Friday, December 21, 2018

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে জামায়াত, কৌশল দেখছে বিশ্লেষকরা

নিউজ ডেস্ক: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার স্থগিত নিয়ে বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলো যুদ্ধাপরাধীদের দল খ্যাত জামায়াতে ইসলামী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলের নেতারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে মানবতাবিরোধীদের বিচার করা হবে। জামায়াতের এমন প্রতিশ্রুতিকে ‘জোকস অব দ্য ইয়ার’ বলে তাচ্ছিল্য করছে অনেকেই। আবার কেউ কেউ বলছে, ক্ষমতায় এলে হয়তো তারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’ বলে চালিয়ে দেবে।
বিগত সময়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জামায়াতের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতারই ফাঁসি হয়েছে। কয়েকজন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন। এদিকে ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনী ইশতেহারে জানিয়েছে, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে।’ তবে চলমান যে অবয়বে, পদ্ধতিতে কার্যক্রম চলছে, তাতে যোগ-বিয়োজন হবে কিনা এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু ইশতেহারে বলেনি ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার অনুযায়ী জামায়াতের অঙ্গীকার সম্বন্ধে জানতে নেতারা এসব বিষয় জানিয়েছেন।
জামায়াত নেতারা বলছেন, বিদ্যমান যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আছে তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখে ‘প্রকৃত’ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে জামায়াতের।
এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সিলেট মহানগর দক্ষিণের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি কী আমি এখনও জানি না, তবে আমরা ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত থাকবে। বিচার করবো ইনশাল্লাহ। যুদ্ধাপরাধীদের আইনে যারা পড়বে, ‘তাদেরও’ বিচার করবো।’
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘জামায়াতের কৌশল বোঝা দুষ্কর। যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে স্বীকৃত জামায়াত নেতারা যখন বলছেন, তারা ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে তখন তাদের সেই অঙ্গীকারে কোন বিশেষ উদ্দেশ্য আছে কিনা তা ভাববার অবকাশ রয়েছে।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক অনেকটা রসিকতা করে বলেন, এমনও হতে পারে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি বলে চালিয়ে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, মীর কাশেম আলীর এবং সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন সাবেক আমির গোলাম আজম, সাবেক নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অনেকে। এই নেতাদের দলীয় ও সাংগঠনিকভাবে ‘সম্মানের’ সঙ্গেই বিবেচনা করে আসছে জামায়াত এবং দলটির অনুজ ছাত্র শিবির।

No comments:

Post a Comment