Tuesday, October 9, 2018

খালেদা জিয়াকে সুস্থ দাবি করছেন তারেক রহমান, কেন?

নিউজ ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারেক রহমান। তিনি মনে করছেন, আগামী ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে ভর্তি থাকার কারণে তার চিকিৎসা নির্বিঘ্ন করতে তা থেকে বিরত থাকবে দলীয় নেতাকর্মীরা। এ কারণে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে তারেক রহমান দণ্ডিত হলেও তার পক্ষে কেউই রাস্তায় নামবে না। আর যেকোন ইস্যুতে শাহবাগের মতো জায়গায় আন্দোলন না হওয়া মানে তা ব্যর্থ বলেই মনে করছেন তারেক রহমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লন্ডন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মালেক।
আব্দুল মালেক আরও বলেন, তারেক রহমান মনে করছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের আগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতেই সরকার এই কৌশল নিয়েছে। আর তাই খালেদা জিয়া সুস্থ- এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন তারেক রহমান।
তবে বেগম জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে মির্জা ফখরুলপন্থী নেতারা মনে করছেন, তার সুচিকিৎসা দরকার। এই চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হলেই ভালো হয়। পাশাপাশি তারেক রহমানের আপত্তিকে তারা ‘সংকীর্ণ’ এবং মাকে জিম্মি করে রাখার কৌশল হিসেবে দেখছেন। তারা এও বলছেন, তারেক রহমান কাগজে কলমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ফলে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করানো নিয়ে তারেক রহমানের মতামত না নেয়ায় ক্ষুব্ধ লন্ডনে পলাতক এই নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বেগম জিয়ার এই পরিণতির জন্য দায়ী তারেক রহমান নিজেই। শুনতে খারাপ শোনালেও বলতে বাধ্য হচ্ছি- তারেক রহমান এখন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
জানা গেছে, এ কারণে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে টেলিফোনে ক্ষোভও ঝেড়েছেন তারেক। তারেক মনে করছেন, এর ফলে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় নির্বিঘ্নে দেওয়ার পথ তৈরি করল সরকার।
তারেক রহমান মির্জা ফখরুলকে জিজ্ঞেস করেন, কী এমন ঘটলো যে এখনই তাকে বিএসএমএমইউতে যেতে হবে? বরং বেগম জিয়া যদি হাসপাতালে যেতে অস্বীকৃতি জানাতেন, তাহলে ১০ অক্টোবর ঘিরে একটা বড় শো ডাউনের সম্ভাবনা ছিল। যদিও বিএনপি মহাসচিব তারেক রহমানকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, এটা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত না মানলে বেগম জিয়ার চিকিৎসাই বন্ধ হয়ে যেত।
তাছাড়া বিএনপি মহাসচিব মনে করেন, নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে স্থানান্তর হওয়ায় বেগম জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন সহজেই বিভিন্ন ব্যাপারে তার পরামর্শ গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু তারেক রহমান তেমনটি মনে করেন না। বরং তারেক মনে করেন, এর ফলে বিএনপির সব গোপনীয়তাই ফাঁস হয়ে যাবে। সরকার পক্ষের নজরদারির ফাঁদে পড়ে বেগম জিয়ার সব নির্দেশ এবং পরামর্শই সরকারের কাছে আগাম চলে যাবে। সরকার সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সূত্র বলছে, তারেক রহমান ক্ষুব্ধ হলেও বিএনপি নেতারা বেগম জিয়া হাসপাতালে স্থানান্তর হওয়ায় খুশি। তারা মনে করছেন, এটাও একটা বিজয়। তারা সুচিকিৎসার যে দাবি আদায় করতে চেয়েছিলেন, তা অর্জিত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment