Friday, September 14, 2018

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ফখরুলদের বৈঠক, ক্ষুব্ধ তারেক

বিবার সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির সিনিয়র ৭ নেতা। তবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করতে নিষেধ করেছিল ফখরুলকে। নির্দেশ অমান্য করে বৈঠক করায় ক্ষুব্ধ তারেক।
তারেক বৈঠকে না যাবার নির্দেশ দিলে, বৈঠকে যোগ দেয়নি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ আরও দুজন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বাতিল করতে বলেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এই ঘটনায় বিএনপিতে তারেকপন্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানা গেছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে তারেক ফখরুলের সঙ্গে কথা বলেন। তারেক জানতে চায়, ‘সরকার অবৈধ নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা কতটা যৌক্তিক’। তাছাড়া তারেক জিয়া বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তো ক্ষমতা নেই, ওখানে কি হবে? এটা তো বিএনপির দুর্বলতাই প্রকাশ করবে।’ অবশ্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল তারেক জিয়ার এই বক্তব্য মেনে নেননি। পাল্টা যুক্তি দেখান- ‘বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এই সরকার আরও দেড় মাস ক্ষমতায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। বেগম জিয়ার চিকিৎসাই এখানে বড় প্রশ্ন।’
সূত্র আরও জানায়, তারেক মির্জা ফখরুলের এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তারেক মির্জা ফখরুলকে বলেন, ‘আমার মা যদি ৭ মাস এভাবে থাকতে পারে, তাহলে আরও দুমাস থাকতে পারবে।’ তারেক বলেছেন, ‘আমি আমার মাকে হাসপাতালে দেখতে চাই না, মুক্ত দেখতে চাই। যদি ওনার মুক্তির জন্য কিছু করতে পারেন, করেন, না হলে এসব আলোচনায় যেয়ে লাভ নেই।’ কিন্তু বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি ম্যাডামের মুক্তি চাই, সুচিকিৎসাও চাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি সুচিকিৎসার দাবি নিয়েই যাচ্ছি। তারেক রহমান বিএনপি মহাসচিবকে বোঝাতে না পেরে তার ঘনিষ্ঠ নেতাদের ওই বৈঠকে যোগদানে নিরুৎসাহিত করেন।
তৃণমূলে এবং তরুণদের মধ্যে তারেক জিয়ার অবস্থান অত্যন্ত শক্ত হলেও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তার অবস্থান নড়বড়ে। তার ডাকে সারা দিয়ে মাত্র তিনজন বৈঠকে যোগ দেননি। তবে, বিএনপির তরুণ এবং তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ‘যখন আমরা বলছি সর্বাত্মক আন্দোলনের কথা, তখন আমাদের নেতারা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঢাকা মহানগরীর একজন তরুণ নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে আত্মঘাতী হিসেবে দেখছেন। তার মতে, এটি কর্মীদের ভুলবার্তা দেবে। এর ফলে কর্মীরা আন্দোলনের উৎসাহ হারাবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বিএনপি মহাসচিবের এই বৈঠককে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন। রিজভী কর্মীদের বলেছেন, ‘আমাদের সিনিয়র নেতারা যদি সত্যি বেগম জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে অবশ্যই তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিত। আগামীর দেশনায়ক তারেক রহমানকে অমান্য করে ফখরুল সাহেব মোটেই ভাল করছেন না।’
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গোপন আত্মীয়তার সম্পর্কের বিষয় নিয়ে বিএনপিতে নানা কথা প্রচলিত আছে। তাহলে কোন পথে বিএনপির রাজনীতি?

No comments:

Post a Comment