Friday, October 5, 2018

জাতিসংঘ অধিবেশন থেকে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী : যা পেলো বাংলাদেশ

প্রতি বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হলো জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশন। এই অধিবেশন সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এটিই একমাত্র পরিষদ যেখানে জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত সকল রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও প্রতিনিধিত্বের অধিকারী হিসেবে অবস্থান করে। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র নিয়ে এই সংগঠনটি গঠিত হয়। এই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘মেকিং দ্য ইউনাইটেড নেশন্স রিলেভেন্ট টু অল পিপল: গ্লোবাল লিডারশিপ অ্যান্ড শেয়ারড রেসপনসিবিলিটিস ফর পিসফুল, ইকুইট্যাবল অ্যান্ড সাসটেইন্যাবল সোসাইটিজ।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শেষে দেশে ফিরেছেন। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। ওই দিন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া অভ্যর্থনায় যোগদান ছাড়াও ডাচ রাণী ম্যাক্সিমা এবং এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্সটি কালজুলাইদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পোম্পেও।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের খুনি রাশেদ কে. চৌধুরী বহুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক। এই খুনি রাশেদকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাশেদকে দেশে ফিরানোর জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন। প্রায়  দশ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে আলোচিত হয় বাংলাদেশ। সেই সাথে প্রশংসিত হন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে বিভিন্ন দেশের  প্রধানগণ ‘মাদার অব অব হিউম্যানিটি’ উপাধি প্রদান করেন। এই রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি রোহিঙ্গাদের তাদের নিজে দেশে ফেরত পাঠানোর অগ্রগতি নিয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের পৈতৃক নিবাসে নিরাপদে ফেরত পাঠানোর জন্য সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।’
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের জন্য তিনি বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের প্রধানগণকে চাপ সৃষ্টি করার জন্য আহ্বান জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সাইবার নিরাপত্তা, শান্তি রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বিশ্বের মাদক সমস্যা নিয়ে কথা বলেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে প্রধানমন্ত্রী দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করেন। এগুলো হচ্ছে- বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিসের (আইপিএস) ‘ইন্টার ন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকং ভিত্তিক তিনটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক ‘গ্লোবাল হোপ’ কোয়ালিশনের ‘স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ’। সম্মাননা পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সম্মাননা বাংলাদেশের, দেশের মানুষের।’ তিনি তাঁর এই সম্মাননা দেশের মানুষের প্রতি উৎসর্গ করেছেন।
বিশ্বের কোণে কোণে আজ বাংলাদেশের জয়গান শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রগতির জন্য পাঞ্জেরীর মতো সাথে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

No comments:

Post a Comment