আঞ্চলিক রাজনীতি এবং স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে মাঝে
মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় অঞ্চল। বিনষ্ট হয়
পাহাড়ের শান্তি শৃঙ্খলা। পাহাড়কে অশান্ত করে শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার
পেছনে সব থেকে বেশি দায়ী করা হয় প্রসীত বিকাশ খীসা নিয়ন্ত্রিত আঞ্চলিক
সংগঠন ইউপিডিএফকে। আর প্রসীত নিয়ন্ত্রিত ইউপিডিএফ এর প্রধান দুই কর্ণধার
হচ্ছে সর্বোত্তম চাকমা ও সুপার জ্যোতি চাকমা। তাদের প্রত্যক্ষ ভূমিকায়
পাহাড়ে ঘটে চলেছে নানা অপকর্ম।
পাহাড়ের কুলাঙ্গার ইউপিডিএফ প্রসীত বাহিনীর বরপুত্র সর্বোত্তম চাকমা ও
সুপার জ্যোতি চাকমা সম্প্রতি পাহাড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে
বেড়াচ্ছেন। গতকাল সর্বোত্তম চাকমার নেতৃত্বে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনারের
সাথে দেখা করে পাহাড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে ইউপিডিএফ প্রসীত
বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল। নানিয়ারচর উপজেলার জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান
শক্তিমান চাকমা হত্যাকাণ্ডের পলাতক আসামীদের মুখে মানবাধিকারের কথা এক
ধরণের নির্লজ্জতা। যাদের একটি ইশারায় দিনে দুপুরে পাখির মতো মানুষ মারা হয়,
ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সোনার সংসারকে তছনছ করে যারা মানুষকে গাছতলায় দাঁড়
করায়, মুখের খাবার কেড়ে নিয়ে সেই অর্থ দিয়ে যারা অস্ত্র কেনে-সেই সব
মানুষরুপী অমানুষরা যখন মানবাধিকারের কথা বলে তখন সেটি ভুতের মুখে রাম রাম
ছাড়া আর কিছুই শোনায় না। মূলত মানবাধিকারের নামে পাহাড়ী অঞ্চলে একচ্ছত্র
চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণ আর অসহায় পাহাড়ীদের আক্রমণ চালাচ্ছে।
ইউপিডিএফ-র সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসা, সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা,
ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা ও রঞ্জনমণি চাকমার এবং পানছড়ি উপজেলা
চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা ও সুপার জ্যোতি চাকমার সিদ্ধান্তে গত ৩ মে
শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
শক্তিমান হত্যার পর থেকেই সর্বোত্তম চাকমা ও সুপার জ্যোতি চাকমার উধাও
হওয়ার বিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেট। গত ৪ মে অর্থাৎ শক্তিমান চাকমাকে হত্যার
পর থেকে তাদের সরকারি অফিসে দেখা যায়নি।
স্থানীয় জনগণ জানায়, সর্বোত্তম চাকমার নেতৃত্বাধীন পানছড়িতে সশস্ত্র
সংগঠনের সক্রিয় প্রতিটি সদস্যই মাসিক বেতনভুক্ত। তাদের বৈধভাবে উপার্জনের
কোনো মাধ্যম নেই। তারা সশস্ত্র চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যাসহ বিভিন্ন
অপরাধমূলক কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন। এসব চাঁদার ভাগ তিনিও পেয়ে থাকেন।
এছাড়া থানার অপহরণ মামলার (নং ৪-২/১৬) আসামি সুকুমারের মাধ্যমে
হাসপাতালের রাস্তায় এডিপির ৫ লাখ টাকা আরএফকিউ পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যয় করে ২
লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলা মহিলা ভাইস
চেয়ারম্যান রত্মাকান্তি রোয়াজা এর স্বামী মিলন চাকমা বাবুলকে চাঁদার জন্যে
অপহরণ করে নিয়ে যায় সর্বোত্তম চাকমা ও তার লোকজন। এই বিষয়ে ৩৬৫/৩৮৫/৩৮৬/৩৪
ধারায় পেনাল কোডের মামলার প্রতিবেদন দাখিলও করেন পানছড়ি থানার অফিসার
ইনচার্জ।
সর্বোত্তম চাকমা পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফ এর সঙ্গে জড়িত। ১৯৯৭ সালের ২রা
ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি হওয়ার পর তা বিরোধীতা করে আন্দোলন করে ইউপিডিএফ।
ইউপিডিএফ এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে স্থানীয়দের।
ইউপিডিএফ-র মতো এমন একটি সন্ত্রাসী সংঘঠনের কাছ থেকে পাহাড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা! – সে তো ভণ্ডামি ছাড়া অন্য কিছু নয়।
No comments:
Post a Comment