Tuesday, December 18, 2018

আসছে বিদেশী টাকা, অরাজকতার পরিকল্পণায় বিএনপি-জামায়াত

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সকল ভোট কেন্দ্রগুলা দখল করার পায়তারা করছে অস্তিত্যের সঙ্কটে থাকা বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে থানা ঘেরাও কর্মসূচিরও পরিকল্পনা করছে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী একাধিক শক্তি। আর এই কর্মসূচির শতভাগ সফল করতে বিদেশ থেকে হাজার-হাজার কোটি টাকা চোরাই পথে দেশের অভ্যন্তরে আসছে বলে গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছে।
গোয়েন্দ সুত্রে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি প্রচারণার কোনো সুযোগই পাচ্ছে না এমন বাহানায় অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে থানা ঘেরাও কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ছয় হাজার কোটিরও ওপরে টাকা ছাড়ানো হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। যেখানে দেশের বাইরে থেকে বিশেষ ব্যক্তিদের সহযোগিতায় লিবিয়াসহ একাধিক দেশের মুদ্রা এরইমদ্ধে গোপনে দেশে এসেছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে দুর্নীতির দায়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জামায়াতে ইসলামের বিভিন্ন নেতারা।
২০১৩ সালের ১ আগস্টে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপর চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বাধীন মহাজোট নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করে। গত দশ বছরের যুদ্ধাপরাধের দায় প্রমাণীত হওয়ায় জামায়াতের অধিকাংশ শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর হয়েচে এরই মধ্যে। অনেকে যাবৎজীবনের সাজাভোগও করছে। আর এতেই দলটি বর্তমানে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। ফলে দেশজুড়ে দলটির অনুসারিরা হামলার পর হামলা চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
এদিকে জামায়াতের পাশাপাশি দুর্নীতিতে জর্জরিত বিএনপির দলের নেতাকর্মীরাও নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া হয়ে আছে। ২০০১ সালে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জিয়া পুত্র তারেক রহমানের নেতৃত্বে একের পর এক দুর্নীতি, অর্থ পাচার, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও জঙ্গিবাদের প্রশ্রয়সহ দেশে লুটতরাজ চালায় দলটির নেতাকর্মীরা। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার মহাজোটের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের দুর্নীতির নানান কুকীর্তির বিচার কাজ শুরু হয়।
দুর্নীতিতে পর্যদুস্ত বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে আয়োজিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে। সেই সময়টাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সারাদেশে সাধারণ মানুষের ওপর মুহুর্মুহু পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা থেকে শুরু করে অগ্নিসন্ত্রাসসহ সমস্ত রকমের শোধ নিতে শুরু করে। পরে অবস্য সরকার দেশের শান্তি ফিরাতে তাদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে নির্দেশ দেয়। ফলে টানা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি তাদের সন্ত্রাসবাদের শেষ ক্ষমতাটুকুও হারায়।
এরমাঝে দুর্নীতির দায়ে দশ বছরের সাজা হয় বিএনপির প্রধান বেগম খালেদা জিয়ো ও তার পুত্র তারেক রহমানের। বেগম জিয়া বর্তমানে কারাগারে বন্দি থাকলেও তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে পালাতক রয়েছে।
এদিকে নেতার অভাবে ধুকতে থাকা বিএনপি দেশের রাজনীতিতে অস্তিত্ব হারানোর অবস্থায় পৌছায়। দলটি এমন অবস্থায় চলে এসেছে যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলছুট নেতার অধিনে নতুন জোট গঠন করতে হয়েছে।
বিএনপি নিজেদের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য ড. কামাল হোসেনের মতো বিভিন্ন দলছুট নেতাদের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তবে এ নির্বাচনে বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত থাকায় প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হয়েছে।
যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছে তাদের অনেকে আবার তারেক রহমানের রমরমা মনোনয়ন বাণিজ্যে সোনার ডিম পাড়া হাঁস। আর যারা তারেক রহমানকে অর্থ দেয়ার পরও মনোনয়ন পায়নি তারা ক্ষুব্ধ হয়ে দেশ জুড়ে নিজ দলের প্রার্থী, বিরোধী দল ও এমনকি সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সে সকল অপরাধের প্রমাণ পেয়ে ব্যাবস্থা নিতে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে জামায়াত-বিএনপির সমন্বিত সশস্ত্র দল।
বিজিবির এক কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, ‘সরকারবিরোধী জোট নির্বাচনি কর্মসূচির নামে আন্দোলন করতে যে অর্থ ব্যবহার করছে; সে তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। ওই অর্থের সন্ধানে বিজিবি পথে পথে চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি করছে।’
সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরে ২১ তারিখের পর এবং ২৭ তারিখের আগে যেকোনো একদিন একযোগে একই সময় সারাদেশের সব থানা ঘেরাও করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে, ওই দিন সকাল থেকে থানা বিএনপি ও জামায়াতের সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা জড়ো হবে। নির্ধারিত সময়ে প্রার্থী মিছিল নিয়ে থানায় সামনে বসে যাবে। এমন কর্মসূচির উদ্দেশে সারা দেশের পুলিশের মনোবল দুর্বল ও দেশবাসীর কাছে সরকারবিরোধী শক্তির সম্পর্কে জানান দেওয়া। অবশ্য এসব বিষয়ে গোয়েন্দা সদস্যদের কাছে আরও বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, যেকোনো এক দিন থানা ঘেরাও কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে অরাজকতার চেষ্টা করবে।

No comments:

Post a Comment