Wednesday, November 28, 2018

খালেদা-তারেককে মাইনাসে সফলতার সাক্ষী মির্জা ফখরুলের অশ্রু, বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক: বর্তমান সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি হিসেবে বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মনোনয়নের চিঠি বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয়েছে দলটির চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল তিনটায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এ চিঠি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চিঠি বিতরণকালে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তখন তিনি বলেন,‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনে যেতে হচ্ছে। খালেদাকে মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি।’ এদিকে নির্বাচনে পূর্বে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে সরকার বিরোধী আন্দোলনের আগুনে হাওয়া দেওয়ার অপচেষ্টায় মির্জা ফখরুল কুমিরাশ্রু বিসর্জন দিয়েছেন বলে সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেই বিএনপির একটি অংশের নেতৃত্বে সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে তৃণমূল পর্যায়ে বৈধতা অর্জন করতে মির্জা ফখরুল অশ্রু বিসর্জনের কৌশল অবলম্বন করেছেন। পক্ষান্তরে, খালেদা-তারেককে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার নিজেদের দীর্ঘদিনের সাজানো পরিকল্পনায় সফলতা অর্জন করায় খুশি হয়েই মির্জা ফখরুল কান্নার মাধ্যমে তৃণমূলকে বুড়ি আঙুল দেখিয়েছেন বলেও বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুলের কান্নার বিষয়টিকে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক এ আরাফাত বলেন, গুঞ্জন আগে থেকেই চাউর হয়েছিলো যে, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস করার জন্য বিএনপির একটি চক্রান্ত করছে। বিষয়টি নিয়েও বিএনপি নেতাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো। তখনও মির্জা ফখরুলদের মতো সুবিধাবাদী বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও সেটি যে আসলে প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র ছিলো সেটি পরিষ্কার হলো তৃণমূল বিএনপির কাছে। আমার ধারণা, ড. কামালদের প্ররোচনায় পড়ে বিএনপির মালিক হতেই মির্জা ফখরুলদের মতো সুযোগ সন্ধানী নেতারা এমন দিনের অপেক্ষা দীর্ঘদিন ধরেই করছিলেন। সেই অর্থে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হলো। বিএনপির রাজনীতিতে জিয়া পরিবারের উপস্থিতি ক্রমেই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটিই প্রমাণ করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। মির্জা ফখরুলের কান্না আমার কাছে ষড়যন্ত্র সফল হওয়ার আভাস মনে হয়েছে। জিয়া পরিবার ও বিএনপির ভাঙন আমি দেখতে পাচ্ছি।
বিষয়টিকে দীর্ঘদিনের সাজানো পরিকল্পনার চূড়ান্ত মঞ্চায়ন বলে মন্তব্য করে বিএনপি সাবেক নেতা ও বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, মির্জা ফখরুলের মিথ্যা কান্না দেখে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য আমার করুণা হচ্ছে। যাকে এতটা বিশ্বাস করলেন বেগম জিয়া ও তারেক, সেই মির্জা ফখরুল বিএনপির সাথে বেইমানি করে নিজেদের স্বার্থ ঠিকই উদ্ধার করতে সমর্থ হলেন। আমি শুরু থেকেই বলছিলাম, মির্জা ফখরুল বিএনপির জন্য ক্ষতিকারক। তার দ্বিচারিতার জন্য দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমার কথায় কান দেননি বেগম জিয়া। বিএনপিকে আন্দোলন বিমুখ ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত করেছেন মির্জা ফখরুল গং। জিয়া পরিবারকে উৎখাত করে বিএনপির নেতৃত্ব নিজ হাতে দখল নিতে সফল হয়েছেন মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুলের কুমিরাশ্রুতে বিএনপি ভাঙন ও জিয়া পরিবারকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়েছে।

No comments:

Post a Comment