Wednesday, November 28, 2018

তারেক রহমানকে সন্তুষ্ট করতে না পারায় কপাল পুড়লো আবদুল আউয়াল মিন্টুর, ক্ষুব্ধ তাবিথ আউয়াল

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির তরফ থেকে চমক দেখানো হলেও কপাল পুড়েছে কিছু পরীক্ষিত নেতার। দলের ভেতর গুঞ্জন উঠেছে, মনোনয়ন বাণিজ্যে লাভবান হওয়ার জন্য তারেক রহমানের নির্দেশে নিবেদিত ও জনপ্রিয় নেতাদের অবজ্ঞা করে পয়সাওয়ালা হাইব্রিড ও সংস্কারপন্থী নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সেই বাণিজ্যে অর্থের সমীকরণে এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু। বিএনপির ব্যাংকখ্যাত মিন্টুর মনোনয়ন না পাওয়ায় হতবাক হয়েছেন দলের নেতৃবৃন্দ। বলা হচ্ছে, তারেক রহমানকে আর্থিকভাবে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিন্টুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে প্রথম থেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে ছিলেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। নির্বাচনে টিকিট কনফার্ম করার জন্য অনেক সিনিয়র নেতা ও মনোনয়ন প্রত্যাশী বিগত কয়েক মাস আগেই গোপনে লন্ডন সফর করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। বিএনপির বিত্তশালী নেতা মিন্টুও একাধিকবার লন্ডন সফর করেন। বিএনপি নেতারা ধারণা করেছিলেন ফেনী অথবা ঢাকার একটি আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করবেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। কারণ দলের ভেতর গুঞ্জন রয়েছে, বিএনপির বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম, কোটা বিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে তারেক রহমানের নির্দেশে দুহাতে অর্থ বিনিয়োগ করেন মিন্টু। বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানে নিয়মিত চাঁদা দিয়েছেন মিন্টু। এত কিছু করার পরও মিন্টুর মতো নেতা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না মিন্টুর সমর্থকরা। জানা গেছে, তারেক রহমানকে সন্তুষ্ট করতে না পারার কারণে মনোনয়ন পাননি মিন্টু।
এই বিষয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, আমার বাবা (আবদুল আউয়াল মিন্টু) বিএনপির নিবেদিত ও পরীক্ষিত নেতা। দলের বিপর্যয়ে সব সময় পাশে ছিলেন। বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠান, সমাবেশে অকাতরে অর্থ বিলিয়েছেন, দলের পেছনে বিনিয়োগ করেছেন। কিছুদিন পূর্বে লন্ডন সফরকালে তারেক স্যার বাবাকে ফেনী অথবা ঢাকার একটি আসনে মনোনয়ন দেয়ারও ওয়াদা করেছিলেন। অথচ বাস্তবতা দেখুন! বাবার মতো নিবেদিত নেতাকে বাদ দিয়ে সংস্কারপন্থী ও সুবিধাবাদী নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছেন তারেক স্যার। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত। তারেক স্যারকে আর কোন উপায়ে সন্তুষ্ট করে মনোনয়ন পাওয়া যাবে সেটি আমাদের জানা নেই। বিএনপির এমন পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্তের কারণে অনেক নেতাই দল বিমুখ হয়ে পড়ছেন।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া বা না দেয়ার অধিকার কেবল তারেক স্যারের রয়েছে। বিএনপি করতে হলে তার সিদ্ধান্ত মানতে হবে। মিন্টু সাহেবকে মনোনয়ন না দেয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা রয়েছে, সম্পদ গোপন করার মামলা রয়েছে। সুতরাং বিত্তশালী হলেও একজন চিহ্নিত অর্থ পাচারকারীকে মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি কলঙ্কের ভাগ নিবে না। মিন্টুতো সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তিনি তো ব্যবসায়ী। ব্যবসার খাতিরেই বিএনপি করেন। সুতরাং এসব নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই। আর মিন্টু সাহেবের প্রতি আমার পরামর্শ হলো, ধৈর্য ধারণ করতে হবে। দল ক্ষমতায় আসলে বিকল্প কোন পদ পেতে পারেন তিনি। কারণ কিছুটা হলেও দলে তার অবদান রয়েছে। আর তারেক স্যারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

No comments:

Post a Comment