Thursday, February 21, 2019

বিএনপি-জামায়াতের প্ররোচনায় সরকারের পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে টিআইবি!

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশের সড়ক ও মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ‘সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার। সরকারের এই পদক্ষেপ যখন দেশের সব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে, তখন কিছু কুচক্রী ও রাষ্ট্রবিরোধী মহলের প্ররোচনায় পড়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মিথ্যাচার ও গুজব ছড়াচ্ছে।
সমস্যা সমাধানে সরকারের গৃহীত তড়িৎ পদক্ষেপগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেশি ও আন্তর্জাতিক মহলে রাষ্ট্র ও সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে অর্থের বিনিময়ে মনগড়া ও ভিত্তিহীন মন্তব্য করে বিএনপি-জামায়াতের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছে টিআইবি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মেজবাহ কামাল।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ বিষয়ে টিআইবি’র মন্তব্যকে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা হিসেবে দাবি করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, সড়কে মৃত্যু ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকার তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করে যে কমিটি গঠন করেছে তা প্রশংসার দাবিদার। দেশের চলমান উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে শাজাহান খানকে নিয়ে মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে টিআইবি। শাজাহান খান যেহেতু জন নন্দিত শ্রমিক নেতা, তাই তাকে ব্যবহার করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব ভেবে সরকার তাকে কমিটির প্রধান করেছে।
তিনি আরো বলেন, টিআইবি প্রতিবারই সরকারকে বিব্রত করার মিশনে তৎপর থাকে। আমার মনে হয়, বিএনপি-জামায়াতের মদদ পুষ্ট হয়ে এবং বিদেশি কিছু সংস্থার সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় টিআইবি মনগড়া মন্তব্য করে দেশের রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। দেশের রাজনীতিতে পরাজিত শক্তিরা টিআইবি’র মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তাদের এই অপচেষ্টা সফল হবে না।

একুশ মানে মাথা নত না করা

একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ মানে আমার মায়ের ভাষা, একুশ মানে আমার মায়ের ভাষার সম্মান রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়া, একুশ মানে বিশ্বমঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রথম বাংলা ভাষণ,  একুশ মানে শত বাধা বিপত্তি জয় করে এগিয়ে চলা, একুশ মানে চেতনা, একুশ মানে দেশকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাওয়ার অদম্য মনোবল
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিই বাঙালি জাতিকে শক্তি দিয়েছিল চেতনা দিয়েছিল, প্রেরণা দিয়েছিলো একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র অর্জনের আর এই চেতনাকে বুকে ধারণ করেই স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা
বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার, অন্যদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত
১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন
একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাস্তবায়িত হচ্ছে একের পর এক কার্যকরী উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক টালবাহানা শুরু করলে একুশের চেতনা বুকে নিয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং তা আজ বাস্তবে রূপ নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে
বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে আর তলাবিহীন কোনও ঝুড়ি নয়, একুশের প্রেরণায় উদ্ভাসিত হয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত আজ পুরো দেশ একুশের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বাংলাদেশ আজ মোটামুটিভাবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত
একুশকে বুকে ধারণ করে সর্ব ক্ষেত্রে বিজয় নিশান উড়িয়ে চলেছে বাংলাদেশ সমুদ্র বিজয়ের পর মহাকাশ বিজয় করে অনন্য গৌরবের অংশীদার হয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব সূচকে যেভাবে বাংলাদেশ যেভাবে অগ্রগতি, সাফল্য আর উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে চলেছে তাতে সহজেই অনুমেয় আগামীর বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশের সারিতে কাঁধ মেলাতে সক্ষম হবে 
শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, একুশই আমাদের শিখিয়েছে কি করে মাথা উঁচু করে চলতে হয়

নিরাপদ ইন্টারনেট ক্যাম্পেইনে কাজ করার আশা জানালেন সালমান

বাংলাদেশে অশ্লীল ভিডিও, শর্টফিল্ম কিংবা ১৮+ ভিডিও আপলোড করা নতুন কিছু নয়। এই কাজটি দেশে বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই হয়ে আসছে। এই নিয়ে আইনে নীতিমালা থাকলেও এর প্রকৃত ব্যবহার খুব একটা দেখা যায়নি। তবে টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অশ্লীলতার বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। আর এ পরিপ্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসে বিটিআরসি। অশ্লীল ভিডিও বন্ধের ঘোষণা আসার পর একে একে বন্ধ হতে অশ্লীলতায় পূর্ণ বিভিন্ন সাইট। ইতোমধ্যে বিটিআরসির পক্ষ থেকে বন্ধ করা হয়েছে প্রায় চার হাজার সাইট। এর পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে জুয়া খেলার সাইট বেট ৩৬৫ সহ ১৭৬টি সাইট।
এরইমধ্যে সম্প্রতি গত ৯ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে একটি অশ্লীল ও অপ্রাসঙ্গিক মিউজিক ভিডিও আপলোড করেন সালমান মোহাম্মদ মুক্তাদির। 'অভদ্র প্রেম' শিরোনামে এই মিউজিক ভিডিও 'সালমান দ্য ব্রাউন ফিশ' চ্যানেলে প্রকাশ করেন তিনি। মিউজিক ভিডিওটি তার প্রকাশের পর থেকেই তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। এতে তার চ্যানেলটি থেকে কমে যায় প্রায় ২ লাখের মতো সাবস্ক্রাইবার।
আর এই ভিডিও আপলোড করাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিনেতা ও মডেল সালমান মোহাম্মদ মুক্তাদিরকে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাড়া পাওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ভিডিও গান সরিয়ে নেওয়া ও নিরাপদ ইন্টারনেট ক্যাম্পেইনে সম্পৃক্ত হওয়ার কথা জানালেন ইউটিউবার সালমান মুক্তাদির।
ফেসবুক লাইভে সালমান বলেন, ‘আমার একটা গান প্রকাশ হয়েছিল ‘অভদ্র প্রেম’ শিরোনামে। যেই গানটি বাংলাদেশে পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশি তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি করে। গানটির জন্য সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং আমাকে বলে এটা আমাদের দেশের কনটেক্সের বিপরীতে যায়। গানটি আমাকে নামিয়ে ফেলতে বলা হয়। আমি গানটি নামিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছি এবং নামিয়ে দিয়েছি’।
তিনি আরও বলেন, ‘ভিডিওটি কোনোভাবেই আমাদের দেশের জন্য এক্সেপটেবল না। আমি চেষ্টা করবো গানটির ভিডিও আমাদের দেশের উপযোগী করে নির্মাণ করার জন্য। এছাড়া আমাদের নিরাপদ ইন্টারনেটের ডে ক্যাম্পেইন হচ্ছে সেটার সমর্থন করছি। আমি আশাবাদী এই ক্যাম্পেইনের একজন এম্বাসেডর হতে পারব। আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাব এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করার জন্য এবং এটাকে সাধুবাদ জানানোর জন্য’।

সচেতনতার মাধ্যমেই ফিরে আসা যায় অশ্লীলতার অন্ধকার জগৎ থেকে

অশ্লীল ভিডিও দেখা একজন ব্যক্তির জন্য মারাত্মক নেশা এই অশ্লীল ভিডিও দেখার নেশা একজন মানুষকে তার সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে সংক্রিয়ভাবে দূরে নিয়ে আসে
তবে এই নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া অবশ্যই সম্ভব সবচেয়ে বড় বিষয় হলো  বিধি নিষেধ মেনে চলা ধর্মীয় নীতি মেনে চললে এই ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব এছাড়াও স্মার্টফোনে বিভিন্ন অশ্লীল সাইটগুলো ব্লক করে রাখলে একজন মানুষ এই সমস্যা থেকে দূরে চলে আসতে পারে এছাড়াও আরো অনেক উপায় আছে এই ভয়াবহতা থেকে ফিরে আসার
কিছু সচেতনতা অবলম্বন করলে এই নেশা থেকে বের হওয়া যায়
. সচেতনতাই প্রথম ধাপ: এই আসক্তি দূর করার জন্য বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতাই হতে পারে প্রথম পদক্ষেপ এর কুফলগুলো যদি ঠিকমত উপলব্ধি করেন, তাহলে সহজাতভাবেই এর প্রতি আপনার চিন্তাধারায় একটি পরিবর্তন সূচিত হবে আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে, এই আসক্তি একটি মনো-সামাজিক ব্যাধি এর শারীরিক মানসিক কুফল অনেক স্নায়ুকে ক্রমাগত উত্তেজিত করার মাধ্যমে এটি আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি হরমোনাল ডিজঅর্ডার ঘটায় এর জন্য আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত মাস্টারবেশন করতে হয়, যা পরবর্তীতে আপনার ব্যাপক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে সেই সাথে নৈতিক অবক্ষয় মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টাকেও মাথায় রাখুন আপনার স্বাভাবিক জীবন সামাজিক সম্পর্ক সুরক্ষার তাগিদে তাই এর বিরুদ্ধে সচেতন হোন এখনই
. সরিয়ে ফেলুন অশ্লীল ভিডিও দেখার বিভিন্ন উপাদান: সেক্সুয়াল যেসব কন্টেন্ট আপনার পিসির হার্ড ড্রাইভ বা ফোনে সংরক্ষিত আছে তা মুছে ফেলুন দৃড়চিত্তে নইলে হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য উপাদানের আকর্ষণে আবারও আপনি সেই জগতে ফিরে যেতে পারেন সেই সাথে ইন্টারনেটের সেইসব ওয়েব সাইটের কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য ব্যবহার করতে পারেন প্রোটেকশনাল সফটওয়্যার
. গড়ে তুলুন সুস্থ বিনোদনের অভ্যাস: সাধারণত একাকীত্ব, বিষণ্ণতা, হতাশার চাপ থেকে মুক্তির জন্যই মানুষ অসুস্থ বিনোদনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে সঙ্গ দোষ কিংবা মাদকাসক্তিও এসবের উল্লেখযোগ্য কারণ তাই সুস্থ বিনোদনের অভ্যাস গঠন করা অপরিহার্য এতে আপনি এই আসক্তি তো বটেই মাদকাসক্তি থেকেও বেরিয়ে আসতে পারবেন ভালো গান শোনা, ভালো মুভি দেখা, ভালো বই পড়া হতে পারে সম্ভাব্য ভালো অপশন এছাড়া প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে পারেন কিছু সময়ের জন্য হাঁটা কিংবা জগিং করার মত এক্সারসাইজগুলোও আপনাকে দেবে বাড়তি অনুপ্রেরণা বন্ধুদের সাথে ভালো আড্ডাও হতে পারে আপনার ইতিবাচক পরিবর্তনের উৎস
. অনুশীলন করুন ধর্মীয় মূল্যবোধ: আপনি যে ধর্মেরই অনুসারী হোন না কেন, তার মূল্যবোধ নৈতিক শিক্ষা আপনাকে এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে অবশ্যই সহায়তা করবে নামাজ বা প্রার্থনা আপনাকে দেবে আত্মিক পরিশুদ্ধি এছাড়া ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে পারেন নিজের জীবনকে আরও সুসংহত করার তাগিদে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের উপদেশ এবং জীবনী থেকেও শিখতে পারবেন, কী করে পাপাসক্তি থেকে প্রত্যাবর্তন করে নির্মল জীবন শুরু করা যায়
আর এরই মাধ্যমে একজন মানুষ সহজেই এই অশ্লীলতার ভয়াবহতা থেকে বের হয়ে আসতে পারে   

বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন

১৯৪৭ সালে দীর্ঘ ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে জন্ম নেয় দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তান। জাতিগত ও সংস্কৃতিগত মিল না থাকা স্বত্বেও শুধু মাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। এর পরপরই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং উর্দুভাষী বুদ্ধিজীবীরা বলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে দাবি ওঠে, বাংলাকেও অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। কিন্তু পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলা ভাষার এ দাবিকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে। এতে ঢাকার ছাত্র ও  বুদ্ধিজীবী মহল ক্ষুব্ধ হন। রচিত হতে থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের পটভূমি।
পাকিস্তান সৃষ্টির পর ঢাকায় আয়োজিত এক সম্মেলনে গঠিত হয় গণতান্ত্রিক যুবলীগ। সম্মেলনে ভাষা বিষয়ক কিছু প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়, যা পাঠ করেন তৎকালীন যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ওই প্রস্তাবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের লেখার বাহন এবং আইন-আদালতের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হোক।’ পাকিস্তান সৃষ্টির পর এভাবেই সর্বপ্রথম মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দাবি উচ্চারিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে।
৪৭ এর ডিসেম্বরে কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে এক সভায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৪ জন ভাষাপ্রেমিক বাংলা ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন দাবি-সংবলিত ২১ দফা ইশতেহার প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন, যা পুস্তক আকারে প্রকাশ হয়ে নামকরণ হয়—‘রাষ্ট্রভাষা ২১ দফা ইশতেহার—ঐতিহাসিক দলিল’।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ একটি স্মরণীয় দিন। গণপরিষদের ভাষা-তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দেওয়া ছাড়াও পাকিস্তানের মুদ্রা ও ডাকটিকেটে বাংলা ব্যবহার না করার প্রতিবাদে ওইদিন ঢাকা শহরে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘটের দাবি ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা। ধর্মঘটের পক্ষে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এই শ্লোগানসহ মিছিল করার সময় গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু।
পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালের ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ-এর সঙ্গে পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে আট দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে জেলখানায় আটক ভাষা আন্দোলনের কর্মী রাজবন্দীদের চুক্তিপত্রটি দেখানো হয় এবং অনুমোদন নেয়া হয়, অনুমোদনের পর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। কারাবন্দী অন্যদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুও চুক্তির শর্ত দেখেন এবং অনুমোদন প্রদান করেন। এই ঐতিহাসিক চুক্তির ফলে সর্বপ্রথম বাংলাভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল এবং চুক্তির শর্ত মোতাবেক বঙ্গবন্ধুসহ অন্য ভাষা সৈনিকরা কারামুক্ত হন।
১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যে এক সাধারণ ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পূর্ববাংলা আইন পরিষদ ভবন অভিমুখে এক মিছিল বের হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সদ্য কারামুক্ত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।
ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় ১৯৪৯-এ শেখ মুজিব দুইবার কারারুদ্ধ হন। ১৯৫২ সালের শুরু থেকে ভাষা আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে থাকে। ভাষা আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন বঙ্গবন্ধু কারাগারে ছিলেন। কারা অভ্যন্তরে থেকেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা পাঠাতেন।
এ বিষয়ে ভাষা সৈনিক গাজীউল হক তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন- ‘১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জনাব শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে আটক ছিলেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ’৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা জনাব শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে জেলে থেকেই তিনি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন।’
প্রসঙ্গত বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন চলাকালীন বাঙালিদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বাংলা ভাষার বিপক্ষে বিবৃতি দিলে আন্দোলন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। মুক্তিলাভের পর শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দীকে তাঁর মত পরিবর্তন করিয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে নতুন করে বিবৃতি প্রদানে বাধ্য করেন, যা শেখ মুজিবের পক্ষেই সম্ভব ছিল বলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী অভিমত ব্যক্ত করেন। বায়ান্নর ২৯ ফেব্রুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাকে এ বিবৃতি প্রকাশিত হয়।
২৭ এপ্রিল ১৯৫২ তারিখে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা ও মহকুমা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিনিধিত্ব সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৫৩-এর একুশের প্রথম বার্ষিকী উদযাপনে শেখ মুজিব অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আরমানিটোলা ময়দানে লক্ষাধিক লোকের সভায় শেখ মুজিব বক্তৃতা দেন। উক্ত জনসভায় তিনি ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস এবং বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার জোর দাবি জানান।
পরবর্তীতে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার এই ধারাবাহিক আন্দোলনের পথ ধরেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এসেছে আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা।  
স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালের সংবিধানে বঙ্গবন্ধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করেন। এটাই ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রণীত সংবিধান।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়ে এর আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিশ্ব মঞ্চে বাংলা ভাষায় পৃথিবীর মধ্যে সর্বপ্রথম ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু।
ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্থপতির ভূমিকা পালন করে পরবর্তীতে আমাদের একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে আত্মপ্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্যই বাঙ্গালী জাতি যুগ যুগ ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে  শ্রদ্ধা ও বিনম্র চিত্তে স্মরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ঘোষণা: আবেদনকারীর পাবেন ৬০ লাখ থেকে ২ কোটি

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল জনরায় নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উচ্চ শিক্ষার সম্প্রসারণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিলো, সেই ধারাবাহিকতায় এবার বিদেশের মাটিতে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহীদের কথা চিন্তা করে ঘোষণা করা হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০১৯’। আর এই ফেলোশিপের মাধ্যমে যারা উচ্চ শিক্ষা নেবেন তাদেরকে মাস্টার্সের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা ও পিএইচডি ডিগ্রীর জন্য ২ কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এই ফেলোশিপের আওতায় ন্যূনতম যোগ্যতাধারীরা আবেদন করতে পারবেন। যারা আবেদন করবেন তাদের অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। তবে যেসব শিক্ষার্থী এই ফেলোশিপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত হবেন সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং অবশ্যই যথাক্রমে ১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ’প্রকল্পের উচ্চতর শিক্ষায় (মাস্টার্স এবং পিএইচডি) ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ’-এর জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছ থেকে আবেদন পত্র আহবান করা হয়েছে।
সুযোগ-সুবিধা: মাস্টার্সের জন্য ৬০ লাখ টাকা ও পিএইচডির জন্য ২ কোটি টাকা দেয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা---
১. ১ জুলাই ২০১৯ - ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শর্তহীন অফার লেটার (ফুল টাইম)
২. বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আন্তর্জাতিক রেঙ্কিং ১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হতে হবে (The Times Higher Education World University Ranking 2019 বা QS World University Rankings 2019)
৩. TOEFL এর ফলাফল ৮০’র উপর হতে হবে এবং IELTS এর ফলাফল ৬ বা তার উপর হতে হবে।
৪. বয়সসীমা PhD এর জন্য ৪৫ এবং Masters এর জন্য ৪০ বছর।
আবেদন পদ্ধতি
আবেদনপত্রটি “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করে তা পূরণ করুন
আবেদনপত্রটি ইমেইল করে দিন pmfphd2019@gmail.com (পিএইচডি) pmfms2019@gmail.com (মাস্টার্স) ঠিকানায়
আপনার আবেদনপত্রটির সাথে নিম্নোক্ত নথিগুলো সংযুক্ত করে পাঠাবেনঃ
Microsoft Word এবং PDF, দুই ফর্মেটেই পাঠাতে হবে।
আপনার স্টেটমেন্ট অফ পারপাস, স্কলারশিপের উপযুক্ত সময়, আপনার প্রস্তাবিত গবেষণার সাথে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সম্পর্ক, পেশাগত জীবনে আপনার গবেষণার সম্ভাবনা এবং পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা পাঠাতে হবে।
শিক্ষাজীবনের সকল সনদ এবং নম্বর পত্র।
জাতীয় পরিচয়পত্র।
TOFEL/IELTS’র ফলাফল।
শর্তহীন অফার লেটার।
অভিজ্ঞতার সনদ।
সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
আবেদনের শেষ তারিখ: মার্চ ৩১, ২০১৯।
বিস্তারিত দেখুন: #অফিসিয়াল লিংক: https://shed.portal.gov.bd/sites/default/files/files/shed.portal.gov.bd/moedu_scholarship/5033ca3e_0634_4ef2_8632_728d7264e988/218.pdf?fbclid=IwAR10nSHWDlUroyL6nNnEZS4hYIJV7G0aPANQAUOgjw4c2nwGWfJ9jq3fmFM
কিংবা
https://bangla.youthop.com/fellowships/prime-minister-fellowship-announcement-2019?fbclid=IwAR2ie5ZyWt5n5pkBJUTKwiU_Nfb6wathzvFtwdl617B3nINtwcJgXX694hs

অশ্লীল ও নোংরা ছবিতে আসক্তি থেকে মুক্তির কিছু উপায়

তরুণ প্রজন্ম বর্তমানে অশ্লীল ও নোংরা ছবিতে আসক্তির ভয়াল নেশায় মত্ত হয়ে আছে। টিন এজার থেকে শুরু করে অনেক মধ্য বয়সী পুরুষও এই আসক্তিতে ভুগছেন। নিয়মিত অশ্লীল ছবি দেখার মাধ্যমে নিজের অজান্তেই নিজের ক্ষতির করে ফেলছেন অসংখ্য পুরুষ। অনেকেই এই বাজে অভ্যাসটির কুফল সম্পর্কে সচেতন হলেও অভ্যাসসহ বিভিন্ন কারণে তারা এর থেকে বের হতে পারছে না।  চিরতরে অশ্লীল ছবি দেখার অভ্যাসকে বিদায় জানাতে চলুন কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
প্রতিষেধক প্রতিকারের তুলনায় উত্তম। আপনার বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে দেখা হলেই আপনার দৃষ্টিকে সংযত করুন। একইরূপ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানসমূহ, নাটক, চলচ্চিত্র প্রভৃতিতে আপনার দৃষ্টিকে সংযত করুন। তাছাড়া ধর্মীয়ভাবেও বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যাপারে বলা হয়েছে পবিত্র কোরআন মাজীদে আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।’ (সূরা নূর, আয়াত: ৩০)
সবসময় নিজেকে সামাজিক কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায়, সামাজিক ও পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন এবং একা থেকে নিজের মধ্যে দুষ্ট চিন্তার চাষাবাদ রোধ করুন। এতে কাজ হলে সামাজিক বিভিন্ন কাজে নিজের সম্পৃক্ততা বাড়ান।
নিজের কাজ করার কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ প্রকাশ্য স্থানে রেখে কাজ করুন এবং রাতে বেডরুম থেকে সকল প্রকার মোবাইল বা অন্যান্য ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের উপযোগী যন্ত্র সরিয়ে রাখুন। শুধু নির্দিষ্ট প্রয়োজনেই ইন্টারনেট ব্যবহার করুন। কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট মুছে ফেলুন। এমন কোনও সফটওয়্যার ব্যবহার করুন, যা অশ্লীল ছবির  সাইট ব্লক করে দেয়। একা একা কম্পিউটারের সামনে বিনিদ্র রাত কাটানোর অভ্যাস বন্ধ করুন।
আপনি যদি নামাজী না হয়ে থাকেন তাহলে আজ থেকেই ৫ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করে দিন। কারণ, আল্লাহ্‌ বলেছেন– ‘নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীল কাজ ও পাপাচার থেকে দূরে রাখে’ (সূরা আনকাবুত ২৯:৪৫)। এক ঘরে যেমন একইভাবে আলো আর অন্ধকার থাকে না, তেমনি একই হৃদয়ে একইসাথে নামাজ আর অশ্লীলতা থাকতে পারবে না।
রাসূল (সা.) রোজাকে ঢালের সাথে তুলনা করেছেন। বিশেষ করে যারা বিবাহ করেনি, তাদের প্রতিরক্ষার জন্য তিনি একে উপযোগী হিসেবে বিবৃত করেছেন। রোজার মাধ্যমে শুধু যৌনাকাঙ্ক্ষাই প্রশমিত হয়না, বরং অন্যান্য অনেক প্রতিদান অর্জনও সম্ভব হয়। তাই অশ্লীল ছবির আসক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সর্বোপরি আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমেই অশ্লীল ছবিতে আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।   

অশ্লীল ছবিতে আসক্তি: অভিভাবকদের অসচেতনতায় ধ্বংসের পথে তরুণরা

বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ তরুণ-তরুণী অশ্লীল ছবির সাইটের প্রতি আসক্ত। অথচ এ ব্যাপারে অধিকাংশ অভিভাবক অসচেতন। এমনকি অনেক অভিভাবক ইন্টারনেট সম্পর্কে কোন ধারণা-ই রাখেন না।  অথচ সন্তানের পড়ালেখা ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে যতটা খোঁজ নেওয়া উচিত তার চেয়েও বেশি নজর রাখা উচিত সন্তানরা ইন্টারনেট দুনিয়ায় কি করে বেড়াচ্ছে, কৌতুহলবশত ধ্বংসের পথে পা বাড়াচ্ছে না তো ?
জীবনের শুরুতেই অশ্লীল ছবিতে এমন আসক্তি পাল্টে দিচ্ছে কারো কারো জীবন। কেউ কেউ কিশোর বয়স থেকেই হয়ে উঠছে বেপরোয়া। নারীসঙ্গ খুঁজতে হয়ে উঠে পাগলপ্রায়। এই কিশোরদের দিয়েই ঘটছে অঘটন। সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অশ্লীল ছবি দেখার কারণে শিশুরা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে না, যৌন সহিংসতার প্রতি আকৃষ্ট হয়, অশ্লীলতার চর্চা বেড়ে যায়, মা-বাবাকে অসম্মান করতে শেখে, সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যায় এবং মনে ধর্ষণের ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে।
স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অশ্লীল ছবির প্রতি আসক্তি। এই আসক্তি খুব সহজেই শিশুদের ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার জগতের দিকে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে এই শিশু-কিশোররাই জড়িয়ে পড়ছে বড় বড় অপরাধের সঙ্গে।
একটি বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে, রাজধানীতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের প্রায় ৭৭ ভাগ কোনো না কোনো ভাবে অশ্লীল ছবি দেখছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, বিকৃত যৌনশিক্ষার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা এসব শিশু পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি সরকারকে কঠোর হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। প্রসঙ্গত ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার অশ্লীল ছবির সাইট বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার।
মনোচিকিৎসকরা মনে করেন, এভাবে ছেলেমেয়েদের মধ্যে অশ্লীল ছবিতে আসক্তি বাড়তে থাকলে আগামী দুই দশকের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ আর ধর্মীয় অনুশাসন বলে কিছু থাকবে না। বয়ঃসন্ধিকালে প্রত্যেক শিশুকেই সুস্থ আর স্বাভাবিক যৌনতা সম্পর্কে জানা উচিত। যদি না জানে তার ফলে দেখা যায় তারা অশ্লীল ছবি দেখে যৌন সম্পর্ককে অস্বাভাবিক ভাবতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে তাদের সামাজিক আচরণে। এমনকি বড় হওয়ার পরে দাম্পত্য সম্পর্কে এর প্রভাব পড়ছে।
আমাদের সমাজে ধীরে ধীরে পারিবারিক বন্ধন কমে যাচ্ছে। বাবা মায়েরা অনেক বেশি ব্যস্ত থাকায় ছেলেমেয়েকে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেননাফলশ্রুতিতে সন্তানরা নিজের অজান্তেই অশ্লীল ছবিতে আসক্ত হয়ে অন্ধকার জগতে পা বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের কোনো বিষয়ে চাপ প্রয়োগ না করে তাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবেতারমধ্যে এমন মনোবৃত্তি তৈরি করতে হবে যেন সে লুকিয়ে লুকিয়ে অশ্লীল ছবি বা নিষিদ্ধ কোনো জিনিসের প্রতি আসক্ত না হয়। বাচ্চাদের এই মনোবৃত্তি তৈরিতে পরিবার, বাবা-মা, শিক্ষক, গণমাধ্যম সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই মুক্তি মিলবে এই ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে

২০ দলের শরিকদের ভাবনায় বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক

প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চলেছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান অংশীদার জামায়াত। ৭১-এ প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার জন্য নির্বাচন কমিশন কতৃক নিষিদ্ধ হয়েছে জামায়াত। তবুও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জামায়াত ছাড়ার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসায় অনেকটাই ক্ষুব্ধ ২০ দলীয় জোটের বাকি শরিকরা।
বেশ কয়েক বছর ধরেই জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে বিএনপির ওপর দেশি-বিদেশি চাপ রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা না হলেও গত বছরের নভেম্বর থেকে রাজপথের কর্মসূচিতে কৌশলে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। গত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদ নিয়ে দল দুটির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন দেখা গেছে। তবে আবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে প্রতীকী অনশনে জামায়াত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিএনপি-জামায়াতের এমন নাটকীয় সম্পর্ক নিয়ে নাখোশ ২০ দলীয় জোটের অধিকাংশ শরিকরা।
সম্প্রতি দল সংস্কার আর একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান নিয়ে জামায়াতের একাধিক নেতার  পদত্যাগ ও বহিষ্কারের ঘটনায় জামায়াতের অস্থিরতাকে দলটির নিজস্ব বিষয় বলে মনে করছে ২০ দলের শরিকরা। ২০ দলীয় জোটের শরিকদের পক্ষ থেকে বিএনপির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়ার জন্য। তবে বিএনপি এখনই তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির এক সিনিয়র নেতা বলেন জামায়াত নতুন নামে দলগঠন করার জন্য হয়তো কাজ করছে। জোটে থাকা-না থাকা সেটাও তাদের সিদ্ধান্ত। তবে জামায়াত জোটে না থাকলে তা ২০ দলের জন্য ইতিবাচক।  জামায়াতের অপকর্মের ফল ২০ দলীয় জোটের বহন করে চলার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
জোটের আরেক শরিক কল্যাণ পার্টির এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, জামায়াতের কারণে জাতীয়ভাবে আমাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের প্রতি তরুণ প্রজন্মের অনীহার অন্যতম কারণ বিএনপির এই জামায়াত প্রীতি। তাই অবিলম্বে জামায়াতকে পরিহার করে আমাদের নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের কয়েক নেতা জানান, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি বা জোটের এ ধরণের আচরণ কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ের নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। অনেকে জোট ছাড়ার জন্য বর্তমান নেতাদের ওপর চাপ দিচ্ছেন।
এখন দেখার অপেক্ষা শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিয়ে কি কৌশল অবলম্বন করে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট।

প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর: কী পেলো বাংলাদেশ?

টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর, প্রথম বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গেছেন শেখ হাসিনা। তার এই সফরে দেশটির সঙ্গে প্রথমবারের মতো ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছেপ্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের দুয়ার ফের উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকা-আবুধাবি সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে, সম্পর্কের পালে যুক্ত হবে আরও একটি পালক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের নতুন গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
প্রধানমন্ত্রীর আবুধাবি সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
চারটি সমঝোতা স্মারকের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে বিনিয়োগ বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের আওতায় দুই ধাপে ৮০০ থেকে ১০০০ মেগাওয়াটের এলএনজি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ এবং ১০০ মেগাওয়াটের আরেকটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
মাতারবাড়িতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন, দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিবিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে। মাতারবাড়িতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য সেখানে ৩০০ একর জমি বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া বন্দর উন্নয়ন, মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল, রেল, বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং পর্যটনসহ আরও কয়েকটি সেক্টর সহযোগিতায় বাংলাদেশের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি ও দুবাই সরকারের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের দুয়ার উন্মুক্ত হলে সংযুক্ত আরব আমিরাত হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। এর আগে ১৯ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বিগত ২০১২ সালের আগে দেশটিতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিক কাজ করতে যেত। আশা করা হচ্ছে, এবারের সফরে সব ক্ষেত্রে কর্মী নিয়োগ বিষয়ে সুখবর আসবে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন চিকিৎসা ও প্রকৌশলসহ বেশকিছু খাতে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা উন্মুক্ত রয়েছে। গত বছর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএই সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় সে দেশে অবৈধ হয়ে পড়া প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে দেশটিতে বাংলাদেশিদের আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরিতে অবদান রাখবে বলে আশা করছি।
প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব এই আমিরাত সফরকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে উক্ত সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আবুধাবির মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধির সঙ্গে বিনিয়োগ ও ব্যবসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।