Sunday, November 18, 2018

রঙ্গভরা বঙ্গদেশঃ জিয়ার ধানের শীষ আজ কাদের, কামালের!

বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারেই নির্বাচনে যাচ্ছে, এ সংবাদ ইতোমধ্যে বেশ পুরোনো হয়ে গিয়েছে। অসংখ্য অপকর্মের দায়ে অস্তিত্ব বিলীন হতে যাচ্ছে যে দলের, তারা যে খড়কুটো ধরেই আশ্রয় চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। কামাল, মান্না, আব্দুর রব গংকে পাশে পেয়েছে ‘ঈদের পরে আন্দোলন’ খ্যাত ফখরুল এবং বিবৃতি রিজভী।
তবে বেশ অবাক করা খবর হচ্ছে, সন্ত্রাসের গডফাদার তারেকের মার্কা ধানের শীষ নিয়েই নির্বাচনের মাঠে নামছেন নীতিকথার এই আড়ৎদারেরা। এই বিস্ময়কর সংবাদে জনমনে তৈরি হয়েছে অসংখ্য প্রশ্ন।
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের সাথে হেরে গিয়ে ধানের শীষ প্রতীক হলো প্রতারণা প্রতীক বলে অভিহিত করেছিলেন যে কামাল হোসেন, সেই কামাল হোসেন এখন প্রতারণার প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচন করবেন। এই হলো তথাকথিত সুশীল কামালদের চিত্র।
‘বিএনপি’র প্রতীক নিয়েই যদি নির্বাচন করতে হয়, তাহলে তা ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে কীভাবে হবে’, এমন যৌক্তিক প্রশ্ন তো জনমনে আসাই স্বাভাবিক। অবশ্য শুরু থেকেই যে পরিমাণ সার্কাস এসব নেতারা দেখিয়ে আসছেন, তাতে সামনে আরো কতকিছু যে দেখতে হয়, তা ধারণার বাইরেই রয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে গতকাল দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে ঐক্যফ্রন্টের সব দল। ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এ কথা নিশ্চিত করেন।
ঐক্যফ্রন্ট শরিকদের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, যাঁরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে তাদের তিনটি শর্ত মানতে হবে:
১। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে শহীদ জিয়া বলতে হবে।
২। জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে স্বীকার করতে হবে।
৩। মনোনয়ন পত্র দাখিলের সঙ্গে সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে হবে।
গয়েশ্বর রায় চৌধুরী আরও বলেন, ‘তাঁরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে, আবার কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কথা বলবে- এমন হওয়া চলবে না। এমন লোকদের ধানের শীষ প্রতীক নেওয়ার কোনো অধিকার নেই। এ বিষয়ে আর কেউ আপত্তি না করুক, আমি করবো।’
গয়েশ্বর জানান, মনোনয়ন নিয়ে আগামিকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর প্রস্তাবের কথা তুলে ধরবেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে প্রাক্তন আওয়ামী লীগারের সংখ্যা কম নয়। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন নিজেই একজন প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা। তাঁর দল গণফোরামের অন্য নেতারাও প্রায় সবাই প্রাক্তন আওয়ামী লীগার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও প্রাক্তন আওয়ামী লীগার। এই নেতারা কখনোই জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকার করেন না বা তাঁর নামের সামনে সম্মানসূচক শহীদ শব্দটি ব্যবহার করেন না। তাছাড়া এই নেতারা কখনোই জিয়ার মাজার জিয়ারত করেননি।
জিয়াউর রহমানকে কখনোই শ্রদ্ধা না জানানো কামাল-কাদের-রব গং ক্ষমতার লোভে আরো কত কী যে করবেন, তা ভেবে ইতিহাস সচেতন জনতা মুচকি হাসছেন।
 

No comments:

Post a Comment