Tuesday, December 18, 2018

‘রা’ নেই সুশীলদের

জনসাধারণ বলেন, ‘তারা হঠাৎ সরব হন, আবার হঠাৎ চুপসে যান’। বিশেষ বিশেষ মৌসুমে তারা নড়েন-চড়েন, বিশেষ কিছু স্থানে দৌড়ঝাপও করেন। আমজনতার মতে, তাদের মতিগতিও বোঝা ভার’। তারা ‘সুশীল’ নামে পরিচিত।
যদিওবা সুশীল শব্দের আক্ষরিক অর্থ নাপিত। তবে এই বঙ্গদেশের অতি পণ্ডিতদের কাছে এসে শব্দটির অর্থই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এই অতি পণ্ডিতেরা নিজেদেরকেই ‘সুশীল’ হিসেবে হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
দুনিয়ার হেন কোনো বিষয় নেই যা এদেশের সুশীলরা জানেন না! অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, ভূগোল, রসায়ন, মনোবিজ্ঞানসহ সব বিষয়েই তাদের তুমুল পাণ্ডিত্য। অন্তত তারা এমনটাই ভাবেন। এসব বিষয়ে তাদের আগ্রহও ব্যাপক। তবে এদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেশের রাজনীতি অঙ্গন নিয়ে। কেননা এখানে  বিশেষ মিশন বাস্তবায়নে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বেশ ভক্তি ভরে তাদের পকেটে অর্থ সরবরাহ করেন।
কিন্তু তারা তাদের পান্ডিত্য সবসময় দেখান না। বিশেষ দেশ ও বিশেষ মহলের ইশারায়, সুস্পষ্ট নির্দেশেই তারা মাঠে নামেন। আরও স্পষ্ট করে বললে পাকিস্তান, বিএনপি-জামায়াতের মিশন বাস্তবায়নই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
দেশে নির্বাচন এলেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা শুরু হয় তাদের। নেমেছিলেন এবারও।
এবার বেশ আগেভাগেই মাঠে নামেন এসব ‘স্বঘোষিত সুশীলেরা’। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বিএনপি-জামায়াতের সাথে সুর মিলিয়ে উদ্ভট সব দাবি-দাওয়া পেশ করতে থাকেন তারা। উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগ সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো উপায়ে বিতর্কিত করা।
তাদের পাতা সেই ফাঁদে পা দেননি শেখ হাসিনা। সংলাপে আসা বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের সকল অন্যায় আবদারকে সংবিধান ও যুক্তি দিয়ে তাদের অয়ৌক্তিক দাবিগুলো মোকাবেলা করেছেন। বজায় রেখেছেন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা।
বরং ডিজিটাল বাংলাদেশের যোগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একের পর এক বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নে ধরাশয়ী হয়েছেন ষড়যন্ত্রকারীরা।
সংবিধান অনুযায়ী স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন। অথচ এ প্রতিষ্ঠানটিকেও যেকোনো উপায়ে বিতর্কিত করতে চেয়েছিলো দেশবিরোধী অপশক্তিটি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ সফলতার সাথে পালন করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সুনিশ্চিত করে। ফলে চুপসে যায় বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট। বিতর্ক তৈরির মতো কোনো ইস্যু না পেয়ে তারা এখন ভুগছে হতাশায়।
বড় বিপাকে পড়েছেন তথাকথিত সুশীলেরাও।  পাকিস্তান, বিএনপি-জামায়াত থেকে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ করেও মিশন বাস্তবায়ন করতে না পারার ব্যর্থতায় তারা এখন মুখ লুকোতে ব্যস্ত। কোথাও নেই তাদের বক্তৃতা,বিবৃতি কিংবা গালফুলোনো বুলি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত আর তৎপরতা দেখা যাবে না এসব জ্ঞানপাপীদের। তবে আবারও সুযোগ নেয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলেই তারা যে মাঠে নামবেন, তা হলফ করেই বলা চলে।

No comments:

Post a Comment