ফাতেমা বেগম। ৮ বছর আগে ফুফাতো ভাই বশির উল্ল্যার হাত ধরে ভোলা
থেকে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। সেই থেকে শুরু। এতদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার একদিন আগে থেকে
আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন ফাতেমা নামের ৩৫ বছর বয়সী এই মহিলা।
ফাতেমার দুই সন্তান। বড় মেয়ে রিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছেলে রিফাত চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ফাতেমার বাবা রফিকুল ইসলাম ও মা মালেকা বেগম ভোলা সদরের কাটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
ফাতেমার দুই সন্তান। বড় মেয়ে রিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছেলে রিফাত চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ফাতেমার বাবা রফিকুল ইসলাম ও মা মালেকা বেগম ভোলা সদরের কাটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
৮ বছর আগে ফুফাতো ভাই বশির উল্ল্যার হাত ধরে ভোলা থেকে ঢাকায় আসেন
ফাতেমা। ঢাকা এসেই গৃহকর্মী হিসেবে ফাতেমা খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন। ঢাকা
আসার আগেই ফাতেমার স্বামী হারুন লাহড়ী মারা যান।
স্বামীহারা ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে এখন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির
মামলায় ১০ বছর দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাথে বসবাস করছেন। কোনো নিরপরাধ
ব্যক্তির এভাবে কারাগারে থাকার এমন ঘটনাও নজিরবিহীন। কিন্তু খালেদার
অপরাধের সাথে বিন্দু পরিমাণ সম্পর্ক না থাকার পরেও খালেদার সাথে কারাভোগ
করছেন খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা বলে পরিচিত ফাতেমা বেগম।
আর এই নিয়ে ৫ম বারের মতো পরিবারকে দূরে রেখে বিনা অপরাধে একজন দাগী
আসামীর সঙ্গে কারাগারে ঈদ করতে হচ্ছে ফাতেমাকে। তারও তো পরিবার আছে। তারও
তো ইচ্ছে হয় নিজের স্বামী-সন্তানদের সাথে নিয়ে একসাথে ঈদ করতে। খালেদার
আইনজীবী এবং বিএনপির দাবির প্রেক্ষিতেই মূলত ফাতেমাকে খালেদার সাথে কারাভোগ
করতে হচ্ছে। অবাক মনে হলেও সত্য পৃথিবীর ইতিহাসে খালেদা একমাত্র আসামি
যিনি কারাদণ্ড ভোগ করা অবস্থায় বাইরে থেকে নিরপরাধ গৃহপরিচারিকা সাথে রাখার
সুবিধা পেয়েছেন।
এদিকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ করে
জানিয়েছেন কারাগারে বেগম জিয়াকে ভালো ইফতার দেওয়া হচ্ছে না। নিম্নমানের ৩০
টাকার ইফতারি সামগ্রী দিয়ে তাকে ইফতার করানো হচ্ছে। তবে বিএনপি নেতাদের
বক্তব্যের পুরোটাই যে মিথ্যাচার সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তারা যে
রমজান মাসে খেয়ে না খেয়ে রোজা রেখে মিথ্যা বলে তা দেশের মানুষ সবাই জানে।
আর এই দলটার জন্মই হয়েছিলো মিথ্যার অথৈ সাগরে ভেসে। সম্প্রতি খালেদার
শারীরিক অবস্থা সাংবাদিকদের জানাতে প্রেস ব্রিফিং করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল একে মাহবুবুল হক। সাংবাদিকদের তিনি জানান, খালেদা জিয়া হাসপাতাল
থেকে দেয়া সুষম ইফতার খাচ্ছেন না। তিনি তার সঙ্গে থাকা কাজের মেয়ে ফাতেমাকে
দিয়ে পছন্দমত খাবার রান্না করে খাচ্ছেন। এতে করে খালেদা জিয়ার
স্বাস্থ্যহানী হবারও সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হাসপাতাল থেকে তার স্বাস্থ্যের
কথা চিন্তা করে ইফতার দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে তিনি সেই খাবার গ্রহণ না করে
নিজের ইচ্ছেমত তার গৃহপরিচারিকা দিয়ে রান্না করিয়ে খাচ্ছেন। কিন্তু
অন্যদিকে বিএনপি নেতারা মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন যে খালেদাকে ভালো ইফতার
দেয়া হচ্ছে না। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নিজের খাবার অবৈধভাবে তার সাথে থাকা
গৃহপরিচারিকা দিয়ে রান্না করিয়ে নিজে খাচ্ছেন। কারাগারে কয়েদীরা সাধারণত
এই সুবিধা পান না। সেইক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে এই সুবিধা আদালত যে দিয়েছেন
সেজন্য বিএনপি নেতাদের আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। কিন্তু তারা সেটা
না করে রমজান মাসে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।
No comments:
Post a Comment