Sunday, December 9, 2018

যে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি

দেশে জোরেশোরেই বেজে ওঠেছে নির্বাচনী দামামা। নারী-পুরুষ সকলেই এখন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটদান করতে উন্মুখ হয়ে আছেন।
দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই বর্তমানে নির্বাচনমুখী। তবে উৎসবের এই আমেজেও দু:শ্চিন্তার ছাপ একটি মহলে। তারা আঁটছেন অসংখ্য ফন্দি। লক্ষ্য একটিই, আসন্ন নির্বাচনকে বিতর্কিত করা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপি পুরোপুরি হতাশ। কারাগার থেকে খালেদা জিয়া কিংবা লন্ডন থেকে তারেকের কন্ঠেও ঝরে পড়ছে হতাশা। তাদের গণবিরোধী-সন্ত্রাসী চরিত্রটি জনসম্মুখে চলে আসায় তারা নির্বাচনে আস্থা রাখতে পারছেন না। যদিওবা এই দলটির বাঁকা পথে ক্ষমতায় আসার খায়েশ বহু বছরের। সে অনুযায়ী চলছে পরিকল্পনা। পুরো ব্যাপারটিই দেখভাল করছেন ফখরুল-মওদুদ-আব্বাস গং।
বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করাই এখন বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। অথচ দেশবাসী জানে, সাংবিধানিক পন্থাতেই এবারের কমিশন গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটিতে সকল দলের মতামত নেয়া হয়েছিলো। সবার মতামতের ভিত্তিতে গঠিত হওয়া এ কমিশনকেই বিতর্কিত করা বিএনপির এবারের মিশন। এমনকি কমিশনে বিএনপির প্রস্তাবকৃত কমিশনারও রয়েছেন। তবে কি বিএনপি আজিজ মার্কা কমিশন চায়? তাদেরকে কোলে তুলে ক্ষমতায় বসিয়ে দিলেই কি কেবল তারা খুশি হবেন?
সত্য হচ্ছে, বিএনপি দলীয় নির্বাচন কমিশন এবং দলীয় সরকার না পেলে সাধারণত নির্বাচনে যায় না। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, সে নির্বাচনের ফলকে দলের অনুকূলে আনার সুযোগ না থাকলে সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাকে তারা আত্নঘাতী হিসেবে বিবেচনা করে। কেননা সুষ্ঠু নির্বাচন খালেদা, তারেকের কাছে কখনোই কাঙ্খিত নয়।
তাই বর্তমান পরিবেশে যখন কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা, সংকট নেই, তখন বারবার ফখরুলের মুখে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের’ নামে নির্বাচন কমিশনকে অকার্যকর, পক্ষপাতমূলক প্রমাণ করাটা হয়ে উঠেছে প্রধান কাজ, যাতে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করা বিএনপির পক্ষে সহজ হয়। যদিও অনেকে শঙ্কিত এই ভেবে যে, বিএনপি শেষমেষ নির্বাচনে আসবে কিনা! নাকি বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচনী ট্রেন থেকে নেমে যাবে!
যখন বিএনপি কর্তৃক ৮০ থেকে ৯০ জন নানা পর্যায়ের অফিসার কর্মকর্তাকে বদলির জন্য তালিকা দেয়া হয়। তখন সন্দেহ হয় যে, লতিফুর রহমানের মতো মুক্তিযুদ্ধপন্থী কর্মকর্তাদের বদলির জন্য তারা আবেদন জানাচ্ছে কি-না! কারণ, সরকারী প্রশাসনে যারা নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে তারা অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার কথা, তাদেরকে তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাস থাকা বা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়া অপরাধ গণ্য করছে বিএনপির নেতা-নেত্রীরা।
এদিকে নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিয়ত আরো অসংখ্য ভিত্তিহীন অভিযোগ জমা দিচ্ছে দলটি। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কমিশন তা গ্রহণ করছে, কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে অবাক হচ্ছেন তারা। সবগুলো অভিযোগই যে ভিত্তিহীন।
তাই একথা দিবালোকের মতো সত্য যে, বিএনপি বর্তমান নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে চায়। এর মাধ্যমে তারা তাদের খায়েশ পূরণ করতে চায়, দেশকে নিতে চায় পাকিস্তানী ভাবধারায়। তবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বিএনপির চক্রান্ত সফল হবে না, এমনটাই মতামত বিশ্লেষকদের।

No comments:

Post a Comment