Saturday, November 24, 2018

খন্দকার মোশাররফকে রাষ্ট্রপতি ও মির্জা ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি

দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। অন্যদিকে একাধিক মামলার দণ্ড নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের দুই কাণ্ডারির রাজনীতিতে সরাসরি অনুপস্থিতির কারণে তৃণমূল বিএনপিতে দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন উঠেছে। তৃণমূল বিএনপি মনে করে, খালেদা সহসাই জেল থেকে মুক্তি পাবেন না আর তারেক রহমানের পক্ষে দেশে ফেরা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনে যদি ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হয় তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে, রাষ্ট্রপতির পদে দলটির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পদে মির্জা ফখরুল ইসলামকে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি। দলটির একাধিক তৃণমূল সূত্রে বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
বিএনপি সংস্কারপন্থী নেতা জহির উদ্দিন স্বপন মনে করেন, বিএনপি দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। দলটির প্রাণ হল তৃণমূল। এছাড়া সাধারণ মানুষেরও বিএনপির প্রতি কিছুটা হলেও সহানুভূতি রয়েছে। তবে বিগত ২০০১ সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি ব্যাকফুটে চলে যায়। ক্রমাগতভাবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপেক্ষা করে ইচ্ছামত দল চালানোর কারণে লাখ লাখ কর্মী পরবর্তীতে দলবিমুখ হয়ে পড়ে। তারই পরিণাম ভোগ করতে হচ্ছে বর্তমান সময়ে এসে। আন্দোলন-সংগ্রামে তাই তৃণমূল বিএনপির অংশগ্রহণ তুলনামূলক অনেক কমে গেছে। এছাড়া খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হওয়ায় তৃণমূল বিএনপি তাদের উপর ক্রমেই আস্থা হারিয়ে ফেলছে। সেই তুলনায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল বিএনপি। এছাড়া সামনে নির্বাচন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে যদি ঐক্যফ্রন্ট সরকার গঠন করতে পারে তবে সেই সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেখতে চায় তৃণমূল বিএনপি। কারণ এই দুই নেতা তৃণমূল বিএনপির কাছে জনপ্রিয়। দলে তাদের প্রভাবও ব্যাপক। তারা দুজন এই পদগুলোতে বসলে বিএনপি পুনরায় সার্বজনীন জনপ্রিয়তা ফিরে পাবে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতারা।
এই বিষয়ে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বিএনপির কোন পরিচয় নেই, এটি সত্য। তবে বাস্তবতা এখন কিছুটা ভিন্ন। দুজনই মামলার জালে আটকে পড়ায় দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে বিএনপি, বিশেষ করে তৃণমূল বিএনপি। আজ একটাই প্রশ্ন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কারা হবেন বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতা? কাদের নেতৃত্বে বিএনপি রাজনীতি করবে? আমি তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীর সাথে কথা বলেছি এসব বিষয়ে। তারা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে দেখতে চায়। আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি জয়ী হয় তবে খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে রাষ্ট্রপতি ও মির্জা ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ দিলে তৃণমূল বিএনপি খুশি হবে। দল বাঁচাতে হলে তৃণমূলকে মূল্যায়ন করা ছাড়া বিকল্প কিছু দেখছি না। কারণ তৃণমূল নেতৃত্বই বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে পারে এবং আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করবে। সুতরাং বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য হাই কমান্ডকে অনুরোধ করছি।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অপরাধ-দুর্নীতি বিবেচনা করে বিএনপিকে তরুণ প্রজন্ম ও সচেতন নাগরিকদের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে হলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামকে দলের নেতৃত্বভার দেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

No comments:

Post a Comment