। এরূপ রাজনৈতিক মনোভাব দেশ ও জাতির জন্য কখনই শুভ হতে পারে না।’

শেষ বেলায় এসে ড. কামালকে বিশ্বাস করতে পারছে না বিএনপি

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যের বৃহত্তম দল বিএনপিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় ঐক্যের নেতা ডা. কামালের প্রতি বিশ্বাসে চির ধরেছে দলটির নেতাদের। এর প্রেক্ষিতে বিএনপির নেতারা সন্দেহ করছে, বিশেষ কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নেই হয়তো মাঠে নেমেছেন ড. কামাল।

গত ১১ ডিসেম্বর সিলেটে যাওয়ার প্রাক্কালে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘নির্বাচন থেকে কোন অবস্থাতেই সরে যাওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত বিএনপি ৫০টি আসন পেলেও বিরাট অর্জন হবে। এতে তারা দল গোছাতে পারবে।’
সূত্র বলছে, ড. কামালকে বিএনপি নেতারাই আসনে বসিয়েছিল, এখন বিএনপির নেতা কর্মীরাই তাকে সন্দেহ করছে। কেউ বলছে, ‘ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার জন্য কাজ করছেন।’ আবার কেউ বলছে, ‘ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই মাঠে ড. কামাল হোসেন।’ বিএনপি নেতারা যখন বলছেন, ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যখন ঐক্যফ্রন্টের নেতারাই বলছেন, ‘আংশিক নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জয় সুনিশ্চিত।’ তখন ড. কামাল হোসেনের ৫০ আসনের ফর্মুলায় বিএনপির নেতারা রীতিমতো বিব্রত।
এদিকে ড. কামালের ভক্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাদের বলছেন, ‘স্যার বয়স্ক মানুষ। অনেক কথাই বলেন চিন্তা-ভাবনা ছাড়া। এগুলো ধর্তব্যের মধ্যে না নেওয়াই ভালো। ‘কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র বলছেন উল্টো কথা। তিনি বলেন, ‘ড. কামাল তো বঙ্গবন্ধু বলতে ভোলেন না। এটা নিশ্চয়ই বুঝে শুনে বলেছেন।’
এদিকে ৫০ আসনের তত্ত্ব নিয়ে বিএনপিতে এখন রীতিমতো গবেষণা চলছে। অনেক বিএনপি নেতা এর যোগসূত্র খুঁজছেন। ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্ট গঠন। সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি। চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ। সংলাপের নামে এলাহি নৈশভোজ। কোন দাবি আদায় ছাড়াই সংলাপ ভালো হয়েছে বলে কামাল হোসেনের ঘোষণা। আবার দ্বিতীয় দফা সংলাপ। কোন অর্জন ছাড়াই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা। নিজের (ড. কামাল) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো। যেকোন মূল্যে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা। বিএনপির অনেক নেতাই প্রত্যেকটি ঘটনাকে পরিকল্পিত এবং দুরভিসন্ধিমূলক বলেই মনে করছেন। তারা মনে করছেন, ড. কামাল ভারত এবং আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
আওয়ামী লীগ তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য একটি সাজানো, নিয়ন্ত্রিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায়। এজন্য তারা ড. কামালকে লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো। হয়তো আওয়ামী লীগ তাকে ৫০ আসনের গ্যারান্টি দিয়েছে। তিনি সেটাই করেছেন। না হলে সব কিছু ভোজবাজির মতো হচ্ছে কেন?
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘ড. কামাল হোসেন শুধু বলেছেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো যাবে না, ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। তার মানে কি, যেকোন মূল্যে তিনি আওয়ামী লীগকে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে চান? যে নির্বাচনের ফলাফল হবে একটাই আওয়ামী লীগের জয়।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘তাহলে কি এই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারিত বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট ৫০ আসন পাচ্ছে?’ বিএনপির এই নেতা প্রসঙ্গক্রমে ৮৬’র নির্বাচনের প্রেক্ষাপট এনে বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের কারণেই ৮৬’র নির্বাচনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে বৈধতা দেয়া হয়েছিল। ওই নির্বাচনের মাশুল এখনও আওয়ামী লীগকে দিতে হয়। এবার তিনি বিএনপিকেও হয়তো ৮৬- এর মডেলের নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।’

‘রা’ নেই সুশীলদের

জনসাধারণ বলেন, ‘তারা হঠাৎ সরব হন, আবার হঠাৎ চুপসে যান’। বিশেষ বিশেষ মৌসুমে তারা নড়েন-চড়েন, বিশেষ কিছু স্থানে দৌড়ঝাপও করেন। আমজনতার মতে, তাদের মতিগতিও বোঝা ভার’। তারা ‘সুশীল’ নামে পরিচিত।
যদিওবা সুশীল শব্দের আক্ষরিক অর্থ নাপিত। তবে এই বঙ্গদেশের অতি পণ্ডিতদের কাছে এসে শব্দটির অর্থই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এই অতি পণ্ডিতেরা নিজেদেরকেই ‘সুশীল’ হিসেবে হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
দুনিয়ার হেন কোনো বিষয় নেই যা এদেশের সুশীলরা জানেন না! অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, ভূগোল, রসায়ন, মনোবিজ্ঞানসহ সব বিষয়েই তাদের তুমুল পাণ্ডিত্য। অন্তত তারা এমনটাই ভাবেন। এসব বিষয়ে তাদের আগ্রহও ব্যাপক। তবে এদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেশের রাজনীতি অঙ্গন নিয়ে। কেননা এখানে  বিশেষ মিশন বাস্তবায়নে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বেশ ভক্তি ভরে তাদের পকেটে অর্থ সরবরাহ করেন।
কিন্তু তারা তাদের পান্ডিত্য সবসময় দেখান না। বিশেষ দেশ ও বিশেষ মহলের ইশারায়, সুস্পষ্ট নির্দেশেই তারা মাঠে নামেন। আরও স্পষ্ট করে বললে পাকিস্তান, বিএনপি-জামায়াতের মিশন বাস্তবায়নই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
দেশে নির্বাচন এলেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা শুরু হয় তাদের। নেমেছিলেন এবারও।
এবার বেশ আগেভাগেই মাঠে নামেন এসব ‘স্বঘোষিত সুশীলেরা’। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বিএনপি-জামায়াতের সাথে সুর মিলিয়ে উদ্ভট সব দাবি-দাওয়া পেশ করতে থাকেন তারা। উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগ সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো উপায়ে বিতর্কিত করা।
তাদের পাতা সেই ফাঁদে পা দেননি শেখ হাসিনা। সংলাপে আসা বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের সকল অন্যায় আবদারকে সংবিধান ও যুক্তি দিয়ে তাদের অয়ৌক্তিক দাবিগুলো মোকাবেলা করেছেন। বজায় রেখেছেন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা।
বরং ডিজিটাল বাংলাদেশের যোগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একের পর এক বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নে ধরাশয়ী হয়েছেন ষড়যন্ত্রকারীরা।
সংবিধান অনুযায়ী স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন। অথচ এ প্রতিষ্ঠানটিকেও যেকোনো উপায়ে বিতর্কিত করতে চেয়েছিলো দেশবিরোধী অপশক্তিটি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ সফলতার সাথে পালন করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সুনিশ্চিত করে। ফলে চুপসে যায় বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট। বিতর্ক তৈরির মতো কোনো ইস্যু না পেয়ে তারা এখন ভুগছে হতাশায়।
বড় বিপাকে পড়েছেন তথাকথিত সুশীলেরাও।  পাকিস্তান, বিএনপি-জামায়াত থেকে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ করেও মিশন বাস্তবায়ন করতে না পারার ব্যর্থতায় তারা এখন মুখ লুকোতে ব্যস্ত। কোথাও নেই তাদের বক্তৃতা,বিবৃতি কিংবা গালফুলোনো বুলি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত আর তৎপরতা দেখা যাবে না এসব জ্ঞানপাপীদের। তবে আবারও সুযোগ নেয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলেই তারা যে মাঠে নামবেন, তা হলফ করেই বলা চলে।

মনোনয়ন নাকি সম্পদহরণ!

ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া সাকা চৌধুরী কিংবা বিএনপির লেডি গুণ্ডা খ্যাত পাপিয়া বহু আগেই মুখ খুলেছিলেন। সাকা তো তারেকের সন্ত্রাস ও দুর্নীতিপ্রবণ চরিত্রের জন্য ‘কুকুরতত্ব’ দিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটান। এ নিয়ে দলের ভেতরে বাঁধে তুলকালাম কাণ্ড। তারেকের সন্ত্রাসী বাহিনী সাকাকে নাজেহালও করে।
লেডি গুণ্ডা পাপিয়া এক ফোনালাপে তারেককে অশিক্ষিত, রুচিহীন আখ্যা দেন। যা ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর জের দিতে হয়েছে পাপিয়াকেও। অন্যান্য সিনিয়র নেতারাও প্রকাশ্যে অথবা অফ দ্যা রেকর্ডে তারেকের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বারবার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শৈশব থেকেই অকালপক্ব হিসেবে পরিচিত তারেক ভেতরে সকল খারাপ অভ্যাসের উপস্থিতি ছিল। ’৯১ সালে তরুণ হয়েও দুর্নীতি-সন্ত্রাসে হাত পাকান তিনি। নেপালে এনবিবিএল ব্যাংকের মালিক বাদল একসময় ছিলেন তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী। তিনি এল আর এল গ্লোবাল নামে ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজার থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তারেক রহমানের সহায়তায়।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের উপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেন তারেক ও তার বাহিনী।
সেই আমলে শুধু সোনালী ব্যাংক থেকে জালিয়াতি হয় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা, যার মূলে ছিলেন গুণধর তারেক।
এটা সবাই জানেন যে, হলমার্কের তানভির আসলে হাওয়া ভবনের লোক। তারেক জিয়া সুইস ব্যাংকে ২৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে প্রমাণ আছে।
এছাড়া প্যারাডাইস পেপার অনুসারে ২০০৪-২০০৫ সালে কেইম্যান আইল্যান্ডে এবং বারমুডায় তারেক জিয়া ২ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।
এ তো গেলো তার অতীত অপকর্মের কথা। তবে সন্ত্রাস-দুর্নীতির দায় নিয়ে পলাতক থাকা তারেক থেমে নেই। বিদেশের মাটিতে বসেও চলছে তার স্বভাবসুলভ কুকর্ম
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপিতে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্যের সিংহভাগ টাকাই বিদেশে পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিএনপির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রমতে, পাচারকৃত টাকা চলে গিয়ে গিয়েছে তারেক জিয়ার কাছে। বাকি টাকার কিছু অংশ পেয়েছেন তারেক বলয়ের নেতারা। অন্যদিকে গোপনে মনোনয়ন বাণিজ্য করতে গিয়ে হয়েছেন লাঞ্চিত। আর সব দেখেশুনে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ফুঁসে ওঠেছেন।
সন্ত্রাসের দায়ে অভিযুক্ত তারেক জিয়ার নাম উচ্চারণেও যারা ভীত ছিলেন, তারাই এখন প্রকাশ্যে তারেককে গালিগালাজ করছেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সেসব ভিডিও-সংবাদ নিমেষেই চলে যাচ্ছে মানুষের হাতে হাতে।
শ্রীমঙ্গলের উপজেলা পর্যায়ের এক নেতার সমাবেশের ভিডিও তারই সর্বশেষ সংযোজন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সেই নেতা তারেককে কুলাঙ্গার বলে আখ্যায়িত করছেন। কর্মীরাও স্লোগান ও হাততালিতে তাকে স্বাগত জানাতে ভোলেননি। সবমিলিয়ে বিএনপির অবস্থা এখন টালমাটাল।
মনোনয়ন বাণিজ্য এখন তাদের জন্য গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিএনপির একাধিক মনোনয়ন বঞ্চিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তারা তারেক জিয়া বা তাঁর প্রতিনিধিদের টাকা দিয়েছেন। গত বছর জুন থেকে বিএনপিতে মনোনয়ন বাণিজ্য শুরু হয় বলেও বঞ্চিতরা জানিয়েছেন। যারা টাকা দিয়েছেন তারা স্বীকার করেছেন যে, টাকা দেওয়ার আগে অন্তত একবার তারা লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারেক জিয়া তাদের যাকে যেভাবে এবং যেখানে টাকা পাঠাতে বলেছেন, সেখানেই টাকা পাঠিয়েছেন। কেউ কেউ একবারে আবার কেউ কেউ একাধিকবার টাকা পাঠিয়েছেন। তারেক জিয়া ছাড়াও বিএনপিতে তারেক ঘনিষ্ঠ অন্তত দু’জন নেতা তারেক জিয়ার পক্ষে মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে
মনোনয়ন বঞ্চিত বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ন্যুনতম ১০ কোটি থেকে কোথাও কোথাও ১০০ কোটি টাকাতেও মনোনয়ন বিক্রি করেছে। চাঁদপুরের একটি আসনে মালয়েশিয়া প্রবাসী একজন ১০০ কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন কিনেছেন।  মানিকগঞ্জের একজন প্রার্থী ২০ কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন পেলেও তা পরে প্রত্যাহার করা হয়। টাকা উদ্ধারের জন্য তিনি এখন তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের একটি আসন বিক্রি হয়েছে ২০ কোটি টাকায়। ঐ আসনে দুজন প্রার্থীর কাছ থেকেই মনোনয়নের জন্য টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও বঞ্চিতদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঢাকার একটি আসনে একজন মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী আজ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি হুণ্ডির মাধ্যমে চার দফায় লন্ডনে ৭ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন। বিএনপি মহাসচিব এখন দলের স্বার্থে এসব নিয়ে ঝামেলা না করার পরামর্শ দেন। মির্জা ফখরুল আশ্বাস দেন, নির্বাচনের পর এসব বিষয় দেখা হবে।
তবে ফখরুলের এ আশ্বাসকে ফাঁকা বুলি হিসেবেই ভাবছেন কর্মীরা। বিক্ষুব্ধ একজন কর্মী বলেন, যিনি কর্মীদের হাত থেকে নিজের পরিধেয় বস্ত্রই রক্ষা করতে পারেন না, তার এ আশ্বাস হাস্যকর।
অন্যদিকে, সিলেটে মনোনয়নপ্রত্যাশী একজন তারেকের স্ত্রী ডা. জোবায়দাকে প্রথমে ৭০ লাখ, পরে ৫০ লাখ টাকা হুণ্ডির মাধ্যমে পাঠান। সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়রের মাধ্যমে ঐ মনোনয়নপ্রত্যাশী ডা. জোবায়দার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু এখন তিনি ডা. জোবায়দার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না। কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথিও চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহের দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর কাছে নগদ টাকা নেন। দুবার দেশে এসে তিনি এই টাকা নেন। কিন্তু এখন সিঁথিকেও পাচ্ছেন না তারা।
তারেক অথবা তার প্রতিনিধিদের হাতে এভাবে টাকা তুলে অনেক নেতাই এখন নিঃস্ব। দলের কোথাও অভিযোগ করার মতো স্থানটুকুও খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
এসব জেনে আমজনতা বলছেন ‘প্রতি বছর নির্বাচন হলেই তো তাহলে বিএনপির ভালো! অন্তত লন্ডনে তারেকের আরাম আয়েশের বন্দোবস্ত আরো ভালোভাবেই হবে’।
বিএনপি নামক দলটির এমন দুরবস্থা দেখে হতবাক বিশ্লেষকেরাও। তারা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহে এসব দুর্নীতির কথা চাপা থাকবে না।
‘বিএনপি তাদের অতীত ভুলের মাশুল আজও দিচ্ছে। এখনকার ভুলের মাশুল দেয়ার সুযোগ আসার আগেই দলটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে’ এমনটিই অভিমত অনেকের। বিশেষত তারেকের মতো একজন দণ্ডিত আসামী যেভাবে দলটির উপরে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, তা দেশের জন্যও অশনিসংকেত বলে মনে করছেন তারা।

মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী বিএনপি নেতারা গ্রেফতার হলে আপত্তি নেই ফখরুলের, কর্মীদের ক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক: সত্যকথনের জন্য বিএনপিতে অনেক নেতাই কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। এবার তাদের তালিকায় নাম উঠলো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। সম্প্রতি তিনি তার একটি বক্তব্যে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ী, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। সূত্র বলছে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক দলীয় নেতা-কর্মী যাতে রাজনৈতিকভাবে গণ-গ্রেফতারের শিকার না হয় সেজন্য প্রয়োজনে দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে দলের পক্ষ হতে কোন আপত্তি থাকবেনা মর্মে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিদের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন রাজনৈতিক গ্রেফতার না এড়ালে নির্বাচনে দলের কোন কর্মী সমর্থককে প্রচারণায় পাওয়া যাবেনা। মনোনয়ন বাণিজ্যসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় দলের অবস্থা এমনিতেই শোচনীয়। তার উপর গণগ্রেফতারের আতঙ্কে নেতা কর্মীরা বাড়িঘরে যেতে পারছেননা। এজন্য তারেক রহমানের নির্দেশেই মহাসচিব মূলতঃ দলের কতিপয় চিহ্নিত দুস্কৃতিকারীদের অনেকটা বিপদে ফেলেই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে একদিকে দলের প্রতি বিদেশী শক্তিসহ সাধারণ মানুষের আস্থার উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি গণগ্রেফতার এড়িয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ মসৃণ হবে।
মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জের ধরে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুঁসে উঠেছেন। তারা বলছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ধরণের বক্তব্য দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের বৈধতা দিচ্ছেন।
সূত্র বলছে, দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। আবার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কালিমা অনেক আগে থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘাড়ে আছে। এমনকি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যাতেও পিছিয়ে নেই বিএনপি। দলের কারান্তরীণ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দণ্ডিত আসামি। ফলে এমন প্রেক্ষাপটে দলের মহাসচিব হয়ে পরিস্থিতির কথা বিবেচনা না করে তার সাংঘর্ষিক বক্তব্য কিছুতেই মানতে পারছে না দলের নেতাকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফখরুল সাহেব এমন অবিবেচকের মতো বক্তব্য দেবেন তা মেনে নেয়া যায় না। কেননা, এখন পর্যন্ত দুর্নীতির দায়ে আমাদের দলীয় প্রধান কারাগারে এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও দণ্ডিত। ফলে তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে তারেক রহমানের গ্রেফতারকেও উস্কে দিয়েছেন। এমনকি নেত্রীর কারান্তরীণ হওয়াকে বৈধতা দিয়েছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা।
মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নামে বেশ কিছু মামলা ঝুলছে। কয়েকটি মামলায় আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও আছে। তার মানে আমাকে গ্রেফতার করলে সেটি বৈধ হবে? ফখরুল সাহেবের এমন বক্তব্য দলীয় আচরণ পরিপন্থী।
এদিকে বিএনপির তৃণমূল থেকে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আসছে বলেও জানা গেছে। তারা বলছেন, বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে- সেগুলো ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে বিগত ১০ বছরে হওয়া। কেবল দলের জন্যই মামলা ঘাড়ে নিয়ে চলতে হচ্ছে। যদি গ্রেফতার হই তবে এর দায়ভার কে নেবে?

দায় এড়াতে না পেরে সংবাদ সম্মেলন এড়িয়ে গেলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন

নিউজ ডেস্ক : পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট মেহমুদের সঙ্গে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের টেলি কথোপকথন গণমাধ্যমে ভাইরাল হবার পর উক্ত ঘটনার দায় এড়াতে বিবৃতি দিয়েছেন খন্দকার মোশাররফ।
বিএনপির লোগো সম্বলিত একটি কাগজে খন্দকার মোশাররফ উল্লেখ করেন, আইএসআইয়ের এজেন্টের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি জড়িত নন। তবে নির্বাচনী প্রচারণার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারছেন না।
খন্দকার মোশাররফের এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক নবনীতা চৌধুরী বলেন, বিষয়টি হাস্যকর। খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলাও করেছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ আলী সুমন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকার অজুহাত দেখিয়ে নিজের পক্ষে কিছু বলার জন্য সংবাদ সম্মেলন করার কোনো প্রয়োজন মনে করলেন না তিনি। এতেই বোঝা যাচ্ছে আইএসআইয়ের সঙ্গে তার কথোপকথন সম্পূর্ণ সত্যি। কারণ সাংবাদিকদের প্রশ্নের মারপ্যাঁচে পড়ে তিনি হয়তো সত্যিটা বলে দিতে পারেন। আর এ কারণেই তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসতে চাচ্ছেন না।
আইএসআইয়ের এজেন্টের সঙ্গে কথোপকথন ছাড়াও গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে ২৫ কোটি টাকার গোপন চুক্তির বিষয় সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে খন্দকার মোশাররফ জর্জরিত হতে পারে বলে জানিয়ে এটিএন নিউজের চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর মুন্নী সাহা বলেন, খন্দকার মোশাররফ নির্বাচনী প্রচারণার অংশ স্বরূপ নির্বাচনে বিএনপির বক্তব্য জনগণের কাছে পৌঁছাতে গ্রামীণ ফোনের টেক্সট এসএমএস ও ভয়েস এসএমএস সুবিধা গ্রহণ করতে গ্রামীন ফোনের সঙ্গে ২৫ কোটি টাকার গোপন চুক্তি করেছেন। যা বর্তমানে ওপেন সিক্রেট হয়ে গিয়েছে। খন্দকার মোশাররফ সংবাদ সম্মেলন করলে আইএসআইয়ের সঙ্গে কথোপকথনের বিষয় ছাড়াও সাংবাদিকরা অবশ্যই গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে চুক্তি হওয়া অর্থ কোথা থেকে এসেছে তাও জানতে চাইবেন। যার উপযুক্ত উত্তর হয়তো খন্দকার মোশাররফের কাছে নেই, আর এ কারণেই তিনি সংবাদ সম্মেলন করতে চাচ্ছেন না।
এদিকে খন্দকার মোশাররফের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো ইস্যুকে এড়িয়ে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত না হওয়াকে খোঁড়া যুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুন নূন তুষার বলেন, মোশাররফ হোসেন যদি চাইতেন তাহলে কুমিল্লাতেও সংবাদ সম্মেলন করতে পারতেন। কিন্তু তার কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উপযুক্ত উত্তর নেই। এ মুহূর্তে তাকে অপরাধ স্বীকার করে আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নিজেকে সোপর্দ করাই উত্তম হতে পারে বলে আমি মনে করছি।

Thursday, December 13, 2018

বিদ্রোহী প্রার্থীতে কোণঠাসা বিএনপি

আন্ত:কোন্দলের ফাঁদে পড়েছে বিএনপি। কোনো কিছুতেই  বিএনপির এই কোন্দল কমছে না। বরং নির্বাচন সন্নিকটে হওয়ার সাথে সাথে এই কোন্দলও বেড়ে যাচ্ছে। দলে কোন্দলের জন্যই মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী।
শুরু থেকেই বিএনপিতে নিত্যনতুন জটের অন্ত ছিলো না। দলের নেতাকর্মীদের রয়েছে অবৈধ সম্পত্তির জট, টাকা আত্মসাতের জট, দুর্নীতির জট। মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হয়েছে এই সমস্যা। বিএনপির একটি আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সব দিক বিবেচনা করে মনোনয়ন দিয়েছেন একজনকে। কিন্তু রেষারেষিপূর্ণ বিএনপির প্রার্থীরা তা মেনে নেননি। অন্যান্য প্রার্থীরা যারা মনোনীত হননি তারা আর মনোনয়নপত্র তুলে নেয়নি।  ফলে বেশিরভাগ প্রার্থী বিদ্রোহীভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে মনোনীত প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর অন্তঃকোন্দল পৌঁছেছে চরম পর্যায়ে।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভায় বিএনপির প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন রেজাউল করীম। তিনি থানা বিএনপির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর। তার বিপরীতে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে মনোনয়ন কিনেছেন বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী বাদশাহ। তিনি পৌর বিএনপির সভাপতি। বাদশাহর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান। রেজাউলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। জনপ্রিয়তায় বর্তমান মেয়র বাদশা এগিয়ে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। সাবেক দুই এমপির দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্রোহী প্রার্থীর সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন আসনে সৃষ্টি হয়েছে চরম দ্বন্দ্ব।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বিএনপির টিকিট পান কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতিকে এম আই খলিল। তার মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার কারণে তিনি দলের প্রতীক সংবলিত চিঠি নিয়ে নিজ এলাকায় ফেরেন। কিন্তু শেষরাতে পাল্টে যায় মনোনয়ন প্রার্থী। খলিলের বদলে বিএনপির মনোনয়ন পান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সমর্থক নাইম সরকার। কিন্তু দলের মনোনয়নপত্র নিয়ে কুমিল্লায় যাওয়ার আগেই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন কে এম আই খলিল। এই নিয়ে এলাকায় বিরাজ করে চরম উত্তেজনা।
জোর যার মুল্লুক তার পদ্ধতিতেও বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় রয়েছে অনেক নেতাকর্মী। দলের সেই নেতাকর্মীদের বদৌলতেও মনোনয়ন পেয়েছেন অনেকে। এতে করে ছিটকে পড়েছে এলাকার অনেক জনপ্রিয় নেতারা। ছিটকে পড়া নেতারা ও তাদের কর্মী সমর্থকরা এজন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিবে।
বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় চলেছিল টাকার খেলা। যে যত বেশি টাকা দিয়ে দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাকর্মীদের খুশি করতে পেরেছে,  মনোনয়ন পত্রের দৌড়ে সে তত বেশি এগিয়ে ছিল। কিন্তু এই টাকার খেলার কথা জেনে যায় দলের বাকি নেতাকর্মীরা। আর তা জানতেই আগুনের ভেতর ঘি ঢালার মতো অবস্থা হয়।
বিএনপির নিজস্ব কৃতকর্মের জন্যই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পরিমাণ বেড়েছে। বর্তমানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কোণঠাসা অবস্থায় বিএনপি।

নির্বাচনকে ঘিরে সক্রিয় একাধিক উগ্রবাদী সংগঠন, ষড়যন্ত্র রুখতে মাঠে গোয়েন্দারা (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় হয়ে উঠেছে উগ্রবাদী একাধিক সংগঠন। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সতর্ক অবস্থানে থেকে কাজ করার বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে ওই বার্তায় বলা হয়, এবার নির্বাচনকে ঘিরে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে উগ্রবাদী সংগঠনের সদস্যরা। তাই ষড়যন্ত্র রুখতে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে দেশের সুপ্রশিক্ষিত গোয়েন্দারা। এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দেশি-বিদেশি একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের সত্যতা স্বীকার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিট ও একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, জঙ্গি সংগঠনগুলোর নতুন সদস্য ও তহবিল সংগ্রহ এবং নতুন টার্গেট নির্ধারণের তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর অভিমত, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক কারণেই উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর তৎপরতা বাড়ে। কারণ এদের দিয়ে রাজনীতি প্রভাবিত করা সম্ভব হয়। এখন উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যরা এমন টার্গেট নির্ধারণ করবে, যাতে নির্বাচন যেকোনমূল্যে বিতর্কিত করা যায়। আর এরমাধ্যমে তারা বিশেষ স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করবে।
এদিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিটের এক কর্মকর্তা উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর তৎপরতা সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, উগ্রবাদী সংগঠনগুলো সব সময়ই সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। সে চেষ্টা এবার আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তারা যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্কতা অবলম্বন করছি।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, জঙ্গিদের আগের মতো সাংগঠনিক শক্তি নেই। অভিযানে অনেক নেতা ধরা পড়েছে, অনেকে মারা গেছে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুপস্থিতিতে নতুন নেতৃত্বে চলে এসেছে। তারাই সদস্য ও অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তাই এই নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয়তাবাদী দর্শনের আড়ালে থেকে উগ্রবাদীরা সংগঠিত হয়ে নাশকতার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে পুলিশ ও র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, সারা দেশেই তারা নজরদারি বাড়িয়েছেন। তবে নির্বাচনকে ঘিরে নোয়াখালী ও ফরিদপুরে দুই জন আওয়ামী লীগের নেতাকে হত্যা করে উগ্রবাদীরা তাদের সক্রিয়তার জানান দেয়ার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার রহস্য অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে জানিয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, জঙ্গিরা তহবিল সংগ্রহে ডাকাতি-ছিনতাই করছে বলেও তথ্য আছে। তবে নির্বাচনকে ঘিরে সরকারি দলের কর্মীদের হত্যার মিশনে নেমেছে উগ্রপন্থীরা, এমন তৎপরতার তথ্য একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাদের সক্রিয়তার প্রমাণ মিলছে এসব হত্যাকাণ্ডে।
অন্যদিকে বিদেশি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, ভারতের এক জঙ্গি কারাগারে বসে দুটি চিঠি লিখেছেন। যা মূলত ময়মনসিংহের প্রিজন ট্রাজেডির সেই সালেহীন অর্থাৎ জেএমবি প্রধানের উদ্দেশ্যে লেখা। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘অ্যামুনেশন সংগ্রহে তৎপর হওয়া দরকার। সামনে নির্বাচন। বিভিন্ন রকম সহিংসতা হবে। এই সুযোগ কাজে লাগানো দরকার।’
প্রসঙ্গত, উগ্রবাদীদের মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। তাই ষড়যন্ত্র রুখতে মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

ক্ষমতায় আসার আগেই আওয়ামী নেতাকে গুলি করে হত্যা করলো বিএনপি

নিউজ ডেস্ক : নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নে মো. হানিফ (২৪) নামের এক যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএনপি কর্মীরা। এসময় নুরুল ইসলাম (২৭) নামের আরেক কর্মী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ১১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কাজীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. হানিফ দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে। তিনি এওজবালিয়া ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী অভিযোগ করেছেন সকাল থেকে জামায়াত বিএনপির নেতারা বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে।
তিনি জানান, নোয়াখালী-৫ আসনে কবিরহাটে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইসমাইলসহ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
তিনি জানান, দত্তের হাট বাজার এবং করিমপুরের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এরপর বিকেল পোনে ৫ টায় এওজবালিয়া ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের নির্দেশে এবং জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিজভির নেতৃত্বে হানিফকে কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে মনে করে পায়ে গুলি করে।
এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, বিকেলে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রহিম রিজভীর বাড়িতে উঠান বৈঠক চলছিল। পরে স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে যুবলীগ নেতা হানিফ কীভাবে নিহত হয়েছে তা জানেন না তিনি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আজিম জানান, তার দুই পায়ে গুলি ও মাথা’সহ শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।