Thursday, September 13, 2018

তারেককে অমান্য করেই পথ চলছেন ফখরুল

নিউজ ডেস্ক: দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক পথ চলছেন। তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করে রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের আমন্ত্রণে উপস্থিত হন মির্জা ফখরুল।

লন্ডন বিএনপির সিনিয়র এক নেতার মাধ্যমে জানা যায়, তারেক জিয়া বৈঠকে যোগদান করতে নিষেধ করলে, উপস্থিত হয়নি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ আরও দুজন উচ্চ পর্যায়ের নেতা। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বাতিল করতে বলেন দলের মহাসচিবকে। কিন্তু মির্জা ফখরুল তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এই ঘটনায় বিএনপিতে তারেকপন্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সূত্রমতে, লন্ডন প্রবাসী তারেক জিয়া ফোন করে বিএনপি মহাসচিবের নিকট জানতে চান, জাতীয় নির্বাচনের আগে বৈঠক করা কতটা যৌক্তিক। তাছাড়া তারেক জিয়া বলেন, ‘তার হাতে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) তো ক্ষমতা নেই, ওখানে কী হবে? এতে তো বিএনপির দুর্বলতাই প্রকাশ করবে।’ অবশ্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা তারেক জিয়ার এই বক্তব্য মেনে নেননি। পাল্টা যুক্তি দেখান যে, বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার আরও দেড় মাস ক্ষমতায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুলের এই যুক্তিতে তারেক রহমান সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তিনি মির্জা ফখরুলকে বলেন, ‘আমার মা যদি ৭ মাস এভাবে থাকতে পারে, তাহলে আরও দুমাস থাকতে পারবে।’আমি আমার মাকে হাসপাতালেও দেখতে চাই না, মুক্তও দেখতে চাই। যদি ওনার মুক্তির জন্য কিছু করতে পারেন, করেন, না হলে এসব আলোচনায় গিয়ে কোনো লাভ নেই। এসময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি ম্যাডামের মুক্তি চাই, সুচিকিৎসাও চাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি সুচিকিৎসার দাবি নিয়েই যাচ্ছি।’
তারেক রহমান বিএনপি মহাসচিবকে বোঝাতে না পেরে তার ঘনিষ্ঠ নেতাদের ওই বৈঠকে যোগদানে নিরুৎসাহিত করেন। তৃণমূলে এবং তরুণদের মধ্যে তারেক জিয়ার অবস্থান অত্যন্ত শক্ত হলেও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তার অবস্থান নড়বড়ে। তবে, বিএনপির তরুণ এবং তৃণমূলের নেতারা বলছেন, যখন আমরা বলছি সর্বাত্মক আন্দোলনের কথা তখন আমাদের নেতারা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঢাকা মহানগরীর একজন তরুণ নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে আত্মঘাতী হিসেবে দেখছেন। তার মতে, এটি কর্মীদের ভুলবার্তা দেবে। এর ফলে কর্মীরা রাজপথে আন্দোলনের উৎসাহ হারাবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বিএনপি মহাসচিবের এই বৈঠককে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন। দলের কর্মীদের তিনি বলেছেন, ‘এভাবে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। তারা যদি সুচিকিৎসাই দিতো, তাহলে তো এভাবে ম্যাডামকে বন্দী করে রাখতো না।’
রিজভী কর্মীদের বলেছেন, ‘আমাদের সিনিয়র নেতারা যদি সত্যি বেগম জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে অবশ্যই তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিত। আগামীর দেশনায়ক তারেক রহমানকে অমান্য করে ফখরুল সাহেব মোটেই ভাল করছেন না।’

No comments:

Post a Comment