Monday, December 24, 2018

যশোরে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নে বিক্ষুব্ধ ভোটাররা

নিউজ ডেস্ক: যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে দু’টিতেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠনের নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে হতাশ এলাকার ভোটার ও মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে বিএনপি জোট স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।
এ প্রসঙ্গে একজন ভোটার বলেন, বাংলাদেশের কনসেপশনে যারা বিশ্বাস করে না তারা কিভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে? অন্য আরেকজন ভোটার বলেন, দেশ-জাতির যে অগ্রগতি এটাকে সমুন্নত রাখতে গেলে এদেরকে বর্জন করা একান্তভাবে প্রয়োজন।
২০১৩-১৪ সালে দেশব্যাপী যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিলো জামায়াত শিবির কর্মীরা, তার থেকে বাদ যায়নি যশোর জেলাও। জেলার মনিরামপুর, ঝিকরগাছাসহ আরো কয়েকটি স্থানে চলে নাশকতা, পেট্রোল বোমা ছোঁড়ার ঘটনা। সাধারণ মানুষের মন থেকে সেই বিভীষিকা মুছে যায়নি এখনও।
এরইমধ্যে এখানকার দুটি আসন-ঝিকরগাছা-চৌগাছা নিয়ে গঠিত যশোর-২ আসনে জামায়াত নেতা এবং মনিরামপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৫ আসনে আরেক স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জমিয়তে উলামা আল ইসলামীর নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি জোট। এই মনোনয়নকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।
বাংলাদেশের ধারণাতেই যারা বিশ্বাস করে না, তারা কী করে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাধারণ ভোটাররা। জাতির অগ্রগতি সমুন্নত রাখতে এদের বর্জন করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
বৃহত্তর যশোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উপ-অধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম জানান, একাত্তরের এগারো ডিসেম্বর টাউন হল মাঠে এক সমাবেশে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ জামায়াতের পাশাপাশি মুসলিম লীগ, নেজামী ইসলামী এবং জমিয়তে উলামাকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। এখন তাদের মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি জোট জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে বলে মনে করেন তিনি।
যশোরের পুলিশ সুপার মইনুল হক জানিয়েছে, নির্বাচনে জামায়াত-শিবির নাশকতা করতে পারে সে বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছেন তারা। ২০১৩-১৪ সালের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুত যেকোন সহিংসতা রুখে দিতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি তার ইশতেহারে ঘাতক-দালালদের বিচারের দাবি তোলেনি, একাত্তরের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের তারা প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আমরা আশঙ্কা করি।’
এদিকে পুলিশ সুপার মইনুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন তারা। তবে জামায়াত-শিবির নাশকতা করতে পারে অতীতের এমন অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ তৈরিতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

No comments:

Post a Comment