নিউজ ডেস্ক: পাহাড়ের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনিষ্ট করার পেছনে ইউপিডিএফ প্রসীত
বাহিনীর বরপুত্র সর্বোত্তম চাকমা ও সুপার জ্যোতি চাকমা অন্যতম ভূমিকা
রাখে। যাদের কাছে অনিয়মই নিয়ম। ক্ষমতার অপব্যবহার করাই যাদের কাজ। তারাই
হঠাৎ পাহাড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে
পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ করে তুলেছে তাদের মুখে
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা শুনে স্থানীয়রা বলছেন, সর্বোত্তম চাকমা ও সুপার
জ্যোতি চাকমার এই উদ্যোগী ভূমিকা প্রমাণ করছে- চোরের মায়ের বড় গলা। পাহাড়ের
মানুষের উপর নির্বিচারে নির্যাতনের লাইসেন্স পেতেই তারা মানবাধিকার
প্রতিষ্ঠার বুলি আওড়াচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বোত্তম চাকমার নেতৃত্বে জাতীয় মানবাধিকার
কমিশনারের সাথে দেখা করে পাহাড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে ইউপিডিএফ
প্রসীত বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল। আর এ খবর পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে
শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা ও শঙ্কা।
এ বিষয়ে অবিনাশ চাকমা নামের একজন বলেন, গতকাল মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার
জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছে ইউপিডিএফ- এর একটি
প্রতিনিধি দল। কুলাঙ্গার ইউপিডিএফ প্রসীত বাহিনীর বরপুত্র সর্বোত্তম চাকমা ও
সুপার জ্যোতি চাকমা অভিনীত নতুন একটি নাটক দেখলাম কাল। সে ও তার সংগঠন
পাহাড়ে অশান্তির সৃষ্টির একমাত্র কারণ, আর সেই কিনা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা
করবে। যাদের একটি ইশারায় দিনে দুপুরে পাখির মতো মানুষ মারা হয়, ঘরবাড়ি
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে সোনার সংসারকে তছনছ করে দেয়া হয়, মুখের খাবার কেড়ে নিয়ে
সেই অর্থ দিয়ে যারা অস্ত্র কেনে- সেই সব মানুষরূপী অমানুষরা যখন
মানবাধিকারের কথা বলে তখন সেটি চোরের মুখে রাম রাম ছাড়া আর কিছুই শোনায় না।
সুবল চাকমা নামের আরেকজন বলেন, সর্বোত্তম চাকমাসহ তাদের সহযোগিরা
নানিয়ারচর উপজেলার জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা হত্যকাণ্ডের
পলাতক আসামি। তাদের মুখে মানবাধিকারের কথা-সেটি নাটক নাকি নির্লজ্জতা ভেবে
পাচ্ছি না। আসলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে তারা পুরোটাই ভন্ডামী করছে।
মূলত তারা যে মানবাধিকারের নামে এই অঞ্চলে একচ্ছত্র চাঁদাবাজীর অধিকার,
ধর্ষণের অধিকার, অপহরণের অধিকার, আর অসহায় পাহাড়ীদের খুন করার অধিকার চায়
সেটাই বোঝা যায়। এদের থেকে সাবধান হওয়া দরকার।
সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আসা একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,
সর্বোত্তম চাকমার নেতৃত্বাধীন পানছড়িতে সশস্ত্র সংগঠনের সক্রিয় প্রতিটি
সদস্যই মাসিক বেতনভুক্ত। তাদের বৈধভাবে উপার্জনের কোনো মাধ্যম নেই। তারা
সশস্ত্র চাঁদাবাজি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন।
স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে, পহাড়ের ত্রাস ইউপিডিএফ প্রসীত
বাহিনীর সন্ত্রাসীদের নামে হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজীসহ নানা অপরাধে একাধিক
মামলা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, সর্বোত্তম চাকমা, সুপার জ্যোতি চাকমাসহ ইউপিডিএফ (মূল)- এর সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের নামে হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ নানা অপরাধে মামলা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, সর্বোত্তম চাকমা, সুপার জ্যোতি চাকমাসহ ইউপিডিএফ (মূল)- এর সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের নামে হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ নানা অপরাধে মামলা রয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের মধ্যে আছেন, মাইকেল চাকমা। পিতা- দয়াল
চন্দ্র চাকমা, গ্রাম- বড় হাড়িকাটা, থানা- লংগদু, জেলা- রাঙামাটি। ইউপিডিএফ
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি। তিনি লংগদু থানায় রঞ্জন চাকমা ও জংগলী
হত্যাকাণ্ডের আসামি। মামলা নং-০১। মামলাটি করা ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে।
শক্তিমান চাকমা হত্যাকাণ্ডেরও আসামি তিনি। নানিয়ারচর থানাধীন মামলা
নং-০২/১০। মামলাটি করা হয় ০৩ মে ২০১৮ তারিখে। একই থানায় ৪ মে ২০১৮ সালে তার
বিরুদ্ধে তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আরেকটি মামলা
হয়। মামলা নং- ০৩/১১। তথ্য সূত্র বলছে, মিঠুন চাকমার মৃত্যুর পর ইউপিডিএফ
(মূল)- এর অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন। সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে এবং
ঢাকা থেকে সাংগঠনিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ইউপিডিএফ (মূল)- এর আরেক সন্ত্রাসী সুপার জ্যোতি চাকমা। পিতা- গুল চাকমা, গ্রাম- পেকুয়া, থানা- লক্ষীছড়ি, জেলা- খাগড়াছড়ি। রঞ্জনা চাকমা ও জংগলী চাকমা হত্যাকাণ্ডের আসামি। ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে লংগদু থানার মামলাটি করা হয়। মামলা নং- ০১।
ইউপিডিএফ (মূল)- এর আরেক সন্ত্রাসী সুপার জ্যোতি চাকমা। পিতা- গুল চাকমা, গ্রাম- পেকুয়া, থানা- লক্ষীছড়ি, জেলা- খাগড়াছড়ি। রঞ্জনা চাকমা ও জংগলী চাকমা হত্যাকাণ্ডের আসামি। ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে লংগদু থানার মামলাটি করা হয়। মামলা নং- ০১।
ইউপিডিএফ (মূল)- এর আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সর্বোত্তম চাকমা (৪৫)। তার
নামে খাগড়াছড়ি সদর থানা, পানছড়ি থানা, লংগদু থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।
সর্বোত্তম চাকমার পিতা- রেবতী চাকমা। গ্রাম- দুদুকছড়া, থানা- পানছড়ি, জেলা-
খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি সদর থানা মামলা নং-০৭। মামলাটি করা হয় ২১ মার্চ ২০১৮
তারিখে। বেআইনীভাবে গতিরোধ করে গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগে এ মামলাটি
করা হয়। এছাড়া পানছড়ি থানা ও লংগদু থানায় আরও দুটি মামলা করা হয়। পানছড়ি
থানার মামলা নং-০১। ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে মামলাটি করা হয়। একই দিনে লংগদু
থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নং-১। এছাড়া ননিয়ারচর ধানাধীন মামলা নং ৩/১১
মামলাটি করা হয় ৪ মে ২০১৮।
No comments:
Post a Comment